জয়ের স্বপ্নে উদ্দীপ্ত বাংলাদেশ


সাফ ফুটবলের জন্মলগ্ন থেকেই ফেবারিটের তালিকায় ছিল বাংলাদেশ। প্রথম চার আসরের তিনটিরই ফাইনালে খেলেছে লাল সবুজের জার্সিধারীরা। এর মধ্যে চ্যাম্পিয়ন হয় ২০০৩ সালে। এরপর ২০০৮ সালে সেই যে ধাক্কা তা আর সামলে উঠা সম্ভব হয়নি। আর ফাইনাল উপস্থিতি নেই লাল-সবুজদের।

অন্য দিকে ইতিহাসের সামনে দাঁড়িয়ে নেপালও। সাফে প্রতিবারই ফেবারিটের তালিকায় হিমলয়ের দেশটি। তবে গত ১২টি সাফে তাদের পক্ষে ফাইনালে খেলা সম্ভব হয়নি। কাজেই বুধবার বাংলাদেশের সাথে ন্যূনতম ড্র করলেই স্বপ্ন পূরণ হবে নেপালিদের। কিন্তু বাংলাদেশের এই ম্যাচে জয়ের বিকল্প নেই। সেই স্বপ্নে কোচ আর অধিনায়কের পাশাপাশি খেলোয়াররাও বেশ উদ্বীপ্ত ও আত্মবিশ্বাসী। তবে এর বহিপ্রকাশ দেখা যাবে বুধবার মালের সময় বিকেল ৪টা আর বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টার পর।

৫ দলের আসর বিধায় এবার সিঙ্গেল লিগের সাফ। সেমিফাইনাল ম্যাচ না রাখা হলেও চার দলের পয়েন্ট এ দিনের দুই ম্যাচকে সেমিফাইনালের মর্যাদা দিয়েছে। নিজেদের ম্যাচের রেজাল্টের দিকে তাকিয়ে চার দল। বাংলাদেশের মতো ভারতেরও জয় দরকার। আর এক পয়েন্ট হলেই ১৬ অক্টোবরের ফাইনালে খেলা হবে মালদ্বীপ ও নেপালের।
বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে মিলটা হলো- দুই দলই প্রথম ম্যাচ জিতে সর্বশেষ ম্যাচে হারের স্বাদ পেয়েছে। এরপরও নিজেদের ভাণ্ডারে ৬ পয়েন্ট থাকায় বুধবার ড্রই দরকার নেপালিদের। তাহলে ৭ পয়েন্ট নিয়ে চলে যাবে ফাইনালে। আর ৪ পয়েন্ট পাওয়া বাংলাদেশের জয়ের বিকল্প নেই। জামাল, মতিন, তপুরা এই কাজটি করতে পারলে ৭ পয়েন্ট নিয়ে নেপালকে ছিটকে ফেলে চলে যাবে ফাইনালে।

মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে দেখা গেছে, বাংলাদেশ কোচের কথা ঘুরে ফিরে একটিই, ‘আমরা নেপালকে হারানোর জন্যই খেলবো। আক্রমণাত্মকই হবে একমাত্র কৌশল। তা নেপাল ৫-৪-১ বা ৪-১-৪-১ যে ফরমেশনেই খেলুক। একটাই লক্ষ্য, তিন পয়েন্ট চাই আমাদের।’

অস্কার ব্রুজন যোগ করেন, ‘মালদ্বীপের বিপক্ষে যা আমরা পারিনি, নেপালের বিপক্ষে তা করে দেখাবো। প্রমাণ করতে চাই, বাংলাদেশের ফুটবল যে এখনো শেষ হয়ে যায়নি। আমার পূর্ণ আত্মবিশ্বাস, দিনটি আমাদেরই হবে। আমরা হারার জন্য মাঠে নামবো না।’
অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার কথা হচ্ছে, এই ম্যাচ জিতে ফাইনালে যেতে আমাদের শতভাগেরও বেশি দিতে হবে। দেশবাসীর পাশাপাশি বাংলাদেশী যে সব দর্শক মাঠে এসে খেলা দেখবে তাদের খুশি করতে চাই।

নেপাল দল সম্পর্কে বাংলাদেশ কোচের বিশ্লেষণ, নেপালের মাঝ মাঠ ভালো। কাউন্টার অ্যাটাকে সিদ্ধহস্ত। তাই মাঝ মাঠে তাদের কোনো সুযোগ দেয়া হবে না। আর তাদের কাউন্টার অ্যাটাক রুখতে পারবে বাংলাদেশের মিডফিল্ড ও ডিফেন্ডাররা। বাংলাদেশ দলে বুধবার একজন নতুন খেলোয়াড়কে একাদশে দেখা যাবে, যিনি এই সাফে এতদিন খেলেননি। এমন ইংগিত দিলেন কোচ।

নেপাল আগের ম্যাচে ভারতের সাথে ডিফেন্সিভ খেলে হারের কারণে ব্যাপক সমালোচনায় পড়েছে। ওই ম্যাচে ড্র করলেই ফাইনাল নিশ্চিত হতো তাদের। ওই হার থেকে শিক্ষা নিয়েই বাংলাদেশের বিপেক্ষ আক্রমণাত্মক খেলবে তারাও। জানান, দলের সহকারী কোচ কিরন শ্রেষ্টা। বললেন, আমরা ফুটবল খেলবো মাঠে। কী করবো তা মাঠেই দেখিয়ে দেবো। দলের ফুটবলার বিশাল শ্রেষ্টার মতে, আমরা এখনো সাফের ফাইনাল খেলতে পারিনি। এবার সেই ইতিহাস গড়তে চাই।

সাফে দুই দলের সর্বশেষ তিন ম্যাচেই বাংলাদেশের বিপক্ষে জয় নেপালের। তবে উভয় দলের ২৪ ম্যাচে জয়ের পাল্লা বাংলাদেশের ভারী, ১২ ও ৮। বাকি ৪ ম্যাচ ড্র।