খাওয়ানোর পর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া অত্যন্ত নিম্নরুচির পরিচয়-গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

 আমার দেশ
৩০ জুলাই ২০২৩

নয়াপল্টনে কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি গয়েশ্বর চন্দ্র

নয়াপল্টনে কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি গয়েশ্বর চন্দ্র

নিজস্ব প্রতিনিধি

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, গোয়েন্দা সংস্থা ডিবির কার্যালয়ে সংস্থাটির পক্ষ থেকে যে খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল, তা তিনি খাননি। ডিবিপ্রধানের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এবং সৌজন্যতা রক্ষায় হারুনের জন্য বাসা থেকে নিয়ে আসা খাবার থেকে ভাতসহ হালকা সবজি ও রুই মাছের একটি টুকরা খান তিনি।

রোববার (৩০শে জুলাই) দুপুরে নয়াপল্টনে তার কার্যালয়ে তিনি এই মন্তব্য করেন।

তাঁর এই বক্তব্যের মাধ্যমে সরকারি অপকৌশলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া ছবি নিয়ে যে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল সেটার আপাতত অবসান হবে।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ডিবিপ্রধান আমাকে অনুরোধ করেছেন, রুই মাছটি তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জ থেকে আনা হয়েছে। আর যেহেতু ডিবিপ্রধান নিজেই খাবারটি খাচ্ছেন, তখন আমার মনে হলো- এটা যদি খাই, তাহলে সমস্যা হবে না। তবে আপ্যায়ন করে সেটার ছবিসহ ভিডিও বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনাকে অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ও ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড বলে মন্তব্য করেন গয়েশ্বর।

যারা এ কাজটি করেছে তা অত্যন্ত নিম্নরুচির পরিচায়ক মন্তব্য করে বিএনপির এই নেতা বলেন, একধরনের তামাশাপূর্ণ নাটক। এতে কি সরকার প্রমাণ করতে চায় যে আমরা হা-ভাতে? ভিক্ষা করে খাই? গ্রামের ভাষায় বলা হয় ‘খাইয়ে খোটা দেয়া’। ডিবি অফিসে আমার সঙ্গে যা করা হলো তা ওরকমই। আমার বাড়িতে তো বিভিন্ন সময় অনেক লোক খায়। এটা আমার জন্য অত্যন্ত সম্মানের। কিন্তু এই খাবারের ছবি উঠিয়ে কি আমি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেব? এটা কি আমার জন্য ভালো হবে?

তিনি আরও বলেন, সরকারের কোনো প্রলোভন গয়েশ্বরকে কিনতে পারবে না। সরকারের কাছে এতো টাকা নেই যে, গয়েশ্বরকে কিনতে পারে।

সরকার গ্রেপ্তার করতে পারে, এমনকি প্রাণও নিতে পারে- এই শক্তি সরকারের রয়েছে। কিন্তু গয়েশ্বরকে কিনতে পারবে না।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ঈশ্বরের কাছে আমার প্রার্থনা, চিতায় ওঠার আগে যেন এই সরকারের পতন দেখে যেতে পারি। চলমান জনসম্পৃক্ত আন্দোলন সফল হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

রাজধানীর ধোলাইখাল এলাকায় শনিবার বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ হামলা প্রসঙ্গেও কথা বলেন তিনি।

গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, দলের কর্মীদের বাঁচাতে প্রয়োজনে তাকে (গয়েশ্বর) গুলি করতে বলেছিলেন পুলিশকে।

ধোলাইখাল এলাকায় গতকালের পরিস্থিতি নিয়ে রোববার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গয়েশ্বর বলেন, “সমাবেশের দিন যখন গোলমাল হয়, তখন আমি দেখতে যাই। পুলিশ হামলা চালালে বলি, ‘দরকার হলে আমাকে গুলি করো, ওদের (দলের কর্মী) কিছু করো না।’ সেই পরিস্থিতিতে ওসি এসে আমাকে নিরাপত্তার কথা বলে নিয়ে গেল। আমাকে স্যাভলন দিয়ে মুছে দিল। এটা একটা চালাকি। পরে বলে, ‘আমাদের সঙ্গে চলেন।’ আমি বললাম, ‘তোমরা কি আমাকে আটক করেছো? যদি করে থাকো বলো। আর না করে থাকলে তোমাদের কাজ তোমরা করো। আমার কাজ আমাকে করতে দাও।’”

তিনি বলেন, “পুলিশ বলে, ‘না, আমাদের সঙ্গে হাসপাতালে চলেন।’ তার আগে আমাকে বসিয়ে তারা দুজন দুপাশে দাঁড়িয়ে। আমি তো চোর ডাকাত না যে, পালাব, কিন্তু হাসপাতালে বলল, ‘নো এন্ট্রি’। মানে রোগী হিসেবেও কোনো ডকুমেন্ট থাকবে না।”