হাসপাতাল অভিযানে পূর্বানুমতির সিদ্ধান্ত দুর্নীতি প্রকাশে অন্তরায়: ড. ইফতেখারুজ্জামান
আগস্ট ০৭, ২০২০ The Daily Star
স্টার অনলাইন রিপোর্ট
সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে দুর্নীতিবিরোধী অভিযান পরিচালনার আগে মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতি নেওয়ার সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্যখাতে অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র প্রকাশকে প্রতিহত করার অন্যতম উপায় বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক মনে করেন, মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতি নিতে হবে এমন নির্দেশনা যেভাবেই ব্যাখ্যা করা হোক না কেন, এর পেছনে একাধিক বিষয় কাজ করছে।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘যদি পূর্বানুমতি লাগবে বলে আমরা ধরে নেই, তাহলে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে একটি অনুমোদন প্রক্রিয়া ও নির্দেশনার মাধ্যমে বলে দেওয়া যায় যে, একটি কার্যকর অভিযান পরিচালনা করতে হবে এবং তা আইনের অপব্যবহার না করে।’
তিনি বলেন, ‘সেটি না করে প্রতিটি ক্ষেত্রেই অনুমতি লাগবে, এর অর্থ হচ্ছে, যারা এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তাদের একাংশ মনে করছেন যে, চুনোপুঁটি টানাটানি করলে, রুই-কাতলা বেরিয়ে আসতে পারে। সেটি তাদের একাংশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে যোগসাজশের কারণেই হোক বা প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ যে কারণেই হোক, এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেসব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় প্রভাব সৃষ্টি করেছিল, তাদের মধ্যে মোটেই আত্মবিশ্বাস নেই যে, তারা তাদের ওপর অর্পিত দায়িত্বগুলো যথাযথভাবে, স্বচ্ছতা ও নৈতিকতার সঙ্গে এবং দুর্নীতিমুক্ত হয়ে পরিচালনা করতে পারে।’
সততা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে কাজ করলে ‘অভিযান’ শব্দটির কারণে তাদের ‘শঙ্কিত’ হওয়ার কিছু নেই বলেও মনে করেন তিনি।
‘তৃতীয়টি একটু হতবাক করার মতোই বিষয়’ উল্লেখ করে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সরকার বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় একটি বিষয় প্রকারান্তে বলে দিচ্ছে, সেটি হচ্ছে যে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার ওপর অর্পিত যে দায়িত্ব, সেটি যথাযথভাবে ও ক্ষমতার অপব্যবহার না করে পালন করতে পারবে, এ ধরণের আস্থা মন্ত্রণালয়ের নেই।’
তিনি বলেন, ‘দেশবাসীর একাংশের মধ্যে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার ক্ষমতার অপব্যবহার সম্পর্কে আস্থাহীনতার সংকট আছে এবং তা অস্বীকার করা উপায় নেই।’
‘এটি এখন সরকার বা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সিল দিয়ে বলে দিল যে, আসলে আস্থা করার মতো প্রতিষ্ঠান আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা নয়’, যোগ করেন তিনি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘যাই হোক না কেন, এ সিদ্ধান্ত স্বাস্থ্যখাতে সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে অনিয়ম-দুর্নীতির চিত্র প্রকাশের যে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের মাধ্যমে, সেটিকে প্রতিহত করার অন্যতম উপায় ছাড়া আর কিছু ভাবা খুবই কঠিন।’