পুলিশ, বিএনপি নেতা-কর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বেলা তিনটার দিকে বিএনপি নেতা-কর্মীরা পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিতে যোগ দিতে মিছিল নিয়ে মুক্তারপুর এলাকায় আসে। এ সময় পুলিশ তাঁদের সেখানে অবস্থান করতে নিষেধ করে। মুক্তাপুর থেকে পরে নেতা-কর্মীরা ট্রাকে করে পুরোনো ফেরিঘাট এলাকায় যান। সেখানে বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট মিছিল আসতে শুরু করে। এ সময় মুন্সিগঞ্জ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মিনহাজুল ইসলাম বিএনপির একটি মিছিলের ব্যানার ধরে টান দেন। এতে নেতা-কর্মীরা পুলিশের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। একপর্যায়ে তাঁরা পুলিশের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। পুলিশও পাল্টা গুলি ছোড়ে। প্রথম দিকে ১০ থেকে ১৫ মিনিট বিএনপির ইটপাটকেলের জবাবে গুলি ছোড়ে পুলিশ। তবে পরবর্তী ৩৫ মিনিটি পুলিশকে কোণঠাসা করে ফেলেন বিএনপির কর্মীরা। তিন দিক থেকে ছোড়া ইটপাটকেলে বেশ কয়েকজন আহত হন। কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে পিছু হটতে হটতে ধলেশ্বরী নদীতে ঝাঁপ দিতে দেখা যায়। ঘটনাস্থলে বিএনপির এক কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। আহত অন্য নেতা-কর্মীরাও কেউ মুন্সিগঞ্জ জেলা হাসপাতালে না গিয়ে অন্যান্য হাসপাতালে যান। বিকেল চারটার দিকে পুলিশের একাধিক দল এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। দুই পক্ষের সংঘর্ষের মাঝখানে পড়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে যাওয়া দৈনিক সমকালের জেলা প্রতিনিধি কাজী সাব্বির আহমেদ ও দৈনিক দিনকালের জেলা প্রতিনিধি গুলজার হোসেন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে সন্দেহভাজন হিসেব পাঁচ-সাতজনকে আটক করেছে পুলিশ।
নাম না প্রকাশের শর্তে পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই) প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালাল। আমরা তাঁদের অনেক অনুরোধ করলাম। বিনয়ের সঙ্গে বললাম। হাত-পায়ে পর্যন্ত ধরলাম। তাঁরা শুনলই না। তাঁরা আমাদের বেদমভাবে পেটাল। বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল আমাদের ওপর নিক্ষেপ করেছে। আমরা নিজেদের রক্ষা করতে একপর্যায়ে পানির মধ্যে লাফ দিলাম। সেখানেও তাঁরা আমাদের মারতে শুরু করল।’
মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুজ্জামান বলেন, পুলিশ সেখানে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিল। বিএনপির নেতা-কর্মীরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে পুলিশের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে শুরু করেন। তাঁদের নিষেধ করায় তাঁরা আরও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে পুলিশের অন্তত ২০ থেকে ২৫ জন আহত হয়েছেন।