ফিলিস্তিন সংকট: দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে জাতিসংঘের বিপুল সমর্থন

24 Live Newspaper

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে দ্বি-রাষ্ট্রভিত্তিক শান্তি সমাধানকে পুনরুজ্জীবিত করার লক্ষ্যে একটি ঐতিহাসিক প্রস্তাব পাস হয়েছে। ‘নিউ ইয়র্ক ঘোষণাপত্র’ শিরোনামের এই প্রস্তাবে হামাসকে বাদ দিয়ে শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি তাদের তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে হামাসকে অস্ত্র পরিত্যাগেরও আহ্বান জানানো হয়েছে।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ

শুক্রবার আনা এই প্রস্তাবটির পক্ষে ১৪২টি দেশ ভোট দেয়। অন্যদিকে, ইসরায়েল এবং তার প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করে। ভোটদান থেকে বিরত ছিল ১২টি দেশ।

ফ্রান্স ও সৌদি আরবের উপস্থাপিত এই ঘোষণাপত্রে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার বিষয়ে কোনো অস্পষ্টতা রাখা হয়নি, যা নিয়ে ইসরায়েল গত প্রায় দুই বছর ধরে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার সমালোচনা করে আসছিল। আনুষ্ঠানিকভাবে ‘ফিলিস্তিন প্রশ্নের শান্তিপূর্ণ সমাধান এবং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নের জন্য নিউ ইয়র্ক ঘোষণাপত্র’ নামে পরিচিত এই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ‘হামাসকে অবশ্যই সব জিম্মিকে মুক্তি দিতে হবে’। প্রস্তাবে আরও বলা হয়, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ৭ অক্টোবর ২০২৩-এ হামাস কর্তৃক বেসামরিক নাগরিকদের ওপর চালানো হামলার তীব্র নিন্দা জানায়।

এই ঘোষণাপত্রটি ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করতে এবং দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের ন্যায্য, শান্তিপূর্ণ এবং স্থায়ী সমাধান অর্জনের জন্য সম্মিলিত পদক্ষেপের’ আহ্বান জানায়। এটি ইতোমধ্যে আরব লিগের সমর্থন লাভ করেছে। গত জুলাই মাসে কয়েকটি আরব দেশসহ জাতিসংঘের ১৭টি সদস্য রাষ্ট্র এতে স্বাক্ষর করে, যার মাধ্যমে হামাসকে শুধু নিন্দাই নয়, বরং গাজার নেতৃত্ব থেকে তাদের পুরোপুরি বাদ দেওয়ার একটি প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যায়।

এতে আরও বলা হয়, ‘গাজায় যুদ্ধের অবসানে হামাসকে অবশ্যই তাদের শাসনের ইতি টানতে হবে এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা ও পর্যবেক্ষণে ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের কাছে নিজেদের অস্ত্র হস্তান্তর করতে হবে।’

নিউ ইয়র্ক ঘোষণাপত্রে গাজায় জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অধীনে একটি অস্থায়ী আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী মিশন মোতায়েনের সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এই মিশন ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে নিরাপত্তার দায়িত্ব বুঝে নিতে সহায়তা করবে।

তবে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে এই প্রস্তাব পাস হওয়ার আগের দিনই ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করব—ফিলিস্তিন রাষ্ট্র কখনোই হবে না।’

আগামী ২২ সেপ্টেম্বর নিউ ইয়র্কে ফ্রান্স ও সৌদি আরবের যৌথ আয়োজনে একটি জাতিসংঘ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। সেখানে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। আরও কয়েকজন বিশ্বনেতাও একই ধরনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here