দেশে এখন রাজনীতি বলতে কিছু নেই: মঈন খান

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান বলেছেন, দেশে বর্তমানে রাজনীতি বলে কিছু নেই। রয়েছে অপরাজনীতি। এখানে ক্ষমতার নামে চলে দখল ও চাঁদাবাজি আর টাকা পাচার। ৫২ বছর আগে দেশের মানুষ যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিল তার মূলে ছিল গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা ও দেশের অর্থনৈতিক মুক্তি। কিন্তু আজ দুটোর কোনোটিই নেই।
শুক্রবার বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের মিলনায়তনে ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ড্যাব) উদ্যোগে ‘মহান বিজয় দিবস, গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষা ও বর্তমান প্রেক্ষাপট‘ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

মঈন খান বলেন, আওয়ামী দেশকে ভালোবাসলে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিক। জনগণের ভোটে তারা নির্বাচিত হলে প্রথম আমি অভিনন্দন জানাবো। না হলে এবার জুজুর ভয় দেখিয়ে এই সরকারের কোনো লাভ হবে না। নির্বাচনের পর সরকার ৫দিন টিকবে কি না কেউ বলতে পারেন? সুতরাং ২০১৪ সাল আর ২০২৪ সাল কিন্তু এক না। জনগণের শক্তির কাছে কামান বা বুলেট কিছুই টিকেনা। বিশ্বে এমন অসংখ্য নজির রয়েছে।এবার সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। এই সরকারের ওপর জনগণের আস্থা নেই।

তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের সংকটের সমাধান করতে হবে। সরকার মুখে যা বলে কাজে তা করে না। কাজে যা করে তা বলে না। তারা নিজেদের গণতান্ত্রিক সরকার বলে পরিচয় দেয়। বিএনপিকে বলে সন্ত্রাসী দল! তারা মিথ্যা কথা বলে জনগণকে বার বার বিভ্রান্ত করছে। তারা হিটলারের মন্ত্রী গোয়েবলসের মতো মিথ্যাচার করছে। তবে এভাবে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। ক্ষমতার মোহে অন্ধ হলে পায়ের মাটি কখন সরে যায় টের পাওয়া যায় না।

বিএনপির এই স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, এই সরকারের মিথ্যাচার নিজেরাই বিশ্বাস করে না। তারা মনে করছে ক্ষমতায় যেহেতু আছে নির্বাচনের দরকার কী? কোনো সরকার গণতন্ত্রের ভান ধরলে সেই সরকার স্বৈরাচারের চেয়েও বেশি ভয়ংকর হয়ে ওঠে। আজকে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার একদলীয় গণতন্ত্র দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশের মানুষ কখনোই স্বৈরশাসক কে মানেনি। যার প্রমাণ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ। সেদিন কিন্তু দেশের জনগণ পাকিস্তানি স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে ও গণতন্ত্রের দাবিতে জীবন দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন করেছে। আমরা আবারও সবাইকে নিয়ে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমেই এই সরকারের পতন ঘটাবো, ইনশাআল্লাহ।

নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এই সরকারকে যেতেই হবে জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে। বিএনপি কিন্তু দেশে জনতার অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে। যা সারাদেশে দেখা গেছে। এবার বিজয় শোভাযাত্রার মাধ্যমে সারা ঢাকা কেঁপে উঠবে। রাজপথের কঠোর আন্দোলন ও রক্তের বিনিময়ে হলেও এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। যা বিশ্বের দেশে দেশে এমনটি হয়েছে। সরকারের পুলিশ বাহিনী যতই অত্যাচার করুক আমরা আমাদের জায়গা ছাড়বো না। কেননা রাজনৈতিকভাবে এই সরকার পচে গেছে। এরা সারাবিশ্বে ঘৃণিত। ম্যাথিউ মিলার বলেছেন, বাংলাদেশের বিরোধীদের ওপর কেমন নির্যাতন চালানো হচ্ছে। আমরা সব খবর রাখি। সুতরাং ওদের সময় বেশি নেই।

ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালামের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মো. মেহেদী হাসানের সঞ্চালনায় সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, এডভোকেট জয়নুল আবেদীন, বিএমএ‘র সাবেক সভাপতি একেএম আজিজুল হক, এসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, ড্যাবের ডা. এম এ সেলিম, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের (জেডআরএফ) প্রকৌশলী মাহবুব আলম, ডা. রফিকুল কবির লাবু, ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, ডা. শহীদুল আলম, ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, ডা. শহীদ হাসান, ডা. মো. সিরাজুল ইসলাম, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, সায়ীদ মেহবুব উল কাদির, ডা. জাহানারা লাইজু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সূত্র : মানবজমিন