দুলাল চৌধুরী আপনার পীর হাবিব সামলান,খুজিস্তা নুর নাহরীনকে অভিবাদন

logo


২৯ জুলাই ২০২১ 


 

 

 

 

 

 

 

 

রেজা আহমেদ ফয়সল চৌধুরী

দুলাল আহমদ চৌধুরী বর্তমানে ঢাকা থেকে প্রকাশিত দৈনিক মানব-কন্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক। এক সময় তিনি নাঈমুল ইসলাম খান সম্পাদিত দৈনিক আমাদের সময়ের হেড অফ নিউজ ছিলেন। আমি তখন আমাদের সময়ের লন্ডন প্রতিনিধি ছিলাম। ওয়ান ইলেভেনের সময় দৈনিক আমাদের সময়ে দুহাতে লিখেছি, “ফয়সল চৌধুরী“ নামে। আমার লেখাগুলো দায়িত্ব নিয়ে ছাপতেন নাঈম ভাই এবং দুলাল ভাই। দুজনের কাছেই আমি ঋনী। ঋন স্বীকার করতেই হয়। কৃতজ্ঞতার পাশে আবদ্ধ থাকতে হয়। এ সমাজে কিছু মানুষ আছে যারা অকৃতজ্ঞ।

সে যাক, দুলাল ভাইর সাথে আমার মাঝে মধ্যে কথা হয়। তিনি আমাকে সাবধান করে দিয়ে বলেন- বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে যেন বেশী কথা না বলি। সেদিন কথা বলতে গিয়ে আমি বলেছি বর্তমান সরকারের এক প্রতিমন্ত্রী এনামুল হক শামীম সাহেবের ভাই লন্ডন হাইকমিশনে মেলেটারী এটার্চীর দায়িত্বে থাকাবস্থায় আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা রিপোর্ট বাংলাদেশে পাঠিয়েছিল। আমি নাকি সরকার বিরোধী, তারেক জিয়ার এজেন্ট ইত্যাদি। নাম ব্রিগেডিয়ার আমীন। শুনেছি আমীন সাহেব নিজ থেকে পাঠাননি। লন্ডনে যারা এক সময় আমার প্রতিষ্টানে চাকুরী করতো তারা নাকি আমার ব্যাপারে মিথ্যা- ভূল রিপোর্ট দিয়েছে, সেই ভিত্তিতে নাকি তিনি রিপোর্ট করেছেন। আমি অবশ্য এসব নিয়ে মোটেই বিচিলিত বোধ করিনা। তবে কষ্ট লাগে যারা আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে তাদেরকে আমি রাস্তা থেকে ধরে এনে চ্যানেল আই ইউরোপের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব দিয়েছিলাম, অথচ তারাই আমার বেশী ক্ষতি করেছে। লন্ডনে আরো কিছু চামচা এবং চাকর প্রকৃতির নেতারা আমার বিরুদ্ধে বলেছেন, আমি তাদের ব্যপারেও এক এক করে লিখবো, এবং বলবো ইনশাল্লাহ। ওদের মুখোষ উম্মোচন করবো। কারন মুখোষ উম্মোচন না করলে আল্লাহ অখুশী হবেন। এনামুল হক শামীম সাহেবের ব্যপারে ও লিখতে চাই। বলতে চাই। শুনেছি তার ব্যবসা বানিজ্য নাকি ভালোই চলছে। তবে আমাকে ব্্িরগেডিয়ার আমীন সাহেবের ব্যপারে একজন বলেছেন উনি নাকি হুদাই মানুষের ব্যপারে না জেনে না শুনে রিপোর্ট করে বসেন। আমি দুবারই লন্ডনে চেষ্টা করেছি তাকে——।

গত সপ্তাহে দুলাল ভাইর সাথে কথা হচ্ছিল মানব কন্ঠে প্রকাশিত মুনিয়া হত্যার/আতœহত্যার বিষয়ে আনভীরের বিরুদ্ধে রিপোর্ট নিয়ে। কথা বলেছিলাম নঈম নিজাম এবং পীর হাবিব সাহেবদের দালালি নিয়ে। দুলাল ভাই আমাকে সাবধান করে দিয়ে বলেছিলেন পীর হাবিব সাহেব খুবই অসুস্থ তার ব্যপারে কোনো কথা বলা যাবেনা। বললাম ঠিক আছে বলবোনা। গত বৃহস্পতিবার কানাডার মন্ট্রিলের অনলাইন টিভি, “নাগরিক টিভির“ এক টক শোতে আমি অংশগ্রহন করি। সেখানে ঢাকা থেকে যুক্ত হয়েছিলেন ব্যারিষ্টার সারওয়ার হোসেন, এবং মুনিয়ার বোন তানিয়া। প্রসঙ্গ ছিল পুলিশ আনভীরের বিরুদ্ধে কোনো কিছুই পায়নি। আনভীরের চরিত্র নাকি ফুলের মত পবিত্র। আমরা এ বিষয়ে অনেক কথা বলি। সেখানে উঠে আসে মুনিয়ার বোন তানিয়ার চাকরীচ্যূতির কথা। পদ্মা ব্যংকে নাকি চাকরী করতেন তানিয়া। তাকে চাকরী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ব্যংকটির চেয়ারম্যান নাকি চৌধুরী নাফাজ সারাফাত। কোন সারাফাত? ঐ যে লেখক কুমীর মোসতাক লিখেছিলেন “ আমি চৌধুরী নাফাজ সারাফাত- জানি ব্যংক খাওয়ার ধারাপাত“ তার-পর-পরই নাকি লেখক মোসতাকের মৃত্যু ঘটে। সেই নাফাজ সারাফাতের পদ্মা ব্যংকে চাকরী করতেন তানিয়া। তানিয়াকে অফার করা হয়েছিল মুনিয়ার হত্যা/ আতœহত্যার মামলা তুলে নিতে, সেটির অফার দিয়েছিলেন ব্যংকের এক কর্মকর্তা। কিন্তু তানিয়া রাজী হননি, রাজী না হওয়াতে চাকরী থেকে বরখাস্ত করা হয় তানিয়াকে। এখন এই ধারাপাতের সাথে নাকি আনভীরের সম্পর্ক রয়েছে। আনভীরকে খুশী করতে গিয়ে তানিয়াকে চাকরী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।

এদিকে দুলাল আহমদ চৌধুরীর প্রিয় মানুষ হচ্ছেন পীর হাবিব সাহেব। পীর হাবিব সাহেবের অসুস্থতা নিয়ে দুলাল ভাই চিন্তীত। আমাকে নিষেধ করেছেন পীর হাবিবকে যেন আর দালাল টালাল না বলি। আমি চেষ্টা করেছিলাম না বলতে। কিন্তু পীর হাবিব সাহেবের অনলাইন পোর্টালে দেখলাম মুনিয়ার বোন তানিয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে পীর সাহেবের “পূর্ব পশ্চিম“। তিনিও ধারাপাতের মত তার মুনিবকে খুশী করার জন্য এ সব নিউজ করছেন। “পূর্ব পশ্চিম“ সাংবাদিকতার সব নীতি-নৈতিকতা বিসর্জন দিয়ে তানিয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। পূর্ব পশ্চিম ডট কমের সম্পাদক খুজিস্তা নুর নাহরীন এ সব অনৈতিক নিউজ প্রচার করার কারনে সম্পাদকের পদ থেকে সম্প্রতি পদত্যাগ করেছেন। নাহরীন পদত্যাগ করার পর “পূর্ব পশ্চিম“ বলেছে নাহরীনকে নাকি তারা অব্যাহতি দিয়েছে।

প্রিয় পাঠক খুজিস্তা নুর নাহরীনের ব্যপারে খোজ নিয়ে জানতে পারলাম নাহরীন ছাত্রলীগের এক মরহুম নেতার স্ত্রী। কিছুটা নীতি নৈতিকতাবোধ থেকে নাহরীন পদত্যাগ করেছেন। নাহরীনের এই পদত্যাগ ঢাকা সংবাদপত্রের জগতে এক ইতিহাস হয়ে থাকবে। নাহরীন চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন নীতি নৈতিকতা কাকে বলে। যেখানে পীর হাবিব আনভীরের ঘটনার পর পরই আনভীরের বিচার চেয়ে পদত্যাগ করার কথা সেখানে উল্টো পীর হাবিব সাহেব অনভীরের পক্ষ নিয়ে তানিয়ার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি এ সবের তীব্র প্রতিবাদ নিন্দা ও ধিক্কার জানাই। সেই সাথে খুজিস্তা নুর নাহরীনের সাহসী ভূমিকার জন্য অভিনন্দন জানাই। প্রিয় নাহরিন আপনি আমার অভিবাদন গ্রহন করুন। আপনি সংবাদপত্র জগতের আইকন হিসেবে সাহসী সম্পাদক হিসেবে এক সময় স্বীকৃতি পাবেন। সাহসী সম্পাদক হিসেবে স্বীকৃতি পাবেন দৈনিক মানব কন্ঠের সম্পাদক আমার প্রিয় বন্ধু দুলাল আহমদ চৌধুরী। কারন একমাত্র দুলাল আহমদ চৌধুরীই মানব কন্ঠে আনভীরের ব্যপারে নিউজ প্রকাশ করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। যদিও সমালোচকরা বলছেন আনভীরের সাথে ব্যবসায়িক মারামারির কারনে মানব কন্ঠ নিউজ প্রকাশ করছে। তাও যদি হয় আমি বলবো এ মুহুর্তে দৈনিক মানব কন্ঠ ছাড়া তো আর কেউ নিউজ করছেনা, সবাই তো দালালী করছে। এর জন্য মানব কন্ঠকে ধন্যবাদ। ধন্যবাদ দুলাল আহমদ চৌধুরীকে।
প্রিয় দুলাল ভাই আমি আপনার কথা রাখতে পারিনি। আপনার প্রিয় পীর হাবিব সাহেবের দালালীর কথা আমাকে লিখতে হয়েছে। এবং ভবিষ্যতে আরো লিখবো ইনশাল্লাহ। আমি ভেবে পাইনা এ সব দালালী করে তারা কি এচিভ করেন। দালালীর ও তো সীমা পরিসীমা আছে। ওদের কি লজ্জা শরম নেই? এখনো তো সূর্য উঠে সুর্য নামে। এখনো তো দিনের পরে রাত হয়। এই করোনার মধ্যে বেচে আছি কি পীর হাবিব সাহেবদের দালালী দেখার জন্য? লেখা যখন শেষ করবো তখনই মোবাইল ফোনটির হোয়াটস আপ ম্যসেজে আমার একজন প্রিয় মানুষ একটি গান পাঠিয়েছেন। গানটি হচ্ছে “আমি তোর পিরিতের মরা তুই চাইয়া দেখনা এক নজর অপরাধী হইলেও আমি তোর-তোররে বন্ধু অপরাধী হইলে ও আমি তোর। প্রিয় পাঠক গানের কলির সাথে কেন জানি মনে হয় মুনিয়ার কথাগুলো রয়েছে। মুনিয়া বাচ্চা একটি মেয়ে। আনভীরকে ভালোবেসে ফেলেছিল। ভালোবাসার ক্ষেত্রে মেয়েরা অনেকটাই এগিয়ে থাকে। নিঃশর্তভাবে ভালোবাসে মেয়েরা। ছেলেরা অনেক বাজে। সারাক্ষন কুচিন্তা। আনভীরকে ভালোবাসাটা কি মুনিয়ার অপরাধ ছিল? আপরাধী হইলেও তো মুনিয়া আনভীরকে ভালোবেসেছিল। আনভীর তার প্রথম স্ত্রীকে ম্যানেজ করতে পারেনি তাই বলে তাকে মৃত্যুর দিকে টেলে দিতে হবে? মুনিয়াকে ঠকিয়ে আনভীর কি জিততে পেরেছে? মুনিয়াকে হত্যা আতœহত্যার পর্যায়ে টেলে দিয়ে বিজয়ের উল্লাসে প্রতারনার দুষ্ট নষ্টামীতে হয়তো আনভীর সাময়িকভাবে জিতেছে হেরেনি কিন্তু মুনিয়া। হেরেছে আনভীর, হেরেছে মুনিয়ার অন্ধ-বিশ্বাস এবং ভালোবাসা। সেই অন্ধ বিশ্বাস এবং ভালোবাসাকে নিয়ে খেলছে পীর হাবিব নঈম নিজাম ইমদাদুল হক মিলনসহ রাষ্টের পুলিশ এবং উচ্চিষ্টরা। ওরা উচ্চিষ্ট শুধু নয় ওরা হচ্ছে সোসেল ক্লাইমার। ওরা সোসাইটি থেকে ক্লেইম করে জীবন এবং জীবিকা নির্বাহ করে। নিস্পাপ একটি মেয়ের বিচারের জন্য যেখানে পীর-হাবিবরা লিখবেন সেখানে তাদের মনিবকে বাচানোর কি প্রানপন চেষ্টা। মনে রাখতে হবে পাপ বাপকে ছাড়েনা আর খুন কোনোদিন চাপা থাকেনা। মুনিয়ার বিচার একদিন হবেই এই বাংলার মাটিতে। সেদিন আনভীর, পীর হাবিব, নঈম নিজাম, ব্যংক খাওয়ার ধারাপাতরা আদালতের কাঠগড়ায় দাড়াবেন। সেদিন হয়তো বেশী দুরে নয়।

লেখক
সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক চ্যানেল আই ইউরোপ
সাবেক সভাপতি ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি বাংলা স্টেইটমেন্ট ডট কম
লন্ডন ২৮/০৭/২০২১ ইংরেজী বুধবার