ঢাকা
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার বড় বড় মানুষদের জন্য হাসপাতাল তৈরি করে, কিন্তু শ্রমিকদের জন্য কোনো হাসপাতাল হয় না। তাঁরা বিনা পয়সায় কোনো চিকিৎসা পান না। তাঁদের ছেলেমেয়েরা শিক্ষার সুযোগ পান না। সবকিছু থেকে এ দেশের শ্রমিকশ্রেণি বঞ্চিত।
মে দিবস উপলক্ষে আজ রোববার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল এই সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বর্তমান সরকার শ্রমিকদের অধিকার হরণ করেছে। শ্রমিকেরা এখন ইচ্ছা করলেই সমাবেশ, ইউনিয়ন, সংগঠন করতে পারেন না। রানা প্লাজা ধসের প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরও বলেন, শ্রমিকদের নিহত হওয়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত বিচার হয়নি। এ ঘটনায় অনেকে পঙ্গু হয়েছেন। তাঁরা এখনো তাঁদের ন্যায্য ক্ষতিপূরণের টাকা পাননি।
মেগা প্রকল্প ও উন্নয়নের কথা বললেও শ্রমিকদের জন্য এখন পর্যন্ত সরকার কোনো কিছুই করেনি বলে অভিযোগ তোলেন মির্জা ফখরুল।
বাংলাদেশের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে ভারতের সহযোগিতা এই জাতির জন্য অত্যন্ত লজ্জার একটি বিষয় বলে মনে করেন বিএনপির মহাসচিব। মির্জা ফখরুল বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের অবরোধ কোনো আনন্দের বিষয় নয়। কিন্তু এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য হত্যা, গুম, মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে, এমনকি অভিযুক্ত ব্যক্তির বাড়িতে গিয়ে তাঁর মা-বোনদের ওপর অত্যাচার করছে, বাড়িঘর ভাঙচুর করছে। এগুলো কখনোই মেনে নেওয়া যায় না।
আগামী নির্বাচনের রূপরেখা কেমন চায় বিএনপি, তা তুলে ধরে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই করে একটা নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য বাধ্য করতে হবে। সেই নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন তৈরি হবে। সেই নির্বাচন কমিশন যে নির্বাচন পরিচালনা করবেন, সেখানে সব দলের অংশগ্রহণে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে এমন একটি সংসদ ও সরকার গঠন করা হবে।
সমাবেশে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকার উন্নয়ন দেখাচ্ছে। অথচ অসংখ্য শ্রমিক আজ কর্মহীন। এক দিকে করোনার অভিঘাত, আরেক দিকে এই সরকারের ভ্রান্তনীতির কারণে একবেলা, আধাবেলা খেয়ে বেঁচে আছেন। এইখানে সরকারের কোনো উন্নয়ন নেই। যে উন্নয়নে টাকা পাচার হবে, ক্ষমতাসীনদের আত্মীয়স্বজনেরা কানাডা ও ইউরোপে বাড়ি বানাতে পারবেন, সেই উন্নয়ন সরকার করে।
জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন বলেন, সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো শ্রমিকেরা কর্মস্থলে কীটপতঙ্গের মতো মারা যায়। সে জন্য আমরা নিরাপদ কর্মস্থল চাই। তিনি বলেন, ‘দ্রব্যমূল্য অনেক বেড়ে গেছে। এ অবস্থায় আমরা শ্রমিকেরা বাঁচার মতো মজুরি চাই।’