২০২২-১১-২০
সামিয়া রহমান প্রিমা
।। দৃকনিউজ অনুসন্ধান ।।
মুনিয়ার মৃত্যুর পরপর ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা’র মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে গুলশান থানার বক্তব্য, অভিযুক্ত আসামী আনভীরের সঙ্গে ভিক্টিমের পরিচয় থাকলেও কোনো সম্পর্ক ছিল না। অন্যদিকে ‘ধর্ষণ ও হত্যা’ মামলার তদন্ত প্রতিবেদনে মুনিয়া-আনভীরের সম্পর্ক ছিল বলে জানিয়েছে পিবিআই। গুলশান থানার অনুমান প্রাপ্ত ‘পুরুষের ডিএনএ’ আনভীরের নয় এবং পিবিআই এর অনুমান আনভীরের। মোসারাত জাহান মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় এমন পরস্পরবিরোধী বক্তব্য লক্ষ্য করা যায় পুলিশের দুটি শাখার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনে। মাত্র ২২ বছর বয়সেই প্রাণ হারান সদা প্রাণোচ্ছল এই শিক্ষার্থী।
গুলশান থানার মামলায় মুনিয়ার প্রেমিক বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল ‘আত্মহত্যায় প্ররোচনা’র। পরে ভিক্টিম পক্ষ আনভীরসহ ৮ জনকে আসামী করে ‘ধর্ষণ ও হত্যা’র অভিযোগ দায়ের করলে এই মামলার তদন্ত করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশান-পিবিআই। অর্থাৎ ‘গুলশান থানা’ এবং ‘পিবিআই’ দুটি ভিন্ন অভিযোগের তদন্ত করলেও একই ঘটনা ‘মুনিয়ার রহস্যজনক মৃত্যু’। দুটি ভিন্ন তদন্তে পুলিশের দুটি শাখার একই ফয়সালা, অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি জানিয়ে অভিযুক্ত আসামীদের অব্যাহতি। পুলিশের দুটি শাখার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করেছে দৃকনিউজ। লক্ষ্য করা যায়, ময়নাতদন্ত, ডিএনএ রিপোর্টসহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নে ‘পিবিআই’ এবং ‘গুলশান থানা’র বক্তব্য পরস্পরবিরোধী।
পিবিআই এবং গুলশান থানার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনায় ধরা পড়েছে আরও নানা অসঙ্গতি। পুলিশের দুটি শাখার তদন্ত প্রতিবেদনেই লক্ষ্য করা যায়, অভিযুক্ত অন্যতম আসামী আনভীরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। অর্থাৎ জিজ্ঞাসাবাদের কোনো তথ্য উল্লেখ না করেই অভিযুক্ত আসামীকে অব্যাহতি দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের জব্দ তালিকা থেকেই উঠে আসে অনেক প্রশ্ন, যেসব উত্তর চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনে নেই। ভিক্টিমের ফোন, পোশাক গুরুত্বপূর্ন এসব আলামতের ফরেনসিক প্রতিবেদনের বিষয়ে কোনো তথ্যই উল্লেখ করেনি গুলশান থানা। জব্দ আলামত অনুযায়ী ভিক্টিমের পরনের পোশাকে কেন রক্ত এবং কাটাছেঁড়া ছিল, গুরুত্বপূর্ণ এই প্রশ্নের উত্তর গুলশান থানা কিংবা পিবিআই কোনো তদন্ত প্রতিবেদনই জানা যায়নি।