$ April 2022
গ্রাম অঞ্চলে মাসে ৫ হাজার টাকা আয় করা কঠিন থেকে কঠিনতর।
কৃষকদের কোন বোনাস ও নেই।
আমার গ্রামের মানুষ যেখানে দিনে ২/৩শ টাকার গড়ে আয় করতে পারছেনা কৃষি কাজ করে।
এবছর পেয়াজে দাম না পাওয়ায় তারা লসে।অনেকে আর পেয়াজ চাষ করবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তারা এখন টানাটানি করে সংসার চালাচ্ছে।ব্যবসায়ীদের কাছে সুদের উপর টাকা নিয়েছেন
একই ভাবে শহরে প্রচুর আয়।আয়ের সিরিয়ালে পাতি নেতা,সরকারী কর্মচারী,চা ওয়ালা,দোকানি,সবজী ব্যবসায়ী কেউ পিছিয়ে নেই।
একজন রিকশাওয়ালা ও মাসে ৩০ হাজার ইনকাম করে।কিভাবে?৫ মিনিটের রাস্তার মিনিমাম ভাড়া ৩০ টাকা,রোদ, বৃষ্টিতে,সরকারী ছুটিতে,কিংবা সাথে মা,বোন,প্রেমিকা থাকলে তাদের ডিমান্ড বাড়ে।আপনি সম্মানের খাতিরে ১০ টাকা বেশী দেবেন কিন্তু বিপদে তাদের সম্মান পাবেন না।হাসপাতালে যাবার জন্য রোগী নিয়ে রিকসায় উঠেন,ফল পাবেন।সুযোগে সবাই চোর,সবাই দুর্নীতিবাজ।
এখন এই রিকশাওয়ালার এবং শহরের বেশিরভাগ মানুষের আয়ের বেশিরভাগ টাকা খরচ হয়ে যাওয়াটা জরুরি।যদিও কিছু টাকা তারা সঞ্চয় করবে।না তারা তা করেনা,তারা আশা,ব্রাকের লোন নেয়,৫ দিন ভালভাবে ইনকাম করে ২ দিন ঘুমায়।টাকা তাদের হাতেও আসছে।
মনে রাখতে হবে টাকা যদি কারো হাত থেকে খরচ যদি না হয় তাহলে দেশের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যাবে ব্যপক ভাবে।
গ্রামের মানুষ শহুরে মানুষের কাছে ব্যপক ভাবে কোনাঠাশা হয়ে পড়বে৷আর তারা তা পড়েছেও।
অলরেডি গ্রামের গুরুত্বপূর্ণ জমিগুলা প্রবাসীদের কাছে হারিয়েছে গরিব কৃষক রা।ইনকাম নেই,টাকা লাগবে,সবারই লাগে
ধরুন আমার একজন কৃষক এর দৈনিক আয় ১৫০/২০০ টাকা। (দিনমজুর নয় কিন্তু)
সে লাউ কিনেছে গ্রামে বসে ২০ টাকা দিয়ে৷
শহরের রিকশাওয়ালা ইনকাম করেছে ১ হাজার টাকা। সে লাউ কিনেছে ১২০ টাকা দিয়ে৷
এখন আপনিওকি শহরে ২০ টাকা করে লাউ আশা করেন?করতে পারবেন?
এই ভারসাম্যহীনতার সবচেয়ে বড় উদাহরণ মাদক এলাকা টেকনাফ।কাজের চাইতে মাদক আনুন,টাকা আসবে।
দেশের সকল সেক্টরে এখন একই অবস্থা,গ্রামের সাথে শহরের পার্থক্য,শহরের বিত্তশালীদের সাথে বিত্তহীনদের পার্থক্য ক্রমেই প্রকট।গ্রামে জব নেই,সুযোগ নেই,লাভ নেই।আমদানী করে দাম পড়ে কম,নিজের চাষে সে দাম বেশী।এভাবে কি করে আশা করেন টিসিবির ট্রাকের সিরিয়াল বড় হবেনা?আমরা নিজেরাও কি এর জন্য দায়ী নই কি?
আজ থেকে কয়েকবছর পর আর কেউ কৃষক থাকবেনা,আমরা কৃষকদের মর্যাদা দেইনি,তার ফল আমাদের ভোগ করতে হবে।হয় আজ নয়ত বা কাল।ব্যবসায়ীদের মধ্যপন্থা নতুন নয়,,আমরা তা মেনে নিয়েছি,মেনে চালিয়ে গিয়েছি
সরকার বলেনি আমরা কৃষকদের বাচাবো,ভোক্তা ভেবেছে দাম নিয়ে,কৃষক বাচলেও কি মরলেও কি!!এর দায় সবার,এই মাকড়শার জালে আমরা জড়িয়ে গিয়েছি,আরো জড়াবো।কারন সবারই টাকার দরকার,শুধু কৃষকের টাকার দরকার হয়না।এটিই বাংলাদেশের বাস্তবতা।