রিয়াল মাদ্রিদের জয় অব্যাহত

সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে শনিবার রাতে লা লিগার ম্যাচে সেভিয়ার বিপক্ষে ৩-১ গোলে জিতেছে গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা।

লুকা মডরিচের গোলে প্রথমে এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। দ্বিতীয়ার্ধে সেভিয়াকে সমতায় ফেরান এরিক লামেলা। বদলি নামা লুকাস ভাসকেস আবার রিয়ালকে এগিয়ে নেয়ার পর চমৎকার গোলে ব্যবধান বাড়ান ফেডে ভালভার্দে।

পায়ের পেশির চোটে এই ম্যাচে খেলতে পারেননি করিম বেনজেমা। তবে বার্নাব্যুর সবুজ গালিচায় ঠিকই হাজির হন ফরাসি তারকা। গত সপ্তাহে জেতা বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার ব্যালন ডি’অর ট্রফি তার হাতে তুলে দেয়া হয় ঘরের মাঠের দর্শকদের সামনে। ওই দিনের মতো কালও তার হাতে ব্যালন ডি’অর তুলে দেন স্বদেশী কিংবদন্তি জিনেদিন জিদান ও সতীর্থ লুকা মডরিচ।

ব্যালন ডি’অর অনুষ্ঠানে বর্ষসেরা গোলরক্ষকের পুরস্কার জেতা থিবো কোর্তোয়ার হাতে ‘ইয়াশিন ট্রফি’ তুলে দেন কিংবদন্তি ইকের কাসিয়াস। বেলজিয়ান গোলরক্ষক কোর্তোয়া চোট কাটিয়ে এই ম্যাচ দিয়ে মাঠেও ফেরেন।

ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই এগিয়ে যায় রিয়াল মাদ্রিদ। বাঁ প্রান্ত থেকে ভিনিসিয়ুস জুনিয়র পাস দেন দূরের পোস্টে, আর প্রথম ছোঁয়ায় সেভিয়ার জালে বল পাঠান ৩৭ বছর বয়সী লুকা মডরিচ।

এরপর অবশ্য পরিষ্কার সুযোগ তৈরি করতে পারছিল না স্বাগতিকরা। প্রথমার্ধের শেষ দিকে দারুণ একটি সুযোগ আসে ভিনিসিয়ুসের সামনে। ভালভার্দের পাস ধরে গোলরক্ষককে কাটাতে পারলেও পরে আর বল নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেননি।

বিরতির ঠিক আগ মুহূর্তে রিয়াল মাদ্রিদের গোলপোস্ট লক্ষ্য করে প্রথম শট নিতে পারে সেভিয়া। হেসুস নাভাসের সেই শট কোর্তোয়াকে তেমন পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি। তাই ১-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় স্বাগতিকরা।

বিরতির পর যেন জেগে ওঠে সফরকারীরা। ম্যাচের ৫৪তম মিনিটে দুই আর্জেন্টাইনের নৈপুণ্যে সমতায় ফেরে তারা। আর্জেন্টাইন ডিফেন্ডার গঞ্জালো মন্টিয়েলের রক্ষণ চেরা পাস ডি-বক্সে পেয়ে দুরূহ কোণ থেকে দারুণ শটে রিয়ালের জালে বল পাঠান আরেক আর্জেন্টাইন উইঙ্গার এরিক লামেলা। কোর্তোয়া বলে হাত ছোঁয়ালেও রুখতে পারেননি।

পরের ৬ মিনিটে আরো দুটি ভালো সুযোগ পায় সেভিয়া। বাঁ দিক থেকে পাশের জালে বল মারেন সাবেক রিয়াল মাদ্রিদ মিডফিল্ডার ইসকো। আর মন্টিয়েলের আরেকটি পাসে বাইরে শট নেন লামেলা।

৭২তম মিনিটে ম্যাচে আরেকটি সুযোগ হারান ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। বক্সের সামনে থেকে ব্যাকহিল ফ্লিকে বল বাড়ান রদ্রিগো। গোলরক্ষক এগিয়ে এসে বল নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি, শেষ মুহূর্তে দুরূহ কোণ থেকে বাইরে মারেন ভিনিসিয়ুস।

রিয়াল শিবিরে তখন আসরে দ্বিতীয়বার পয়েন্ট হারানোর চোখ রাঙানি। এরপরই দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় তারা। ৭৯ থেকে ৮১, এই তিন মিনিটে করে দুই গোল।

ম্যাচের ৭৯তম মিনিটে রিয়ালকে আরেকবার এগিয়ে নেন লুকাস ভাসকেস। মাঝমাঠ থেকে আসেনসিও বল বাড়ান ভিনিসিয়ুসের উদ্দেশে। গোলরক্ষক এগিয়ে আসায় ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড বল দেন পাশে ফাঁকায় থাকা ভাসকেসকে আর ফাঁকা জালে বল পাঠান এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার।

মিনিট দুয়েক পরে ব্যবধান বাড়ান ফেডে ভালভার্দে। আসেনসিওর পাসে বল পেয়ে বক্সের বাইরে থেকে জোরাল শটে দূরের পোস্টের ওপরের কোণা দিয়ে সেভিয়ার জ্বালে শেষ পেরেক ঠুকেন এই উরুগুয়াইন মিডফিল্ডার।

লিগে এই নিয়ে টানা তিন ম্যাচে গোলের দেখা পেলেন উরুগুয়ের এই মিডফিল্ডার। আসরে ১১ ম্যাচে তার গোল হলো ৬টি।

৩-১ গোলের ব্যবধানে দুর্দান্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে কার্লো আনচেলত্তির দল। এমন একটি জয় চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আগামী বুধবার লাইপজিগের বিপক্ষে ম্যাচের আগে রিয়ালের আত্মবিশ্বাস আরো বাড়িয়ে দেবে নিশ্চিতভাবে।

১১ ম্যাচে ১০ জয় ও এক ড্রয়ে ৩১ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে রিয়াল। এক ম্যাচ কম খেলে ৬ পয়েন্ট কম নিয়ে দুইয়ে আছে বার্সেলোনা।