সিলেটে বাড়ছে বানের পানি। উজানের ঢলের সঙ্গে হচ্ছে বৃষ্টি। এতে করে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নগরসহ গোটা সিলেট। জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে- সিলেটে ৭ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। জেলার ১৩শ’ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ৬২৭টি আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন ১৭ হাজার ২৮৫ জন বানভাসি মানুষ। এদিকে- ভোর রাত থেকে সিলেটে ভারী বর্ষণ হচ্ছে। এই বর্ষণের ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। সিলেটের সঙ্গে গোয়াইনঘাটের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলার সালুটিকর-গোয়াইনঘাট, জাফলং-গোয়াইনঘাট সড়কের উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে- সিলেট জেলায় সকাল ৯টা পর্যন্ত ১৫৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সিলেট জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ মানবজমিনকে জানিয়েছেন- সুরমা, কুশিয়ারা ও সারি নদীর পানি ৬টি পয়েন্টে বিপদসীমার অনেক উপরে অবস্থান করছে। ঢল ও বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় পানি বাড়ছে বলে জানান তিনি। এদিকে- সিলেট নগরের দক্ষিণ সুরমার বরইকান্দি এলাকায় বিদ্যুতের সাব স্টেশন ঝুঁকিতে রয়েছে। সুরমার নদীর তীরবর্তী ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পানি ঢুকে গেলে গোটা দক্ষিণ সুরমা অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে পড়বে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর রায়হান আহমদ। এ অবস্থায় এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে যাতে পানি ঢুকতে না পারে সেজন্য সেনাবাহিনীকে কাজে নামানো হয়েছে। সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী জানিয়েছেন- দক্ষিণ সুরমার বিদ্যুৎ কেন্দ্রে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মাঠে রয়েছেন সেনা সদস্যরা। একই সঙ্গে কুমারগাও বিদ্যুৎ কেন্দ্রেও নজর রাখা হচ্ছে। সুরমা নদীর তীরে ওই বিদ্যুৎ কেন্দ্রও। সেনা সদস্যরা দুটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রক্ষায় কাজ করছেন। মেয়র জানান- বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সিসিকের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর ছুটি বাতিল করে সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিসিকের তদারকি টিম গঠন করা হয়েছে। আমরা সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই বিপর্যয় কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করবো। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে মানুষ যেন ভোগান্তি না পোহান সেদিকে নজর রাখা হয়েছে। শুকনো ও রান্না করা খাবার তাদের দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে প্রয়োজনীয় ওষুধও দেওয়া হচ্ছে। বন্যার্তদের দুর্ভোগ কমাতে যথাযথ সব করা হবে। মহানগরের সব নিচু এলাকা পানিতে নিমজ্জিত। বিশেষ করে শাহজালাল উপশহর প্রায় পুরোটাই পানির নিচে। অনেকের বাসার নিচতলায় গলা পর্যন্ত পানি। এছাড়া যতরপুর, মেন্দিবাগ, শিবগঞ্জ, রায়নগর, সোবহানীঘাট, কালিঘাট, কামালগড়, মাছিমপুর, তালতলা, জামতলা, কাজিরবাজার, মাদিনা মার্কেট, আখালিয়া ও মেজরটিলাসহ মহানগরের অধিকাংশ এলাকা বন্যা কবলিত।