ঢাকা
আউট হতে পারতেন তিনি আজ তৃতীয় দিনের সকালে শুরুর দিকেই। একবার নয়, কয়েকবার! জেমিসন, ওয়াগনারদের বলে তাঁর ব্যাটে লেগে ক্যাচ উঠেছে কখনো, তো কখনো ব্যাটের কানায় বাতাস লাগিয়ে বল চলে গেছে। পরাস্ত হয়েছেন বেশ কয়েকবার।
ওয়াগনারের বল তাঁর ব্যাটে লেগে ক্যাচ আউটও হয়েছিলেন সকাল বেলাতেই। কিন্তু অ্যান্টি ক্লাইম্যাক্স! তৃতীয় আম্পায়ারের রিভিউতে ধরা পড়ে, বলটা করার সময় ওয়াগনারের পা ক্রিজের বাইরে ছিল। নো বল! বেঁচে যান মুমিনুল। তাঁর রান তখন ছিল মাত্র ৯!
সেখান থেকেই কখনো দারুণ খেলে, কখনো ভাগ্যের ফেরে মুমিনুল এগিয়ে চলেছেন। এগিয়ে নিয়ে গেছেন বাংলাদেশকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত যখন তাঁর তিন অঙ্কের মাইলফলকের সম্ভাবনা জোরাল হয়ে উঠেছিল, তখনই আউট বাংলাদেশের টেস্ট অধিনায়ক।
৮৮ রান করে ট্রেন্ট বোল্টের বলে এলবিডব্লু হয়ে গেছেন মুমিনুল। রিভিউ নিয়েছিলেন, বলটা তাঁর ভেতরের পায়ে লাগলেও উচ্চতায় স্টাম্পকে ছাপিয়ে যেত কি না, সেটি নিয়ে সংশয় ছিল। কিন্তু রিপ্লেতে দেখা গেল, বল মিডল স্টাম্পেই লাগত!
কিছুক্ষণ পর তাঁর পথ ধরেছেন লিটন দাসও। ট্রেন্ট বোল্টেরই বলে ব্লান্ডেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন লিটন, তিনিও আউট হয়েছেন আশির ঘরে। ১৭৭ বলে ১০ চারে ৮৬ রান করেছেন তিনি।
পঞ্চম উইকেটে ১৫৮ রানের জুটি গড়া লিটন ও মুমিনুল ২৯ বলের ব্যবধানে ফিরে যাওয়ায় হঠাৎ আবার চাপে পড়ে গেছে বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশ ইনিংসে খুব ধীরগতিতে রান তুলেছে। সে কারণে প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের ৩২৮ রান পেরিয়ে লিড নিলেও স্বাগতিকদের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে সেট দুই ব্যাটসম্যান লিটন ও মুমিনুলকেই আগ্রাসনটা চালিয়ে যেতে হতো। কিন্তু তা আর হলো কই!
দলকে ৩৬১ রানে পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে ফিরে গেছেন মুমিনুল। তবে যাওয়ার আগে ৩৭০ মিনিটে ২৪৪ বলে ১২টি সাজানো ইনিংসে বাংলাদেশকে দারুণ একটা ভিত্তি এনে দিয়েছিলেন। আর দারুণ নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি দরকারে আগ্রাসন আর চোখধাঁধানো সব শটে এসেছে লিটনের ৮৬ রান। আউটটা ছাড়া বাকি সবই দারুণ ছিল লিটনের।
এই প্রতিবেদন লেখার সময়ে বাংলাদেশের রান ১৪৫ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৭০। ক্রিজে এখন নতুন দুই ব্যাটসম্যান ইয়াসির আলী ও মেহেদী হাসান মিরাজকে আবার নতুন করে শুরু করতে হবে সবকিছু। আগ্রাসনও চালিয়ে যেতে হবে, পাশাপাশি উইকেট ধরে রেখে নিউজিল্যান্ডের ম্যাচে নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়ার পথ বন্ধ রাখতে হবে।
কতটা কী পারবেন মিরাজ-ইয়াসির, সেটিই দেখার। দুজনের কেউই এখনো রানের খাতা খুলতে পারেননি। ইয়াসির বল খেলেছেন ৯টি, মিরাজ ১টি।