- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৮:২৮
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে বাংলাদেশ। দলের মূল অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে থাকায় দলের দায়িত্ব দেয়া হয় সহকারী অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহানের কাঁধে। তার অধীনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াডে থাকা প্রায় সবাই ছিলো এই সিরিজে।
চলুন, দেখে আসি এই সিরিজে ব্যাটিংয়ে কেমন করলেন দলের ব্যাটাররা। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি হিসেবে এই সিরিজে প্রস্তুতিতে কতটা পাস-মার্ক পেলেন তারা।
প্রথমেই কথা বলা যাক দলের ওপেনিং স্লট নিয়ে। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে ওপেনিং স্লট নিয়ে অনেকদিন ধরেই সমস্যায় ভুগছে দল। তামিমের অবসরের পর থেকে লিটনের যোগ্য সঙ্গী হিসেবে কাউকেই থিতু করাতে পারেনি টিম ম্যানেজম্যান্ট। একের পর এক এক্সপেরিমেন্ট করেছে কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হয়নি। বরং এশিয়া কাপের আগে লিটন ইনজুরিতে পড়ায় সমস্যা আরো চরম মাত্রা ধারণ করে।
এশিয়া কাপে ওপেনার হিসেবে নাইম, এনামুলের সাথে তরুণ পারভেজ ইমনকে রাখা হয় স্কোয়াডে। কিন্তু প্রথম ম্যাচেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ব্যর্থ হয় নাইম-এনামুল জুটি। পরে মিরাজ আর সাব্বিরকে দিয়ে কোনোরকমে শেষ করা হয় এশিয়া কাপের পর্ব। ব্যর্থতার কারণে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াডে তাই জায়গা হয়নি নাইম শেখ এবং এনামুল হক বিজয়ের। ম্যাচ খেলার সুযোগ না পেয়েও বাদ পড়তে হয় পারভেজ ইমনকে।
একমাত্র ওপেনার হিসেবে ইনজুরি কাটিয়ে দলে ফিরেন লিটন কুমার দাস এবং তার সাথে রাখা হয় মিরাজ আর সাব্বিরকে। সাথে চমক হিসেবে যুক্ত হয় নাজমুল হোসেন শান্তর নাম। কিন্তু এই সিরিজেও ওপেনার হিসেবে ব্যর্থ হন সাব্বির রহমান। দুই ম্যাচে করেন মাত্র ১২ রান। অনেকদিন পর দলে সুযোগ পেয়েও সেটা কাজে লাগাতে ব্যর্থ তিনি। হয়তো জাতীয় দলে নিজের শেষ সুযোগটাও শেষ করে ফেললেন।
ওপেনিংয়ে লিটনকে মিরাজের সঙ্গী হিসেবে ভাবা হলেও তাকে তিন নম্বর পজিশনে খেলায় টিম ম্যানেজম্যান্ট। অনেকদিন পর ইনজুরি কাটিয়ে ফিরে খুব একটা ভালো কাটেনি লিটনের সময়। তাকে দেখে বোঝাই যাচ্ছিলো ইনজুরি থেকে ফিরে ধারাবাহিকতায় ধার কমেছে। আশা থাকবে ট্রাই-নেশনস সিরিজেই রানে ফিরবে তার ব্যাট।
তবে এশিয়া কাপের মতো এই সিরিজেও হতাশ করেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। ওপেনিংয়ে ব্যাট হাতে রান আর বল হাতে উইকেট তুলে নিয়ে দুই ম্যাচেই দলের জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তাই ট্রাই -নেশনস এবং বিশ্বকাপেও যে মিরাজই সুযোগ পাচ্ছে ওপেনিংয়ে সেটা মোটামুটি নিশ্চিতই বলা যায়। সাথে লিটন বা শান্ত কাকে খেলাবেন মিরাজের সঙ্গী হিসেবে সেটা টিম ম্যানেজম্যান্টই চূড়ান্ত করবে।
মিডল অর্ডারের কথা বলতে গেলে সবার আগে আসবে আফিফের নাম। বারবার আফিফকে লোয়ার অর্ডার থেকে মিডল অর্ডারে খেলানোর কথা আলোচনা হচ্ছিল পত্রপত্রিকায় এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। মুশফিক আর মাহমুদউল্লাহ না থাকায় সেই সুযোগটা পেয়ে গেলেন এই সিরিজেই। আর সেই আস্থার প্রতিদানও দিলেন সুদে-আসলে। ২ ম্যাচে ৯৫ এভারেজে করলেন ৯৫ রান। প্রথম ম্যাচে ৭৭ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলে হন ম্যাচসেরা।
আফিফ ভালো খেললেও আরেক মিডল অর্ডার ব্যাটার ইয়াসির আলী রাব্বি খুব একটা ভালো করতে পারেননি। লিটনের মতো রাব্বিও দীর্ঘদিন পর ইনজুরি থেকে ফিরে ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেননি। হয়তো ট্রাই-নেশনস সিরিজ দিয়েই আবার রানে ফিরবেন তিনি।
মোসাদ্দেক আর সোহান নিজেদের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করেছেন দলের জয়ে অবদান রাখতে। কিছু ছোট ক্যামিও খেলার চেষ্টা করেছেন। মোসাদ্দেক প্রথম ম্যাচে ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় ম্যাচে রান পেয়েছেন। আর সোহান দুই ম্যাচে ভালো ফিনিশিং এনে দিয়েছেন দলকে। কিন্তু তাদের সামর্থ্য অনুযায়ী আরো ভালো করার সুযোগ আছে তাদের। বিশ্বকাপ এবং ট্রাই-নেশনস সিরিজে তাদের থেকে আরো ভালো কিছু আশা করে দেশবাসী এবং টিম ম্যানেজম্যান্ট।