মন্দিরে জল খাওয়ার ‘অপরাধে’ উত্তরপ্রদেশে বেদম প্রহার ১৪ বছরের মুসলিম ছেলেকে।
মন্দিরে জল খাওয়ার জন্য বেধড়ক পেটানো হলো ১৪ বছরের একটি মুসলিম ছেলেকে। দিল্লির অদূরে গাজিয়াবাদের এই ঘটনায় রীতিমতো সাড়া পড়ে গিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। বাচ্চাটিকে পেটানোর ছবি সোশ্যাল নেটওয়ার্কে শেয়ার করেছিল অপরাধীরা। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে।
দিল্লি থেকে সামান্য দূরে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ। সেখানেই দীর্ঘদিনের পুরনো দাসনা মন্দির। এখন সেই মন্দিরের প্রধান নরসিংহানন্দ সরস্বতী। তিনি মন্দিরের দায়িত্ব পাওয়ার পরেই মন্দির চত্বরের বাইরে একটি বোর্ড লাগানো হয়েছে। সেখানে লেখা, ‘এই মন্দিরটি হিন্দুদের পবিত্রস্থল। এখানে মুসলিমদের ঢোকার অনুমতি নেই।’
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, বহুদিন ধরেই ওই মন্দিরটি আছে সেখানে। কিন্তু এতদিন হিন্দু-মুসলিম সকলেই সেখানে যেতে পারতেন। নরসিংহানন্দ আসার পর থেকেই নানা বিধিনিষেধ জারি হয়েছে। মুসলিমদের সঙ্গে কার্যত অচ্ছুতের মতো ব্যবহার করেন মন্দির কর্তৃপক্ষ।
গত সপ্তাহে সেই মন্দিরেই খেলতে খেলতে পৌঁছে যায় ১৪ বছরের একটি মুসলিম ছেলে। ছেলেটির বাবা মজুরের কাজ করেন। ছেলেটিও পড়াশোনা বিশেষ জানে না। মন্দিরের কাছে পৌঁছে ছেলেটি দেখে মন্দির চত্বরে একটি জলের ট্যাপ আছে। সেখানে জল খাওয়ার সময়ে ছেলেটি কর্তৃপক্ষের নজরে পড়ে যায়। নরসিংহানন্দের চেলা সেবক শৃঙ্গী নন্দন যাদব ছেলেটিকে তার পরিচয় জিজ্ঞেস করে। মুসলিম শুনেই তাকে মারতে শুরু করে সে। কিছুক্ষণের মধ্যেই অন্য সেবকরাও মারধরে অংশ নেয়। গোটা ঘটনাটির ভিডিও করা হয়।
প্রবল মারের পরে ছেলেটিকে মন্দির চত্বরের বাইরে ফেলে আসা হয়। ছেলেটি জানিয়েছে, মারার সময় তাকে বার বার বলা হয়েছে, মন্দিরে মুসলিমদের প্রবেশের অনুমতি নেই। জল খেয়ে সে অপরাধ করেছে।
ইন্টারনেটে ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পরে সক্রিয় হয় পুলিশ। অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, অপরাধীদের নামে এর আগে কখনো মামলা হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অবশ্য অভিযোগ, এর আগেও মুসলিমদের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে।
এসজি/জিএইচ (পিটিআই)