
জাদেজার দিকে দিনের ১৫ ওভার বাকি থাকতে হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন বেন স্টোকস। কিন্তু হাত মেলাননি জাদেজা। সেঞ্চুরি করে তবেই হাত মেলানোর সিদ্ধান্ত নেন তিনি। একইসঙ্গে নিশ্চিত করেন দলের ড্র। ম্যানচেস্টারে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে রানের খাতা খোলার আগেই ২ উইকেট হারানো ভারতের কাছে এই ড্র জয়ের চেয়ে কোনো অংশেই কম নয়।
ম্যানচেস্টার টেস্টের শেষ দিনটা ছিল নাটকীয়তায় ভরা। পঞ্চম দিনের পুরোটাই ব্যাট করে ভারত। চতুর্থ দিন ৩১১ রানে পিছিয়ে থেকে ব্যাট করতে নেমে স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ হওয়ার আগেই দুই ব্যাটারকে হারিয়েছিল দলটি
তখন মনে হচ্ছিল, এই টেস্টে হয়তো শেষ হাসিটা হাসবে ইংল্যান্ডই। তবে সব শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা প্রতিরোধ গড়েন শুভমান গিল ও কেএল রাহুল। শেষ দিনে ওয়াশিংটন সুন্দর ও জাদেজার সেঞ্চুরিতে ইংল্যান্ডকে হতাশ করে সিরিজের চতুর্থ টেস্ট ড্র করেছে টিম ইন্ডিয়া।
২ উইকেটে ১৭৪ রান নিয়ে পঞ্চম দিন শুরু করে ভারত। কেএল রাহুল ও শুভমান গিলের ১৮৮ রানের জুটিতে হারের শঙ্কা থেকে দূর করে দলটি। ১০ রানের জন্য সেঞ্চুরি মিসের আক্ষেপ নিয়ে রাহুল সাজঘরে ফিরলে ভাঙে তাদের এই জুটি।

রাহুল না পারলেও ঠিকই সেঞ্চুরি তুলে নেন অধিনায়ক গিল। ১০৩ রান করে জোফরা আর্চারের বলে স্মিথের ক্যাচ হয়ে ফেরেন ভারতীয় অধিনায়ক। তখন ভারত পিছিয়ে ৮৯ রানে। ফলে ইংল্যান্ড আবার ম্যাচে ফেরার আভাস দেয়।
তবে এরপর আর কোনো অঘটন ঘটেনি। সুন্দরকে নিয়ে পুরো দিনটাই পার করেন অভিজ্ঞ জাদেজা। দুজনেই সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। শেষ পর্যন্ত সুন্দর ১০১ ও জাদেজা ১০৭ রানে অপরাজিত থাকেন। ইংল্যান্ড সফরে এ নিয়ে পাঁচটি পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংস খেলেছেন জাদেজা। এর আগে ১৯৬৬ সালে করা স্যার গ্যারি সোবার্সের পর জাদেজাই প্রথম এই কীর্তি গড়লেন।
এছাড়া ভিভিএস লক্ষ্মণের পর ভারতের দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে এক সিরিজে ৬ কিংবা তার নিচে ব্যাটিংয়ে নেমে পাঁচটি পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংস খেললেন জাদেজা। যদিও তার সেঞ্চুরির আগে ঘটে অন্যরকম ঘটনা, যা সিরিজের আকর্ষণ আরো বাড়াচ্ছে এটা নিশ্চিত। ম্যানচেস্টার টেস্টের শেষ দিনে রবীন্দ্র জাদেজা তখন সেঞ্চুরি থেকে মাত্র ১১ রান দূরে। আরেক প্রান্তে থাকা ওয়াশিংটন সুন্দরের দরকার ২০ রান।
সে সময় দিনের ১৫ ওভার খেলা বাকি ছিল। জয়ের সম্ভাবনা না থাকায় এ সময় ইংলিশ অধিনায়ক বেন স্টোকস ওয়াশিংটন ও জাদেজার সঙ্গে হাত মেলাতে এগিয়ে যান। কিন্তু ক্রিজে থাকা দুই ব্যাটারের কেউই স্টোকসের সঙ্গে হাত মেলাননি।

এরপর আম্পায়ারের কাছে গিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্তের কথা জানান ইংলিশ অধিনায়ক। জাদেজার কাছে এসে তাকে বোঝানোর চেষ্টাও করেছেন স্টোকস। তবে তাতেও কোনো কাজ হয়নি। এরপর দ্রুতই সেঞ্চুরি পূরণ করেন দুই ব্যাটার জাদেজা ও ওয়াশিংটন। অবশ্য দুজনের সেঞ্চুরির পরই ড্র মেনে নেয় শুভমান গিলের দল।
পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে আছে ইংল্যান্ড। শেষ টেস্ট অনুষ্ঠিত হবে ওভালে। জাদেজা-স্টোকসের হাত না মেলানোর ঘটনার পর শেষ টেস্টে দুই দলই যে সর্বশক্তি দিয়ে লড়তে চাইবে তা একপ্রকার নিশ্চিত।