নিজস্ব প্রতিবেদক
দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে বিএনপির দেওয়া কারণ দর্শানোর নোটিশের (শোকজ) জবাব দিয়েছেন দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ।
এতে তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিষয়ে নিজের সম্পৃক্ততা নেই বলে দাবি করেছেন। একই সঙ্গে তার অজান্তে কোনো কাজ হয়ে থাকলে তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
বুধবার রাতে শওকত মাহমুদের একান্ত সহকারী আবদুল মমিন নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তার জবাব পৌঁছে দেন। এর মধ্য দিয়ে ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই তিনি শোকজের জবাব দিলেন।
শওকত মাহমুদের ঘনিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এক পৃষ্ঠার ওই জবাবে তিন লাইনে দু’টি বাক্যে তিনি লিখেছেন, জাতীয়তাবাদী দলের আদর্শ ও দলের সিদ্ধান্তের বাইরে শৃঙ্খলাবিরোধী কোনো কাজে তিনি জ্ঞাতসারে সম্পৃক্ত ছিলেন না। এরপরও নিজ অজান্তে এমন কোনো কাজে জড়িত থাকলে সেজন্য তিনি দুঃখিত।
এদিকে দলের অপর ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ আগামী শনিবার সকাল ১১টায় বনানীর তার বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন শোকজের বিষয়ে তার লিখিত বক্তব্য জানাবেন এবং পরে সেটি দলের কাছে জমা দেবেন।
গত সোমবার সরকারের পদত্যাগ দাবিতে রাজধানীর পল্টন মোড় এলাকায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের অবরোধ কর্মসূচিকে ঘিরে ওইদিন রাতেই বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ ও শওকত মাহমুদকে শোকজ করা হয়।
এতে শওকত মাহমুদের বিরুদ্ধে দলীয় শৃঙ্খলাবিরোধী অভিযোগ এনে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়।
মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানো নোটিশে জবাব ৫ দিনের মধ্যে দিতে বলা হয়। বিএনপির সিনিয়র এ দুই নেতাকে শোকজের পর থেকেই রাজনৈতিক অঙ্গনে ও দলের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
বিএনপির নেতারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি না হলেও তারা ক্ষুব্ধ বলে জানা গেছে। বিশেষ করে নেতারা শোকজের নোটিশ পাওয়ার আগে সংবাদ মাধ্যমে সেটি প্রকাশ করায় অনেক নেতা বিষয়টিকে নেতিবাচক হিসেবে দেখছেন। একইভাবে মেজর (অব.) হাফিজও বিষয়টিকে সহজভাবে মেনে নিতে পারছেন না বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার মেজর (অব.) হাফিজ বলেন, তিনি তার বক্তব্য আগামীকাল শনিবার সকাল ১১টায় বনানীর তার বাসভবনে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানাবেন।
মেজর হাফিজের ঘনিষ্টজনরা জানান, এদিন তিনি তার শোকজের লিখিত জবাব সংবাদ মাধ্যমকে জানানোর পর বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সেটি জমা দিবেন। এমনকি তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ারও ঘোষণা দিতে পারেন। তবে বিএনপির একটি অংশ তাকে সংবাদ সম্মেলন থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছেন বলেও সূত্র জানিয়েছে।
এদিকে এ ইস্যুতে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও ২০ দলীয় জোটের অন্যতম শরীক কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে বৈঠক করেন।
সূত্র জানায়, এরপর তারা খালেদা জিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তারেক রহমানের ঘনিষ্ট এক নেতা জানান, দলের দায়িত্বশীল নেতাদের পরামর্শে হাফিজ উদ্দিন ও শওকত মাহমুদের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও ইতিবাচক। তাদের বিষয়ে তিনি কঠোর হবেন না।