- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ০২ অক্টোবর ২০২২, ২১:০৮
যেমনটা আশঙ্কা করা হচ্ছিল, তেমনটিই ঘটতে শুরু করেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কার প্রভাবে কমতে শুরু করেছে বাংলাদেশের রফতানি আয়। গত সেপ্টেম্বরে রফতানি আয় কমেছে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ।
সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে বিভিন্ন দেশে ৩৯০ কোটি ৫০ লাখ (৩.৯০ বিলিয়ন) ডলারের পণ্য রফতানি করেছে বাংলাদেশ। এই অঙ্ক গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসের চেয়ে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কম। আর নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্র চেয়ে ৭ দশমিক শূন্য দুই শতাংশ কম।
এ বছরের সেপ্টেম্বরে পণ্য রপ্তানি থেকে ৪ দশমিক ২০ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্য ধরেছিল সরকার।
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে আয় হয়েছিল ৪ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার। দীর্ঘদিন পর পণ্য রফতানিতে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখল বাংলাদেশ।
পোশাক রফতানিকারক ও অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের পোশাকের প্রধান দুই বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় তারা পোশাক কেনা কমিয়ে দিয়েছে। তাদের এখন খাদ্যের পেছনেই অনেক বেশি খরচ করতে হচ্ছে। সে কারণেই রফতানি আয় কমছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম প্রন্তিকের (জুলাই-সেপ্টেম্বর) হিসাবে এখনো প্রবৃদ্ধি ধরে রেখেছে বাংলাদেশ।
রোববার রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) থেকে সেপ্টেম্বর মাসে রফতানি তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে। একইসাথে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে প্রবৃদ্ধিও।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে বাংলাদেশের রফতানিকারকরা ১২ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য রফতানি করছেন, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ বেশি। আর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি দশমিক ৬২ শতাংশ।
১৩ মাস পর রফতানি আয়ের প্রবৃদ্ধিতে হোঁচট খেলো বাংলাদেশ। ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে আগের বছরের জুলাইয়ের চেয়ে রফতানি আয় কমেছিল ৬ দশমিক শূন্য এক শতাংশ।
এর পর থেকে এক বছরের বেশি সময় ধরে রফতানি আয়ে বড় প্রবৃদ্ধি হচ্ছিল। ৩৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে ২০২১-২২ অর্থবছর শেষ হয়েছিল।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল ২৫ দশমিক ৩১ শতাংশ। কিন্তু সেপ্টেম্বর মাসে এসে ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেপ্টেম্বর মাসে রফতানি আয়ে যে ধাক্কা লেগেছে, তা মূলত তৈরি পোশাক রফতানি কমার কারণে হয়েছে। গত মাসে ৩১৬ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক রফতানি হয়েছে, যা গত বছরের সেপ্টেম্বরের তুলনায় ৭ দশমিক ৫২ শতাংশ কম। গত মাসে ওভেন ও নিট উভয় ধরনের পোশাক রফতানিই হ্রাস পেয়েছে।
চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর পোশাক রফতানিতে ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশের বেশি, পাট ও পাটজাত দ্রব্যে ১৫ দশমিক ৭১ শতাংশ, প্লাস্টিক পণ্যে ৫৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ ও চামড়াজাত পণ্যে ২০ দশমিক ৮৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
অন্যদিকে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় কম আয় হয়েছে একাধিক পণ্যে। কৃষিপণ্যে ১৭ দশমিক ৯৮ শতাংশ, কেমিক্যাল পণ্যে ২৩ দশমিক ২৮ শতাংশ ও কাচঁজাত পণ্যে ৫২ দশমিক ৭৯ শতাংশ কম আয় হয়েছে।