স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীক যুগের অবসান

অবশেষে স্থানীয় সরকার নির্বাচন থেকে বিদায় নিলো দলীয় প্রতীক। বহুল আলোচিত এই পরিবর্তন এনে জারি করা এক অধ্যাদেশে স্বাক্ষর করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। সোমবার (১৮ আগস্ট) রাতে রাষ্ট্রপতির এই স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে দেশে স্থানীয় সরকার নির্বাচন ব্যবস্থায় একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো।

বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের লোগো

অন্তর্বর্তী সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন থেকে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা, পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে কোনো রাজনৈতিক দল প্রাতিষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী মনোনয়ন দিতে পারবে না। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল প্রার্থীই ‘স্বতন্ত্র’ বা নির্দলীয় হিসেবে বিবেচিত হবেন, যা স্থানীয় পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে আমূল বদলে দেবে।

এই পরিবর্তন বাস্তবায়নের জন্য বিদ্যমান চারটি আইন সংশোধন করে নতুন অধ্যাদেশটি প্রণয়ন করা হয়েছে। মূলত, অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে গঠিত নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন এবং স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের জোরালো সুপারিশের ভিত্তিতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো। সংস্কার কমিশন দুটির অভিমত ছিল, দলীয় প্রতীক বাদ দিলে নির্বাচন আরও অংশগ্রহণমূলক হবে এবং রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত নন এমন যোগ্য ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিরাও প্রার্থী হতে উৎসাহিত হবেন।

উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আইন সংশোধন করে প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীকের প্রচলন করা হয়েছিল। তখন থেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ এবং নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা এই ব্যবস্থার সমালোচনা করে আসছিলেন এবং এটি বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। তাদের মতে, দলীয় প্রতীকের ব্যবহার স্থানীয় পর্যায়ে রাজনৈতিক বিভেদ ও সংঘাতকে উস্কে দিচ্ছিল। নতুন এই অধ্যাদেশ জারির মাধ্যমে সেই দীর্ঘদিনের বিতর্কের অবসান ঘটল।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here