
বাংলাদেশের পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক (Reciprocal Tariff) আরোপের ঘোষণা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। প্রতিযোগী দেশগুলোর তুলনায় এই হার কিছুটা কম হওয়ায় ব্যবসায়ীরা স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। তবে হিসাবের বিষয় হলো, এই নতুন শুল্ক আরোপের পর যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর মোট কত শতাংশ শুল্ক কার্যকর হচ্ছে।
বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (BKMEA) তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে নিটওয়্যার পণ্যের ওপর আগে থেকেই ক্ষেত্রবিশেষে ১৫.৫% থেকে ৩২% পর্যন্ত শুল্ক আরোপিত ছিল। এর ওপর এখন ২০% পাল্টা শুল্ক যুক্ত হওয়ায় মোট শুল্ক দাঁড়াচ্ছে ৩৫.৫% থেকে ৫২% পর্যন্ত।
বাংলাদেশের প্রতিযোগী দেশ ভারতের ক্ষেত্রে, পূর্ববর্তী শুল্ক ছিল ৮.৫% থেকে ১৫.৫%। এখন ২৫% পাল্টা শুল্ক আরোপের ফলে সেখানে মোট শুল্ক দাঁড়াচ্ছে ৩৩.৫% থেকে ৪০.৫%।
আরেক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিযোগী দেশ ভিয়েতনামের আগের শুল্ক হার ছিল ৮.৫% থেকে ১৬%। ২০% নতুন শুল্ক যোগ হওয়ায় সেখানে মোট শুল্ক দাঁড়াচ্ছে ২৮.৫% থেকে ৩৬% এর মধ্যে।
বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (BGMEA) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান একদিকে যেমন আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন, তেমনি কিছু উদ্বেগের কথাও তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন—
‘বাড়তি পাল্টা শুল্কের কারণে সাময়িকভাবে রপ্তানি কমে যেতে পারে। কারণ, মার্কিন ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে এখন আগের চেয়ে বেশি শুল্ক দিতে হবে। এতে তাদের মূলধনে চাপ পড়বে। যদি তারা অতিরিক্ত অর্থায়ন নিশ্চিত করতে না পারে, তাহলে ক্রয়াদেশ কমিয়ে দিতে পারে।
এছাড়া এই বাড়তি শুল্ক শেষ পর্যন্ত ভোক্তাদের ঘাড়েই পড়বে। পণ্যের দাম বেড়ে গেলে বিক্রিও কমে যেতে পারে।’
এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশের জন্য ২০ শতাংশ শুল্ক ঘোষণা করেন। চূড়ান্ত আলোচনায় দর কষাকষির পর বাংলাদেশের শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশে আনা হয়। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে এ খবর জানানো হয়। এ ঘটনায় সন্তোষ প্রকাশ করে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, দেশের জন্য এটা বিরাট সুখবর।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পাল্টা শুল্ক কমানোর আলোচনায় বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তাকে সহযোগিতা করেন নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমানসহ প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। শুল্ক নিয়ে আলোচনায় বাণিজ্য উপদেষ্টা ও নিরাপত্তা উপদেষ্টার ভূমিকা ছিল খুবই ইতিবাচক। প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলকে এ জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কূটনৈতিক বিজয় হয়েছে।