- অনলাইন প্রতিবেদক
- ১০ জুন ২০২১
নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নির্বাচন দাবি করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ সময় তিনি এ দাবি আদায়ের লক্ষে আন্দোলনের জন্য দলকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে বলেছেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন আর সময় নেই। আগামী দিনের জন্য নিজেদের তৈরি করে ফেলেন। নিজেরা শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে জনগণকে আমাদের সাথে নিয়ে আসি। জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করি।’
সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দাবি একটাই- চলে যাও, চলে যাও, রেহাই দাও বাংলাদেশকে। আমাদের পরিষ্কার কথা, অবিলম্বে পদত্যাগ করুন। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দিন। তা না হলে কিভাবে অধিকার আদায় করতে হয় তা বাংলাদেশের মানুষ জানে।’
সরকার দলীয় নেতাদের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ওদের একজন এমপি কিছুদিন আগে পার্লামেন্টে বলেছেন, বড় চোরদের চুরি দেখে ছোট চোররা এখন লজ্জা পাচ্ছে। বড় চোর হচ্ছে ওদের মন্ত্রী, বড় বড় নেতারা। করোনা মানুষের জীবন নিয়ে যাচ্ছে, মানুষের জীবনের প্রশ্ন, বাঁচার প্রশ্ন, মরার প্রশ্ন। সেখানেও তারা চুরি করছে। টেস্টে চুরি, মাস্কে চুরি, পিপিইতে চুরি, ডাক্তার-নার্সদের টাকা দেয়ার বেলা চুরি, আইসিইউ বেডে চুরি। শেষ পর্যন্ত হাসপাতাল চুরি, একটা হাসপাতাল নাই, উদাও হয়ে গেছে।’
ফখরুল বলেন, ‘আবার নতুন করে একটা হাসপাতাল তৈরি করবে, আবার ওখানে চুরি করবে, আবার কমিশন নেবে। আর ওই টাকা পাঠাবে কানাডা, মালয়েশিয়া, ইংল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে। আমার কথা নয়, আপনারাই এখন বলতে শুরু করেছেন পার্লামেন্টে, বিভিন্ন জায়গায়.. এই যে অর্থ পাচার হচ্ছে- এটা ভয়াবহ। আমাদের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ৬ লাখ কোটি টাকা গত কয়েক বছরে দেশ থেকে পাঁচার হয়ে গেছে। এটাই আওয়ামী লীগ।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, বড় নেতা, ছোট নেতা, পাতি নেতাদের চলাফেরা, চাল-চলন দেখলেই বোঝা যায়, রাতারাতি সব আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছে। এদের হাতে যদি দেশ বেশিদিন থাকে তাহলে এ দেশের অস্তিত্ব থাকবে না, এদেশ টিকবে না।’
তিনি বলেন, ‘ছোটবেলা আমরা পড়তাম, গানও শুনেছি- ছেলে ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো বর্গী এলো দেশে। এই সেই বর্গী এরা। এদের ভয়ে সব পালিয়ে যাচ্ছে এখন। কাউকে কোনো কথা বলতে দেবে না। কথা বললেই ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট। আর বেশি কথা বললে আমাদের নিপুণ রায় চৌধুরীর মতো একটা মিথ্যা অডিও ক্লিপ তৈরি করে নাশকতার মামলায় ঢুকিয়ে দেয়া হয়। এরকম নজির অসংখ্য। সাংবাদিক ভাইয়েরা কিছু শক্ত করে লিখতে পারে না। আমি তাদের দোষারোপ করি না, বরঞ্চ সহমর্মিতা প্রকাশ করি। কারণ লিখলে তো জেল, লিখলেই তো মামলা, লিখলেই তো ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট, মেরেও ফেলতেছে, হত্যাও করতেছে।’
এসময় জিয়াউর রহমানের জীবনাদর্শ দলের নেতা-কর্মীদের জন্য গর্ব উল্লেখ করে তা অনুসরণ করার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
ঢাকা মহানগর দক্ষিনের সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের সঞ্চালনায় আলোচনায় সভায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ-সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, শহিদুল ইসলাম বাবুল, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গত নির্বাচনে দলের মেয়র প্রার্থী প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন, মহানগর দক্ষিণের সহ-সভাপতি নবী উল্লাহ নবী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশীদ হাবিবসহ মহানগরের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।