সাত বছর পর লর্ডসে রোমাঞ্চের জয় ভারতের

সাত বছর পর লর্ডসে রোমাঞ্চের জয় ভারতের – ছবি : সংগৃহীত

টেস্টের শেষ দিনে ছড়ালো উত্তেজনা। দেখা মিলল দারুণ রোমাঞ্চের। শেষ হাসি ভারতের। সাত বছর পর লর্ডসে জয়ের দেখা পেল কোহলিরা। দারুণ জয়ে পাঁচ ম্যাচ সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গিয়েছে কোহলিরা।

সোমবার ম্যাচের শেষ দিনে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডকে ২৭২ রানের টার্গেট দিয়েছিল ভারত। ওভার ছিল ৬০। জয় না হোক অন্তত ক্রিজে আকড়ে থাকলে ড্র করতে পারত ইংল্যান্ড। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে সেই কাজটি করতে পারেনি ইংলিশ শিবির। ভারতের পেসারদের দাপটে মাত্র ১২০ রানে গুটিয়ে যায় ইংল্যান্ড। ১৫১ রানের বড় জয় পায় ভারত। প্রথম টেস্ট হয়েছিল ড্র। আগামী ২৫ আগস্ট লিডসে শুরু হবে পাঁচ ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় টেস্ট।

রোববার ম্যাচের চতুর্থ দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ভারত করেছিল ৬ উইকেটে ১৮১ রান। রিশব পন্থ ১৪ ও ইশান্ত শর্মা ছিলেন ৪ রানে অপরাজিত। সোমবার ম্যাচের পঞ্চম ও শেষ দিনে লেজের সারির ব্যাটসম্যানদের নিয়ে বেশ ভালো ব্যাট করে ভারত। ৮ উইকেটে ২৯৮ রান তোলার পর ইনিংস ডিক্লিয়ার করে ভারত অধিনায়ক কোহলি। তাতে ইংল্যান্ডের জয়ের টার্গেট দাঁড়ায় ২৭২ রান।

আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান খুব বেশি আগাতে না পারলেও কাজের কাজ করেছেন দুই পেসার মোহাম্মদ শামি ও জসপ্রিত বুমরাহ। ৭০ বলে ৫৬ রানে অপরাজিত থাকেন শামি। ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন বুমরাহ।

৪৬ বলে ২২ রান করে রবিনসনের বলে আউট হন রিশব পন্থ। ১৬ রান করা ইশান্তকেও ফেরান রবিনসন।

ইংল্যান্ডের হয়ে মার্ক উড ৩টি, রবিনসন ও মঈন আলী দুটি, স্যাম কুরান একটি উইকেট নেন।

জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ভীষণ চাপে পড়ে ইংল্যান্ড। দলীয় স্কোরে এক রান যোগ হতেই বিদায় নেন দুই ওপেনার। সেই রানটিও এসেছে অতিরিক্ত খাত থেকে। প্রথম ওভারে বুমরাহর বলে প্রথম সিরাজের হাতে ক্যাচ দেন ররি বার্নস। দ্বিতীয় ওভারে শামির শিকার ডম সিবলি। তিনি ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে রিশব পন্থের হাতে।

এরপর হাল ধরার চেষ্টা করেন হাসিব হামিদ ও অধিনায়ক জো রুট। তারপরও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি হামিদ। ৪৫ বলে ৯ রান করে ইশান্ত শর্মার বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। দলীয় ৪৪ রানে পড়ে তিন উইকেট।

বেয়ারস্টোর সাথে রুটের জুটিতেই ভরসা ছিল ইংল্যান্ডের। কিন্তু সেখানেও ফাটল ধরান ইশান্ত শর্মা। ২৪ বলে ২ রান করা বেয়ারস্টোকে ফেরান তিনি। পরের ওভারে বড় উইকেট বগল দাবা করেন বুমরাহ। ৬০ বলে ৩৩ রান করেন ফেরেন ইংল্যান্ড অধিনায়ক। ৬৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তখন দিশেহারা ইংলিশ শিবির।

এরপর রান নয়, উইকেটে টিকে থাকার লড়াইয়ে মন দেন জস বাটলার ও মঈন আলী। এই জুটি ৭৬ বল পার করে দেয়। রান আসে ৩০। দলীয় ৯০ রানে ভারতের পেসার মোহাম্মদ সিরাজের জোড়া আঘাত। টানা দুই বলে ফেরান মঈন আলী (৪২ বলে ১৩ রান) ও স্যাম কুরানকে (০)।

এরপর বাটলারের সাথে ক্রিজে থাকার লড়াইয়ে নামেন রবিনসন। ১২০ রানে ভাঙে এই জুটি। রবিনসনকে ফেরান বুমরাহ। এরপর আর রানই তুলতে পারেনি ইংল্যান্ড।

শেষটাতে চমক সিরাজের। একই ওভারে আবার জোড়া উইকেট। ৯৬ বলে ২৫ রান করা বাটলারকে পন্থের গ্লাভসে বন্দী করেন তিনি। একই ওভারের পঞ্চম বলে অ্যান্ডরসনকে বোল্ড করে জয়ের উচ্ছ্বাসে মাতেন তিনি। সাথে গোটা ভারত শিবির।

বল হাতে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট নেন মোহাম্মদ সিরাজ। জসপ্রিত বুমরাহ তিনটি, ইশান্ত শর্মা দুটি ও মোহাম্মদ শামি নেন একটি উইকেট।