স্টাফ রিপোর্টার
২০ জুলাই ২০২৫, রবিবার
দুর্ভাগ্য বলে এটাকে। শেষ কথা তারই বলার কথা ছিল। প্রস্তুতি ছিল সেরকমই। বলছি জামায়াত আমীর ডা. শফিকুর রহমানের কথা। ইতিহাসের সবচেয়ে
বড় জনসভায় দিকনির্দেশনামূলক বক্তৃতা তারই দেয়ার কথা। দীর্ঘ সময় ধরে তিনি সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানের জনসভায় সভাপতিত্ব করছিলেন। বক্তৃতা করতে উঠে কিন্তু মাঝপথেই থেমে যেতে হলো- একবার নয়, দু’বার। ডায়াসে দাঁড়ানো অবস্থায় অসুস্থ হয়ে পড়ে যান মঞ্চে। জনসভার সব দৃষ্টি তখন তার দিকেই। মঞ্চে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে যায়। ডা. আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের মাইকে ঘোষণা দিলেন- ‘শফিক সাহেব অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আর কথা বলতে পারবেন না।’ তবে সবাইকে অবাক করে দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান অল্পক্ষণের মধ্যেই তিনি আবার মাইক্রোফোন হাতে নিলেন। কিন্তু এক মিনিটের মাথায় ফের পড়ে গেলেন। এবার তিনি নিজেকে সামলে নিয়ে বসেই কথা বললেন ছয় মিনিট। সব মিলিয়ে বক্তৃতা করলেন ১৩ মিনিট। মাঝখানেই তাকে থামতে হলো। আগামী দিনের রাজনীতি, নির্বাচন, সংস্কার, বিচার নিয়ে জাতির সামনে কোনো বার্তা দিতে পারলেন না। অথচ তার হাতে অনেকগুলো পয়েন্টস লেখা ছিল। জল্পনা ছিল তিনি জামায়াতের অবস্থান পরিষ্কার করবেন। রাজনীতিকরা অপেক্ষা করছিলেন। অসুস্থতার কারণে তার শেষ বার্তা জাতি জানতে পারলো না।
শফিকুর রহমান একজন সজ্জন ব্যক্তি। জামায়াতকে উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তার নিজস্ব ক্যারিশমায়। তিনি কথা বলেন সোজা-সাপ্টা। আবেগ থাকে কম। সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াত নেতাদের বক্তৃতা করার ইচ্ছা অনেকদিনের। রাজনৈতিক নানা কারণে তা হয়ে উঠেনি। এমনকি বিএনপি’র জামানায় তারা যখন মন্ত্রী ছিলেন তখনো সুযোগ মেলেনি। এবার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার অনুমতি দেয় নানা কিছু বিবেচনায়। সোহ্রাওয়ার্দী উদ্যান তাদের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছিল মহান মুক্তিযুদ্ধের পরপরই। দলটি নিষিদ্ধ হয় আওয়ামী জামানায়। এর আগে ফিল্ড মার্শাল আইয়ুব খান দুই দফায় নিষিদ্ধ করেছিল জামায়াতকে। সর্বশেষ শেখ হাসিনার শাসনের সময়ে জামায়াতকে আবার নিষিদ্ধ হতে হয়।