
আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জারি করা অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সব সংশোধনীসহ অধিকাংশ দাবির বিষয়ে একমত হওয়ায় আন্দোলন স্থগিত করতে যাচ্ছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
রোববার (২৫ মে) ঐক্য পরিষদের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বিষয়টি জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা আমাদের অধিকাংশ দাবির বিষয়ে একমত পোষণ করেছেন। তাই আপাতত আন্দোলন স্থগিত করা হতে পারে। আমরা বিস্তারিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়ে দেবো।
এর আগে রোববার বিকেল সোয়া ৬টার দিকে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের বিভিন্ন দাবির বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলাম সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২২ মে অর্থমন্ত্রণালয়ের জারিকৃত প্রেসনোটে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের বিভিন্ন দাবির বিষয়ে সরকারের অবস্থান ব্যাখ্যা করে সরকার আশা করেছিল যে, অধ্যাদেশের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর এবং কাস্টমস ও ভ্যাট সার্ভিসের সব উদ্বেগের অবসান ঘটবে। কিন্তু এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সাম্প্রতিক প্রেস রিলিজ থেকে এ বিষয়ে কিছু অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। যা আরও স্পষ্ট করা হয়েছে বিবৃতিতে।
যেখানে বলা হয়েছে – এনবিআরকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারের একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত বিভাগের মর্যাদায় উন্নীত করা হবে।
বিসিএস (কাস্টমস ও এক্সাইজ) ও বিসিএস (কর) ক্যাডারের স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড শক্তিশালীকরণ এবং একটি বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান গঠনের মাধ্যমে রাজস্ব নীতি পৃথকীকরণের কাঠামো কীভাবে প্রণীত হবে তা রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটি ও অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত করা হবে।
এবং এনবিআর শক্তিশালীকরণ এবং রাজস্ব নীতি প্রণয়ন কার্যক্রম পৃথকীকরণের লক্ষ্যে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জারিকৃত অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সব সংশোধনী আনা হবে। প্রয়োজনীয় সংশোধনের পূর্ব পর্যন্ত জারিকৃত অধ্যাদেশটি কার্যকর করা হবে না।
এই ঘোষণার মাধ্যমে কর এবং কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সব উদ্বেগের অবসান ঘটবে এবং দেশের রাজস্ব আহরণ ও রাজস্ব সেবা প্রদানকারী সব দপ্তর অবিলম্বে পূর্ণ উদ্যমে কাজ শুরু করবে বলে প্রত্যাশা করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়।
তবে, এদিন বিকেলে এনবিআর প্রধান কার্যালয়ের নিচে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলন থেকে আন্তর্জাতিক যাত্রীসেবা এবং ওষুধ ও জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জামের আমদানি-রপ্তানি ছাড়া সোমবার (২৬ মে) থেকে কর, কাস্টমস ও ভ্যাট বিভাগের সব দপ্তরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতির ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম কর কমিশনার মোনালিসা শাহরীন সুস্মিতা, উপ কমিশনার আব্দুল কাইয়ুম এবং উপ-কর কমিশনার মিজ রইসুন নেসা উপস্থিত ছিলেন।
তাদের দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে– জারি করা অধ্যাদেশ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে; অবিলম্বে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে; রাজস্ব সংস্কার বিষয়ক পরামর্শক কমিটির সুপারিশ জনসাধারণের জন্য ওয়েবসাইটে প্রকাশ করতে হবে এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক প্রস্তাবিত খসড়া ও পরামর্শক কমিটির সুপারিশ আলোচনা-পর্যালোচনাপূর্বক প্রত্যাশী সংস্থা, ব্যবসায়ী সংগঠন, সুশীল সমাজ, রাজনৈতিক নেতৃত্বসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের মতামত নিয়ে উপযুক্ত ও টেকসই রাজস্ব ব্যবস্থা সংস্কার নিশ্চিত করতে হবে।