২ জানুয়ারী ২০২৩
নিজস্ব প্রতিনিধি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ফ্যাসিবাদের সহায়ক হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করেছেন। তবে জামিনের আবেদনটি কখন শুনানি হবে সেটা মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারী) জানা যেতে পারে।
গত ৮ ডিসেম্বর রাতে এই দুই নেতাকে নিজ নিজ বাড়ি থেকে আটক করে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সদস্যরা। এরপর তাদেরকে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে পুলিশের ওপর কথিত হামলার পরিকল্পনা ও উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পল্টন থানায় করা মামলার আসামী হিসাবে শ্যোন এরেষ্ট দেখানো হয়।
গ্রেফতারের পর থেকে ম্যাজিষ্ট্রেট কোর্ট ও জেলা দায়রাজজ আদালতে চার দফা জামিন আবেদন করা হয়েছিল। প্রতিবারই জামিনের আবেদন নাকচ করা হয়েছে।
সোমবার (২রা জানুয়ারি) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তাদের পক্ষে এ জামিন আবেদন করা হয়।
আসামিপক্ষের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের অন্তর্র্বতীকালীন জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আজ আবেদন করা হয়েছে। এখনো জামিন শুনানির তারিখ ধার্য্য করেননি আদালত। আগামীকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে জানা যেতে পারে।
গত ২১শে ডিসেম্বর মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের অন্তর্র্বতীকালীন জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ। কিন্তু ওই আদেশের সার্টিফায়েড কপি যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আইনজীবীর হাতে না পাওয়ায় এতোদিন উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করতে পারেননি বিএনপির এ দুই শীর্ষ নেতা।
গতকাল রোববার (পহেলা জানুয়ারি) ওই আদেশের সার্টিফাইয়েড কপি হাতে পাওয়ার পর আজ উচ্চ আদালতে জামিন আবেদন করলেন ফখরুল-আব্বাসের আইনজীবী।
পুলিশের করা সাজানো মামলায় গ্রেফতারের পর গত ৯ই ডিসেম্বর মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির পুলিশ পরিদর্শক মো. তরীকুল ইসলাম। এসময় আসামিপক্ষে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করে। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর গত ১২ই ও ১৫ই ডিসেম্বর আরও দুই দফায় তাদের জামিন আবেদন খারিজ করেন বিচারিক আদালত।
গ্রেফতারের পর আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত গ্রেফতার বিএনপি নেতাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক তরিকুল ইসলাম। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জামিন আবেদন করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ৭ই ডিসেম্বর বিকেলে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায় পুলিশ। এ সময় পুলিশের গুলিতে একজন নিহত হন। আহত হন অনেকে। পরে বিএনপি কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে চাল-ডাল, পানি, নগদ টাকা ও বিস্ফোরক দ্রব্য পাওয়া যায় বলে মিথ্যা দাবি করে পুলিশ।
এ ঘটনায় ৪৭৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় দেড় থেকে দুই হাজার বিএনপি নেতা-কর্মীকে আসামি করে মামলা করা হয়। পল্টন থানার উপ-পরিদর্শক মিজানুর রহমান বাদী হয়ে এ মামলা করেন। তবে এ মামলার এজাহারে মির্জা ফখরুল ও মির্জা আব্বাসের নাম ছিল না।
মামলার উল্লেখযোগ্য অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- বিএনপি জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপাসনের বিশেষ সহকারী শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ। এদের মধ্যে আমান উল্লাহ আমান ও আব্দুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল জামিনে আছেন।