সংলাপের নামে নাটক করছে নতুন নির্বাচন কমিশন : মির্জা ফখরুল

  • অনলাইন প্রতিবেদক
  •  ১৫ মার্চ ২০২২, ১৩:৫১, আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২২, ২১:২১

– ছবি – নয়া দিগন্ত

সংলাপের নামে নতুন নির্বাচন কমিশন নাটক করছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন কমিশন নতুন নাটক শুরু করেছে। ‌সে নাটক হচ্ছে- বিভিন্ন পেশার, বিভিন্ন স্তরের মানুষের সঙ্গে কথা বলছে। গত পরশু দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করছে। ৩০ জনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল, এসেছে মাত্র ১৩ জন। সেখানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেছেন, এই তামাশাগুলো কেন করছেন? নির্বাচনকালীন সময়ে নিরপেক্ষ সরকার যদি না থাকে তাহলে নির্বাচন কখনোই সুষ্ঠু করা যাবে না। এটা আমার কথা নয়, এটা একজনের শিক্ষাবিদের কথা।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে জাতীতাবাদি তাঁতী দলের উদ্যোগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে বলছে ক্ষমতাসীনরা। সাধারণ মানুষের আয় কিন্তু ১৫ হাজার টাকার বেশি নয়। তার থেকে ক্ষমতাসীনদের আয় অনেক বেশি। মাসে এক হাজার কোটি টাকা যাদের আয়, তাদের সাথে সাধারণ মানুষের গড় আয় মিলিয়ে জনগণকে বোকা বানাচ্ছে সরকার। মাথা পিছু আয়ের মিথ্যা বক্তব্য আর উন্নয়নের বুলি শুভঙ্করের ফাঁকি ছাড়া কিছু নয়, দেশের মানুষকে এর মাধ্যমে বোকা বানাচ্ছে ক্ষমতাসীনরা।

তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতির কারণে জনগণ কেমন আছে তা দেখতে আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীদের রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। এসি রুমে বসে মানুষের দুঃখ বুঝতে পারছে না ক্ষমতাসীনরা।

আওয়ামী লীগ সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই তারা এদেশকে দুর্ভিক্ষের মধ্যে ফেলেছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৯৭৪ সালে যখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল তখন এ দেশে দুর্ভিক্ষ হয়েছিল। তখন না খেয়ে লাখ লাখ মানুষ মারা গেছে। এক টুকরো রুটির জন্য মানুষ আর কুকুর টানাটানি করেছে। সেদিন বাসন্তী লজ্জা নিবারণের জন্য এক খণ্ড কাপড় পায় নাই। ‌সে মাছ ধরার জাল দিয়ে লজ্জা নিবারণ করেছে। আজ একই অবস্থা শুরু হয়েছে।

আওয়ামী লীগের নেতাদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, উনারা (আওয়ামী লীগের নেতারা) বলে আমরা নাকি বেশি বুঝি, সব জায়গায় মাতব্বরি করি। এটা একটা অরাজনৈতিক ভাষা, অশালীন ভাষা। এটা মাতব্বরি করার প্রশ্ন নয়, ওনাদের জানতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, মা তার সন্তানকে খেতে দিতে না পারার কারণে সন্তানের মুখে বিষ তুলে দিয়ে নিজে বিষ খেয়ে মরছে। ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে মরছে। গলায় দঁড়ি দিয়ে মরছে। অহরহ ঘটছে এসব। ‌এই অবস্থায় জনগণের সাথে রসিকতা করে, মশকরা করে বলা হয় জনগণের আয় বাড়ছে। জনগণ ভালো আছে।‌

তিনি বলেন, এই সরকার বাংলাদেশের সমস্ত অর্জনগুলোকে কেড়ে নিয়েছে, বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ‌ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। পুরোপুরিভাবে ক্রীতদাস করার সকল ব্যবস্থা তারা করেছেন।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, এখন দরকার জনগণের সরকার। জনগণের সরকার করতে হলে অবশ্যই একটা নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হবে। নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে নির্বাচনকালীন সময়ে একটা নিরপেক্ষ সরকার লাগবে। যা আওয়ামী লীগের অধীনে হবে না। আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই। সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন, সমস্ত দেশের মানুষের ঐকবদ্ধ করে একটা দূর্বার আন্দোলের মাধ্যমে এই কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে পারি।

আয়োজক সংগঠনের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, আব্দুস সালাম আজাদ, সাবেক কৃষকদল নেতা সাধন মিয়া সম্রাটসহ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।