জামালপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
জামালপুরের সদর উপজেলায় শিক্ষামন্ত্রীর আসার খবরে জামালপুর-সরিষাবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের বেশ কয়েকটি সরকারি গাছ কেটে হেলিপ্যাড নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে হাসিল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা প্রকৌশলী নূরুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
অভিযোগ রয়েছে সুযোগ পেলেই রাস্তার পাশের গাছ কাটেন তিনি। কয়েকবছর আগেও একই জায়গা থেকে তিনি প্রায় দুই শতাধিক গাছ কেটে নেন। এই নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, রবিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে হেলিকপ্টারযোগে জামালপুরে আসবেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মণি। ওইদিন বিকাল পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজ পরিদর্শন করবেন তিনি। তারই ধারাবাহিকতায় বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিটে সদর উপজেলার মেষ্টা ইউনিয়নে হাসিল স্কুল অ্যান্ড কলেজে পরিদর্শনে আসবেন। তার আসার খবরে রাস্তার পাশে বেশ কয়েকটি সরকারি গাছ কেটে হলিপ্যাড নির্মাণের নির্দেশ দেন ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা প্রকৌশলী নূরুল ইসলাম। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা দিলে বৃহস্পতিবার দুপুরে গাছ কাটা বন্ধ করেন তারা।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, হাসিল বটতলা থেকে কামালখান বাজার পর্যন্ত রাস্তার দুইপাশে নানা ধরনের গাছ রয়েছে। এসব গাছ জনগণের জমির পাশে থাকলেও এখন তা সরকারি গাছ। কিন্তু হঠাৎ করেই কাউকে কিছু না জানিয়ে প্রকৌশলী নূরুল ইসলামের নির্দেশে রাস্তার পাশে বেশ কয়েকটি গাছ কাটা হচ্ছিলো। খবর পেয়ে দুপুরে এলাকাবাসী একত্রি হয়ে গাছ কাটতে বাঁধা প্রদান করেন। পরে এলাকাবাসীর তোপের মুখে গাছ কাটা বন্ধ করতে বাধ্য হয় তারা।
এই গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা হবিবর, সেলিমসহ আরো অনেকে জানান, রাস্তার পাশের এই গাছগুলো তারা রোপণ করেছেন। এখন সে গাছ রাস্তায় পড়ে সরকারি গাছ হয়েছে। সরকার তাদের প্রয়োজনে এই গাছ যদি কেটে নেয় তাহলে তাদের কোন দাবি নেই। কিন্তু স্থানীয় কেউ এটি কাটার চেষ্টা করলে এলাকাবাসী এ কাজে বাঁধা প্রদান করবে।
স্থানীয় বাসিন্দা নজরুল ইসলাম বলেন, যে জায়গা থেকে গাছ কাটা হচ্ছে তার পাশের জমির অবৈধ মালিকানা দাবি করেন প্রকৌশলী নুরুল ইসলাম। অথচ জমির মালিক না হয়েও কয়েকবছর আগে এই জমি থেকে প্রায় দুই শতাধিক গাছ কেটে নিয়েছিলেন তিনি। প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ কিছু বলার সাহস করেনি। ফের গাছ কাটা শুরু করেছেন মন্ত্রীর স্কুল পরিদর্শনের অজুহাতে। তার কাজই হচ্ছে এমন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রকৌশলী নূরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি স্কুল পরিদর্শনে শিক্ষা মন্ত্রী ও ধর্মপ্রতিমন্ত্রী আসবেন। তাদের বহনকারী হেলিকপ্টার ল্যান্ড করার জন্য একটা ফাঁকা জায়গা দরকার। তাই স্কুলের পাশে ফাঁকা জায়গায় হেলিপ্যাড তৈরির জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যানকে জানানো হয়। এখন কে গাছ কেটেছে চেয়ারম্যানই ভালো বলতে পারবেন। এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না।
মেষ্টা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল হক বাবু বলেন, হেলিকপ্টারে মন্ত্রী আসবেন তাই হেলিপ্যাড নির্মাণের জন্য গাছগুলো কাটার অনুমতি দিয়েছেন তিনি। এতে অসুবিধার কিছু দেখছেন না বলেও জানান তিনি।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, গাছ কাটা নিয়ে সমস্যার কথা শুনে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।