যতবার আঘাত এসেছে বিএনপি তত শক্তিশালী হয়েছে: রিজভী

সরকার পতনে একদফা দাবিতে বিএনপি ঘোষিত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে আরো জোরদার ও তীব্রতর করার মাধ্যমে সরকারের পতন নিশ্চিত করতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। রোববার বিকালে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এ আহ্বান জানান তিনি। রিজভী বলেন, সরকার পতনের কাউন্টডাউনের মধ্যে আরেকটি একতরফা পাতানো ভুয়া নির্বাচনের অপচেষ্টা চলছে। মেরুদন্ডহীন পাপেট নির্বাচন কমিশন আওয়ামী নির্বাচনী তফসিল বাস্তবায়ন করতে মুখ লুকিয়ে জোরেশোরে মাঠে নেমেছে। আর নিশিরাতের সরকারের অবৈধ মন্ত্রী-এমপি, নেতাকর্মী, আওয়ামী লীগ সমর্থক পুলিশ-র‌্যাাব-গোয়েন্দারা গোটা দেশে ভোটাধিকারের দাবিতে আন্দোলনরতদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে হায়েনার মতো। ছিন্নভিন্ন করে দিচ্ছে গ্রামগঞ্জ হাটবাজার জনপদ লোকালয় শহর-বন্দরে থাকা গণতন্ত্রকামীদের। আওয়ামী নিপীড়নে বিএনপির নেতাকর্মীরা যেন মৃত্যু থেকে কয়েক মিনিট দূরে অবস্থান করছেন।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে তিনি বলেন, বিরোধী দল দলন-দমন-নিঃশেষ করার ভয়ংকর জুলুম, নিপীড়ন, গ্রেপ্তার তান্ডব সমস্তসীমা লংঘন করেছে। কিন্তু তাদের জানা উচিত এই সরকারই শেষ সরকার নয়। কিছুদিন পরেই হবে জনগণের সরকার। তখন এই আজ্ঞাবাহী দলদাস পোশাকী সন্ত্রাসীদের পরিণতি কি হবে জনগণ সিদ্ধান্ত নিবে।

রিজভী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা হঠাৎ বিদেশ থেকে এসে গতকাল সাভারে জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে তার দাম্ভিকতাপূর্ণ কন্ঠ শুনে দেশের মানুষ স্তম্ভিত-হতবাক হয়েছে।

একই সঙ্গে জনগণ অট্টহাসিও দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আগামী ১০-১৫ বছরে বিএনপি বলে কোন দল বাংলাদেশে আর থাকবে না। তার মানে এই সময়ে তারা বিএনপিকে ধ্বংস ও নিঃশেষ করে দিবেন! দেশে শুধুমাত্র একটাই রাজনৈতিক দল থাকবে। যেখানে ভিন্ন মতাদর্শের কেউ থাকতে পারবে না। কেউ স্বৈরাচারী সরকারের সমালোচনা করতে পারবে না। বাকশাল-২ স্থাপিত হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এবং তার অনুগতরা দশকের পর দশক ধরে বিএনপিকে ধ্বংসের জন্য উঠে-পড়ে লেগে আছেন। ওয়ান-ইলেভেনের  বেআইনি সরকারও সর্বাত্মক চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কোন লাভ হয়নি। বরং বিএনপি এখন বাংলাদেশের ঘরে ঘরে তৃণমূল শক্তি। যতবার আঘাত এসেছে ততবার আরো শক্তিশালী হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে গত ২৪ ঘন্টায় সারাদেশে বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, মামলা, আহত এবং মৃত্যুর সংখ্যা তুলে ধরেন তিনি। রিজভী জানান, এসময়ে ৫১০ জন নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, আহত হয়েছে ১০০ জন, মারা গেছেন ১ জন এবং মামলা দায়ের করা হয়েছে ১৮টি। এসব মামলায় আসামী করা হয়েছে ২০৮৫ জন নেতাকর্মীকে।

মানব জমিন