মিয়ানমার থেকে ব্যবসা গুটিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জাপানের বহুজাতিক পানীয় প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান কিরিন হোল্ডিংস। সোমবার এক বিবৃতিতে কোম্পানিটি জানিয়েছে, মিয়ানমারের জান্তা সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকা কোনো অংশীদারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ব্যবসা করবে না তারা। খবর রয়টার্সের।
গত বছর মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারের উৎখাতের পর থেকেই দেশটিতে নিজেদের কার্যক্রম বন্ধের চেষ্টা করছে কিরিন হোল্ডিংস। এ নিয়ে স্থানীয় অংশীদার মিয়ানমা ইকোনমিক হোল্ডিংস লিমিটেডের (এমইএইচএল) সঙ্গে তাদের বিরোধ চলছে। কিরিন ও এমইএইচএল যৌথভাবে মিয়ানমার ব্রুয়ারি লিমিটেড ও মান্দালয় ব্রুয়ারি লিমিটেড নামে কোম্পানি খুলে ব্যবসা করছে।
বিরোধের একপর্যায়ে কিরিনের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন যে তাঁরা কোনোভাবে সমঝোতায় এসে মিয়ানমারের বাজারে থাকতে চান। কিন্তু এক বছরের আলোচনার পরও দুই পক্ষ সমঝোতায় আসতে না পারায় চলতি মাসে ব্যবসা বন্ধ করে মিয়ানমার ছেড়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। যদিও কোম্পানি বন্ধ করায় চলতি বছরে ৪০ কোটি ডলার ক্ষতি হবে বলে জানিয়েছে কিরিন।
মিয়ানমারে শীর্ষ মদ বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান কিরিনের একজন মুখপাত্র জানান, তাঁরা এখন মিয়ানমার ব্রুয়ারি লিমিটেড ও মান্দালয় ব্রুয়ারি লিমিটেড নামে তাদের দুটি ব্যবসায়িক ইউনিট বিক্রি করতে চান। আগামী জুনের মধ্যেই কোম্পানি বিক্রির কাজ সম্পন্ন করার আশা তাঁদের। তবে সম্ভাব্য ক্রেতাদের নাম এখনো প্রকাশ করেনি কিরিন।
তবে কোম্পানি বিক্রি করলেও সেখানে কাজ করা প্রায় দেড় হাজার স্থানীয় কর্মচারীর জীবিকা ও নিরাপত্তাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে। স্থানীয় কর্মচারীদের সহায়তা দেওয়া হবে বলে জানান কিরিনের ওই মুখপাত্র।
এদিকে মানবাধিকারকর্মীরা দীর্ঘদিন যাবৎ কিরিনকে মিয়ানমারের সামরিক প্রশাসনকে অর্থ প্রদান বন্ধ করতে অনুরোধ জানিয়ে আসছে। পাশাপাশি মিয়ানমারে জান্তা সরকার তথা সামরিক শাসনের পৃষ্ঠপোষকতায় তৈরি মদ বয়কটের আন্দোলনও চলছে। এতে বেশ কাজ হয়েছে। গত এক বছরে দেশটিতে মিয়ানমার ব্রুয়ারির মদ বিক্রি কমেছে ৩৯ শতাংশ।
এমন পরিস্থিতিতে মিয়ানমারে কিরিনের ব্যবসা না করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে জাস্টিস ফর মিয়ানমার নামে দেশটির সামরিক জান্তাবিরোধী একটি সক্রিয় গোষ্ঠী। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে ও মদ বয়কটের আহ্বানে লক্ষাধিক লোক যোগ দিয়েছেন। এখন কিরিনের এই পদক্ষেপ সামরিক সরকারকে আরও চাপে ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।