- হামিম উল কবির
- ২২ মে ২০২০
করোনা চিকিৎসার সঙ্কট মোকাবেলায় অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে খুবই দ্রুততার সাথে সরকার দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দিলেও এখন পর্যন্ত ৩২ থেকে ৩৯ বিসিএস ব্যাচের ২৩১ চিকিৎসককে নিয়োগ দেয়া হয়নি। নিয়োগবঞ্চিত এসব চিকিৎসক অপেক্ষমাণ তালিকার নন, তারা ওই ব্যাচগুলোর মেধা তালিকায় স্থান করে নিয়েছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, সব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও এই ২৩১ জন বিসিএস উত্তীর্ণ চিকিৎসককে নিয়োগ দেয়া হয়নি। পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করে এই চিকিৎসকদের অনেকেই এখন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক হয়েছেন।
বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (বিপিএসসি) সুপারিশকৃত নিয়োগবঞ্চিত ২৩১ জন চিকিৎসক তাদের নিয়োগের ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দৃষ্টি কামনা করেছেন। এসব চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ২৩১ জনের মধ্যে ৩২তম বিসিএসে ১১ জন, ৩৩তম বিসিএসে ১১৪ জন, ৩৪তম বিসিএসে ১০ জন, ৩৫তম বিসিএসে ৭১ জন, ৩৬তম বিসিএসে পাঁচজন, ৩৭তম বিসিএসে ১৪ জন এবং ৩৯তম বিসিএসে ৭১ জন রয়েছেন। এদের সবাই বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত। গত ৫ মে নিয়োগবঞ্চিত এসব চিকিৎসক মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করে তাদের নিয়োগদানের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে সম্মিলিতভাবে আবেদন করেন।
বঞ্চিত এই চিকিৎসকদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা জানান, বিপিএসসির গৃহীত বিসিএস পরীক্ষায় আমরা মেধা ও যোগ্যতা প্রমাণ করে অন্যদের মতো ক্যাডার সার্ভিসে নিয়োগের জন্য সুপারিশ লাভ করি; কিন্তু পরবর্তীতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রকাশিত নিয়োগ প্রজ্ঞাপনে আমাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। আমরা জনপ্রশাসন সচিবালয়ে যোগাযোগ করেও নিয়োগ পাইনি। কেন নিয়োগ পাইনি, এ বিষয়ে জনপ্রশাসন থেকে কখনো কোনো সদুত্তর পাইনি। আমাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ রয়েছে কি না তা-ও জনপ্রশাসন জানাতে পারেনি।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে পুলিশ বা গোয়েন্দা প্রতিবেদনে নেতিবাচক তথ্য আছে কি না তা-ও জানানো হয়নি। আমাদের বিশ্বাস, তথ্যগত বিভ্রাটের কারণেই আমাদের নিয়োগ আটকে আছে। আমরা জনপ্রশাসন সচিবালয়ে বিভিন্ন সময়ে একাধিক আবেদন করেছি। এমনও অনুরোধ করছি যে, পুনর্বিবেচনাসাপেক্ষে আমাদের নিয়োগ প্রদান করা হোক। কারণ বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারে নিয়োগ পাওয়ার সব যোগ্যতা ও মেধা আমাদের রয়েছে। এখন তো আমাদের অনেকেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। করোনাকালীন বর্তমান সঙ্কটে আমরা জাতিকে অনেক বেশি দক্ষতা ও যোগ্যতার সাথে সেবা দিতে পারব। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিলেও আজো আমরা বঞ্চিত। নিয়োগের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরে আমরা আজ হতাশায় মুহ্যমান।’ এই চিকিৎসকরা আরো বলেন, আমরা করোনার এই দুর্যোগে দেশের জন্য লড়াই করতে প্রস্তুত আছি। রাষ্ট্রের প্রয়োজনে যেখানেই আমাদের পদায়ন করা হবে, সেখানেই আমরা সর্বোচ্চ সামর্থ্য দিয়ে অর্পিত দায়িত্ব পালন করব।
প্রসঙ্গত, ৩৯তম (বিশেষ) বিসিএসের অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগ দেয়া হয়। ৩০ এপ্রিল সরকারি কর্মকমিশন কর্তৃক সুপারিশের পরে ৪ মে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় তাদের নিয়োগের জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করে ও ১২ মে ৩৯ বিসিএস’র অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে তাদের চূড়ান্ত নিয়োগ প্রদান করা হয়।