ঢাকা
সরকারবিরোধী আন্দোলনের চলমান গতি আরও তীব্র হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, ‘অনেকে আশা করছেন, আরও তীব্র গতিতে আন্দোলন চলবে। অবশ্যই চলবে।’
আজ রোববার সন্ধ্যায় জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর চলমান আন্দোলন নিয়ে রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহর একটি প্রস্তাবের জবাবে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
’৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থানের মহানায়ক শহীদ আসাদের ৫৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে শহীদ আসাদ পরিষদ।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ বলেন, আন্দোলন পরিস্থিতি এগিয়ে নেওয়ার জন্য আরও গভীরভাবে চেষ্টা করতে হবে। তাঁর এমন প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘আন্দোলনের নিজস্ব একটা ধারা আছে। নিজস্ব একটা বিজ্ঞান আছে, রসায়ন আছে। গত কয়েক মাসের আন্দোলনে জনগণ জেগে উঠেছে। অধিকার পুনরুদ্ধার করতে মানুষ সংগ্রাম শুরু করেছে। লড়াই করছে। অবশ্যই আরও তীব্র গতিতে আন্দোলন চলবে।’
এখনো হাজার হাজার নেতা-কর্মী কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে রয়েছেন দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা শুনলে অবাক হবেন, এবার একটা সেলের মধ্যে, যে সেলে একজন থাকতে পারেন, সেই সেলে ৯ জনকে একসঙ্গে রেখেছে। সাত দিন তাদের ওই সেল থেকে বের হতে দেয়নি। এ রকম নির্মম অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়েছে কারাগারের মধ্যে।’
গত বছরের আগস্ট থেকে শুরু করা আন্দোলনে ক্ষমতাসীনদের হামলা ও পুলিশের গুলিতে এখন পর্যন্ত ১৫ জন শাহাদাতবরণ করেছেন উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ইতিমধ্যে দলের হাজারো নেতা–কর্মী আহত হয়েছেন। গুলির ছররায় অনেকে অন্ধ হয়ে গেছেন। কয়েক দিন আগেও চিকিৎসার জন্য একজনকে ভারতে পাঠিয়েছি, তাঁর চোখটা যদি কোনোভাবে বাঁচানো যায়।’
এখনো হাজার হাজার নেতা-কর্মী কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে রয়েছেন দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনারা শুনলে অবাক হবেন, এবার একটা সেলের মধ্যে, যে সেলে একজন থাকতে পারেন, সেই সেলে ৯ জনকে একসঙ্গে রেখেছে। সাত দিন তাদের ওই সেল থেকে বের হতে দেয়নি। এ রকম নির্মম অত্যাচার–নির্যাতন চালিয়েছে কারাগারের মধ্যে।’
শুধু রাষ্ট্রযন্ত্রকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করে বর্তমান সরকার দমন–পীড়ন করছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘তারা (বর্তমান সরকার) সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। আজকে সে অধিকার পুনরুদ্ধার করার জন্য মানুষ সংগ্রাম শুরু করেছে, লড়াই করছে।’
শহীদ আসাদের আত্মত্যাগের পর আইয়ুব খানকে সরে যেতে দুই মাস লেগেছে জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তখন ওইটুকু অন্তত ছিল, পাকিস্তানের শাসক ডেস্ট্রাকশন অব পাকিস্তান দেখতে চান না বলেই পদত্যাগ করেছিলেন। কিন্তু এরা (বর্তমান সরকার) কিছুতেই ছাড়বে না। শেষ পর্যন্ত তারা লড়াই করে যাবে অবৈধ ক্ষমতাকে রক্ষা করার জন্য। বৃহত্তর জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে এদের পরাজিত করতে হবে।’
যারা ক্ষমতায় আছে তাদের প্রত্যেককে শাস্তি ভোগ করতে হবে, এমন হুঁশিয়ারি দিয়ে আলোচনা সভায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ফ্যাসিবাদরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা ছাড়ে না। তবে এই বছর তাদের হারানোর বছর। ২০২৩ সাল হবে পরিবর্তনের বছর।
আর মেগা প্রকল্পের নামে কত টাকা লুটপাট করে পাচার হয়েছে, এটা কল্পনা করাও কঠিন বলে মন্তব্য করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। যে রাষ্ট্র পুলিশ দিয়ে ভোট কেড়ে নেয়, সেই রাষ্ট্র ব্যর্থ হিসেবে পরিণত হয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।
শহীদ আসাদ পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহর সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির মিডিয়া সেলের নেতা জহির উদ্দিন, শহীদ আসাদের ছোট ভাই ড. নুরুজ্জামান হক প্রমুখ।