মূর্তি নিয়ে থেমে নেই সরকারি অপকৌশল। কুষ্টিয়ায় শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি ভাঙ্গার ঘটনায় অনেক রহস্যের জন্ম দিয়েছে। যাদেরকে ধরে মূর্তির ভাঙ্গার সাথে জড়িত বলে প্রচার করা হচ্ছে সেই সিসিটিভি ফুটেজের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ইতোমধ্যেই। এই রহস্যের মধ্যেই ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের নেতা যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তি ভাঙচুর করা হয়েছে।
কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়ন পরিষদের কয়া গ্রামে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে এ ঘটনা ঘটে বলে ইউপি চেয়ারম্যার জিয়াউল হক স্বপন জানান।
এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাঘা যতীন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষসহ চারজনকে থানায় নেওয়া হয়েছে।
কুমারখালীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিবুল ইসলাম খান বলেন, কয়া গ্রামের বাঘা যতীন কলেজ চত্বরে ২০১৬ সালের ৬ ডিসেম্বর যতীনের এই আবক্ষ মূর্তিটি স্থাপন করা হয়। কে বা কারা রাতের আঁধারে র্মূটির মুখের ডানপাশ এবং নাকের উপর আঘাত করে ভেঙে দিয়েছে। শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা দেখার পর বিষয়টি জানাজানি হয়।
কুমারখালী থানার ওসি মজিবুর রহমান বলেন, স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ইতোমধ্যে পুলিশের বিভিন্ন গোয়েন্দা ইউনিট এ ঘটনা তদন্তে কাজ শুরু করেছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
তিনি আরও জানান, এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাঘা যতীন ডিগ্রি কলেজের সভাপতি নিজামুল হক চুন্নু, অধ্যক্ষ হারুনর রশিদ, নৈশ প্রহরী খলিলুর রহমান ও কয়া ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আনিচুর রহমানকে আটক করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার এস এম তানভির আরাফাত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, এই মাসের শুরুর দিকে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাংচুরের পর সংসদ সদস্যদের উপস্থিতিতে জেলা প্রশাসন, পুলিশসহ প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সিদ্ধান্ত হয়েছে যেখানেই ভাস্কর্য আছে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনসহ সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু এখানে বাঘা যতীনের আবক্ষ ভাস্কর্যটি আছে সেটা আমাদের জানানো হয়নি। সে কারণে কলেজ কর্তৃপক্ষ দায় এড়াতে পারে না। আটক তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের বিপ্লবী সংগঠন ‘যুগান্তর দলে’র নেতা যতীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৮৭৯ সালে কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালীতে। তিনি ‘বাঘা যতীন’ নামে পরিচিত। ১৯১৫ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ পুলিশের সঙ্গে গোলাগুলিতে নিহত হন যতীন। সে সময় তার বয়স ছিল মাত্র ৩৬ বছর।