ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামীকাল সোমবার সকালে হায়দরাবাদ হাউসে একান্ত বৈঠক করবেন শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদি। এদিকে, আজ সন্ধ্যায় রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর শপথ শেষে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু আয়োজিত রাষ্ট্রীয় নৈশভোজে অংশ নেবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া তিনি নয়াদিল্লিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন।
শনিবার বেলা ১১টা ৫১ মিনিটে নয়াদিল্লির পালাম বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে অভ্যর্থনা জানান দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (সিপিভি ও ওআইএ) মুকতেশ পরদেশি, বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা এবং ভারতে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মো. মুস্তাফিজুর রহমান। এর আগে গত বুধবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী টেলিফোনে কথোপকথনের সময় তাঁর সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানান। আজকের শপথ অনুষ্ঠানে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে ও নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল দাহালসহ বিশ্বনেতারা যোগ দেবেন।
হাসিনা-মোদি বৈঠক নিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, ফের ক্ষমতায় আসার পর দক্ষিণ এশিয়ার দুই নিকট প্রতিবেশী দেশের শীর্ষ নেতারা এই প্রথম আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন।
হাসিনা-মোদি বৈঠক নিয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন সাংবাদিকদের বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও নতুন মন্ত্রিসভার মূল শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী যোগ দেবেন। এ ছাড়া শপথ অনুষ্ঠানে আসা আরও বেশ কিছু প্রতিবেশী দেশের সরকার বা রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে একান্ত বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে আলাদা একটি দ্বিপক্ষীয় সফর নিয়ে দুই দেশ কাজ করছে। ভারতে দ্বিপক্ষীয় সফরটি পরবর্তী সময়ে নির্ধারণ করা হবে। সেখানে বেশ কিছু সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি সই এবং ঘোষণার বিষয় রয়েছে। সে বিষয়ে দুই দেশ কাজ করবে। যেহেতু বাংলাদেশে নতুন সরকার গঠন হয়েছে আর ভারতে নতুন সরকার গঠন হবে, ফলে দুই দেশের সম্পর্কের ধারাবাহিকতাই থাকবে। আমরা বেশ কিছু ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্যোগ দেখতে পাব আশা করি।
কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, দুই প্রধানমন্ত্রীর একান্তে অনুষ্ঠেয় আলোচনায় সাম্প্রতিক বছরগুলোর ধারাবাহিকতায় দুই দেশের সম্পর্ক এগিয়ে নেওয়ার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। এরই অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পিত দ্বিপক্ষীয় সফরের বিষয়টিও আলোচনায় আসবে। যেহেতু আগামী মাস দেড়েকের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত ও চীন সফরের কথা, স্বভাবতই দিল্লির সফরটি কখন হতে পারে, তা নিয়ে তাদের কথা হবে।
দুই প্রধানমন্ত্রীর সংক্ষিপ্ত এই আলোচনায় আসন্ন শীর্ষ বৈঠকে দুই দেশের কোথায় কোথায় অগ্রাধিকার থাকবে, সে বিষয়গুলো তুলতে পারেন তারা। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অভিন্ন নদীর পানি বণ্টনের ইস্যু, বিশেষ করে তিস্তা-গঙ্গার মতো বিষয়, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিশ্চিতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থার মতো বিষয়সহ বাণিজ্য ও সংযুক্তির বিষয়গুলো আসার কথা রয়েছে। অন্যদিকে, মোংলা বন্দর ভারতের জন্য বিশেষভাবে ব্যবহারের পদক্ষেপের বিষয়টি তুলতে পারে দিল্লি।
আগামীকাল সোমবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর ঢাকায় পৌঁছার কথা।
samakal