এমি বীরত্বে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা

এমি বীরত্বে সেমিফাইনালে আর্জেন্টিনা

পানেনকা শটটা লক্ষ্যভ্রষ্ট হতেই যেন লিওনেল মেসির মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। টেক্সাসের এনআরজি স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে নামে নীরবতা। আকাশি-সাদার আকাশে জমে দুঃস্বপ্নের কালো মেঘ। এমন মুহূর্তেও দূর থেকে লিওর পেনাল্টি মিস দেখে খুব একটা হতাশ হননি একজন; তিনি আর্জেন্টিনার গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজ। কারণ এমি ভালো করেই জানতেন কীভাবে এই মিসের বদলা নিতে হয় আর কীভাবে মেসির ভাঙা মন জোড়া লাগাতে হয়।

ঠিক ১০ সেকেন্ড আগেও যে গ্যালারি ছিল স্তব্ধ, আলবিসেলেস্তে সমর্থকদের চোখে ছিল কান্নার জল, মনে জমেছিল কষ্টের রং। খানিকটা পরই তারা চোখ মুছে করেন উল্লাস। আবার শোনা যায় সেই সুরের মূর্ছনা, ‘দে লা মানো দে লিও মেসি’। মূলত মেসিকে অভয় দিতেই এমন গান। যেটা কাতার বিশ্বকাপেও গেয়েছিলেন আর্জেন্টিনার সমর্থকরা। ততক্ষণে মেসির মুখে আলোর ঝিলিক, বুকের পাথরটা নেমে গেল বুঝি। কারণ টাইব্রেকারে পরপর দুটি পেনাল্টি ঠেকিয়ে দিয়েছেন এমিলিয়ানো মার্টিনেজ।

পাঁচ শটের দুটিতে ব্যর্থ ইকুয়েডর। এবার উল্টো চাপ তাদের মাথায়। এক এক করে শট নিতে আসা আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়রা নিশ্চিন্তে জাল কাঁপিয়ে উদযাপন করে এমিকে বাড়তি সাহস জুগিয়ে যান। ইকুয়েডর অবশ্য আর মিসের পাল্লাটা ভারী করেনি। তবে যা হওয়ার আগেই হয়ে গেছে। সবখানে, সবার চোখে, সবার মুখে মুখে একই কথা– এমি দ্য সেভিয়র। শেষ শটটা নিতে আসেন লিসান্দ্রো মার্টিনেজের বদলি হয়ে নামা সেন্টারব্যাক নিকোলাস ওটামেন্ডি। খানিকটা চোখ বন্ধ করে দম ছেড়েই নিখুঁত শট। বল জালে যেতেই জার্সি মাথায় নিয়ে দৌড়। এর মধ্যে তাঁকে ঘিরে সতীর্থদের উচ্ছ্বাস। যেন কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালের সেই থ্রিলার ম্যাচটির দৃশ্য ভেসে উঠল আরেকবার। যে ম্যাচে ফ্রান্সের বিপক্ষে টাইব্রেকারে শেষ পেনাল্টিতে গোল করেই জার্সিতে মুখ ঢেকেছিলেন মন্টিয়েল। এদিন দারুণ রক্ষণাত্মক খেলা ইকুয়েডরকে ঘায়েল করতেই তাঁকে নামান কোচ স্কালোনি।

আর্জেন্টিনা অবশ্য ৯০ মিনিট খুব একটা ভালো ফুটবল উপহার দিতে পারেনি। অনেক অপেক্ষার পর একটা সুযোগ আসে। সেই সুযোগ কাজে লাগান লিসান্দ্রো। তাঁর গোলের সুবাদে অনেকক্ষণ ম্যাচে লিড ধরে রাখে তিনবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু যোগ করা মিনিটে ইকুয়েডরের পাওয়ার ফুটবলের কাছে পুরোপুরি পরাস্ত হয় আর্জেন্টিনা। ম্যাচে সমতায় ফেরে তারা। যদিও তার আগেই সেই সুযোগ এসেছিল। কিন্তু দলটির তারকা ফরোয়ার্ড ইনার ভ্যালেন্সিয়া পেনাল্টি মিস করে বসেন।

samakal