- ২৪ ডেস্ক
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে আট দিনব্যাপী নিরাপত্তা দায়িত্ব পালনে প্রায় ৮ লাখ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েনের প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সচিব আখতার আহমেদ।

সোমবার (২০ অক্টোবর) দুপুরে আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে প্রস্তুতিমূলক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
ইসি সচিব বলেন, প্রাথমিকভাবে নির্বাচনের সময় পাঁচ দিন নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা ছিল। তবে আজকের বৈঠকে সেটি বাড়িয়ে আট দিন করার প্রস্তাব এসেছে। বিষয়টি এখন পর্যালোচনা করা হবে।
তিনি বলেন, এবার নির্বাচনে প্রায় ৯০ হাজার থেকে এক লাখ সেনা সদস্য, ১ লাখ ৫০ হাজার পুলিশ সদস্য এবং ৫ লাখ ৫০ হাজার আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন বলে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকৌশল তিন ধাপে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়- নির্বাচনের আগে, ভোট চলাকালে এবং ভোটের পর।
ইসি সচিব আরও বলেন, নির্বাচন তফসিল ঘোষণার আগে অপরাধী, অস্ত্রধারী ও নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করা হবে। পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত সময়টিতে প্রচারণা ও ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। তিনি বলেন, প্রার্থী ও ভোটার যেন কোনো ভয় ছাড়াই প্রচারণা ও ভোট দিতে পারেন এটাই মূল লক্ষ্য।
ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। এছাড়া র্যাব, বিজিবি, আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন, কোস্ট গার্ড ও স্ট্রাইকিং ফোর্স নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটের তত্ত্বাবধানে টহল দেবে।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, নির্বাচনী প্রচারণায় ড্রোন ব্যবহার করা যাবে না। তবে পর্যবেক্ষণ ও নিরাপত্তা তদারকির কাজে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ড্রোন ব্যবহার করতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, বৈঠকে ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা, নির্বাচনসামগ্রী পরিবহন, পোস্টাল ভোট ব্যবস্থাপনা, অবৈধ অর্থের ব্যবহার প্রতিরোধ, বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা, সব বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে।
এছাড়া অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, বৈধ অস্ত্রের অপব্যবহার রোধ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভুয়া তথ্য প্রচার ঠেকাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার এবং দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে হেলিকপ্টারে ভোটসামগ্রী পরিবহন নিয়েও দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেনি। বর্তমানে নিরাপত্তা পরিস্থিতি সন্তোষজনক রয়েছে।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত ৮৫ শতাংশ লুট হওয়া অস্ত্র উদ্ধার করা গেছে, বাকি অংশ উদ্ধারে অভিযান চলছে।
আখতার আহমেদ বলেন, এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন রমজানের আগেই, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন তফসিল ঘোষিত হবে ডিসেম্বরের শুরুতে।
এর আগে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে আট দিন এবং যাতায়াত ও সমন্বয়ের জন্য অতিরিক্ত পাঁচ দিন দায়িত্ব পালন করতে হয়েছিল। একাদশ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দশ দিন দায়িত্বে ছিল।
বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন সভাপতিত্ব করেন। উপস্থিত ছিলেন চার নির্বাচন কমিশনার, স্বরাষ্ট্রসচিব, সেনাবাহিনী, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, কোস্টগার্ড ও অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিরা।









