মানবজমিন অফিসে পিটার হাসের দুই ঘণ্টা

স্টাফ রিপোর্টার

১১ আগস্ট ২০২৩, শুক্রবার

মানবজমিন অফিস ঘুরে গেলেন ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস। ট্রেড মার্ক হাসি আর আতিথেয়তায় কাটিয়ে গেলেন পাক্কা দু’ঘণ্টা। গণমাধ্যম ও গণতন্ত্রের পক্ষে নিজের অবস্থান জানান দিলেন আরও একবার। প্রস্তুতি ছিল সকাল থেকেই। নির্ধারিত সময়ের মিনিট দু’য়েক আগেই কাওরান বাজারের মানবজমিন কার্যালয়ে আসেন  মার্কিন দূত। তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনায় বরণ করে নেন মানবজমিন প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী এবং সম্পাদক মাহবুবা চৌধুরী। এ সময় তিনি মানবজমিন-এর বিভিন্ন বিভাগ ঘুরে দেখেন। পরে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বস্তুনিষ্ট গণমাধ্যম হিসেবে মানবজমিন-এর অবস্থান তুলে ধরেন। বলেন, জনগণের কণ্ঠস্বর যাতে শোনা যায় তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিদিন লড়াই করছি। এ সময় পিটার হাস বাকস্বাধীনতা ও সমাবেশের স্বাধীনতার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।

বলেন, বিধিনিষেধ ও ঝুঁকির কারণে গণমাধ্যমের সদস্যরা যে চ্যালেঞ্জগুলোর মুখোমুখি হন- তা কল্পনা করাও আমার জন্য কঠিন। মানবজমিন কার্যালয় পরির্দশনের শুরুতেই পিটার হাস নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে বসেন।

দেশ-বিদেশের ঘটনাগুলো মানবজমিন কীভাবে পেশাদারিত্বের সঙ্গে কভার করে সেই গল্প শোনেন প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, সম্পাদক মাহবুবা চৌধুরীর কাছ থেকে। মানবজমিন-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কেএম বাবর আশরাফুল হক এবং মার্কিন দূতাবাসের প্রেস সেকশনের প্রধান ব্রায়ান শিলার প্রাণবন্ত সেই মতবিনিময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। ঘণ্টাখানেকের সেই আড্ডা শেষে গোটা মানবজমিন অফিস ঘুরে দেখেন রাষ্ট্রদূত। প্রথমেই যান সংবাদ ব্যবস্থাপকদের রুমে। সেখানে যুগ্ম সম্পাদক শামীমুল হক, প্রধান বার্তা সম্পাদক সাজেদুল হক এবং বার্তা সম্পাদক কাজল ঘোষের সঙ্গে কথা বলেন। তারপর আসেন রিপোর্টিং বিভাগে। প্রধান প্রতিবেদক লুৎফর রহমান, কূটনৈতিক রিপোর্টার মিজানুর রহমান ও সিনিয়র রিপোর্টার তারিক চয়ন তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। রিপোর্টিং টিমের প্রায় সব সদস্যের সঙ্গে পরিচয়পর্ব শেষে রাষ্ট্রদূত একে একে মানবজমিন অনলাইন সেকশন, ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক, সম্পাদনা বিভাগ, স্পোর্টস, বিনোদন, মাল্টিমিডিয়া বিভাগ, কম্পিউটার ও মেকআপ সেকশন ঘুরে দেখেন। পরে বাণিজ্য বিভাগ, বিপণন বিভাগ এবং অ্যাকাউন্ট সেকশনেও সবার সঙ্গে শুভেচ্ছাবিনিময় করেন। বাণিজ্য বিভাগে রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানান এ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মোশাররফ হোসেন। বিপণন বিভাগে পিটার হাসকে স্বাগত জানান বিপণন ও ডিজিটাল মিডিয়া বিভাগের প্রধান সারোয়ার হোসেন টুটুল। হিসাব বিভাগ ঘুরে দেখার সময় রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানান হিসাব ও মানবসম্পদ মহাব্যবস্থাপক মো. নিজাম উদ্দিন।

পরিদর্শনকালে পিটার হাস স্কুলজীবনে সংবাদপত্র বিপণনের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার গল্প বলেন। পিটার বলেন, স্কুল জীবনে আমি সংবাদপত্র বিলি করতাম। এটা আমার শৈশবের একটি অবিস্মরণীয় স্মৃতি বটে। যদিও কাজটা কঠিন ছিল। আসলে লেখাপড়ার ব্যয় মেটানোর জন্য আমি কাজটি করতাম। খবরের কাগজ বিলি করার মধ্য দিয়েই মূলত সংবাদপত্রের সঙ্গে আমার সম্পৃক্ততা।
পরে সবার উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত আনুষ্ঠানিক পর্বে মানবজমিন-এর প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী তার বক্তব্যে সম্পাদক ও প্রকাশক মাহবুবা চৌধুরীসহ মানবজমিন পরিবারের সকলের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, মানবজমিন কার্যালয়ে আপনার এই সফর আমাদের দুই দেশের মধ্যেকার দৃঢ় বন্ধন এবং একটি গণতান্ত্রিক সমাজে গণমাধ্যম যে মৌলিক ভূমিকা পালন করে তার উজ্জ্বল এক প্রতীক। আমরা সম্পর্কের চর্চায় বিশ্বাস করি এবং আমাদের দুই দেশের বিকাশ এবং সমৃদ্ধিতে অবদান রাখে এমন আলোচনায় যুক্ত হতে চাই।

মতিউর রহমান চৌধুরী রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের উদ্দেশ্যে আরও বলেন, আসন্ন নির্বাচন কোনো ধরনের অনিয়ম ছাড়াই অনুষ্ঠিত হওয়া এখন বাংলাদেশের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে গণমাধ্যমের গুরুত্ব উড়িয়ে দেয়া যায় না। বাংলাদেশে এটি ক্রমাগত আক্রমণের শিকার হচ্ছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো আইনগুলো আমাদেরকে নিশ্চুপ করে দেয়ার চেষ্টা করছে এবং জনগণের প্রতি আমাদের দায়িত্ব পালনকে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং করে তুলছে। জনগণের কণ্ঠস্বর যাতে শোনা যায় তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিদিন লড়াই করছি। দৈনিক মানবজমিন এই লড়াইয়ের সম্মুখ সারিতে রয়েছে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের এই পরিদর্শন কর্মসূচি ইঙ্গিত দেয় যে, আমরা একা নই এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের সংগ্রামকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।

পরে পিটার হাস মানবজমিন পরিবারের উদ্দেশ্যে বলেন, বিধিনিষেধ এবং ঝুঁকির কারণে গণমাধ্যমের সদস্যরা যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন তা কল্পনা করাও আমার জন্য কঠিন। এসব ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বেশ সহজ। আমরা মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রে অন্তর্ভুক্ত নীতিগুলোর পক্ষে অবস্থান করছি। বাংলাদেশও এ নীতির পক্ষে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই নীতিগুলোর মধ্যে রয়েছে বাক স্বাধীনতা, সমাবেশের স্বাধীনতা এবং ধর্ম পালনের স্বাধীনতা। পাশাপাশি কোনো ধরনের প্রতিশোধের শিকার হওয়ার ভয় ছাড়াই যেকোনো অন্যায় নিয়ে কথা বলার ক্ষমতার কথাও উল্লেখ করেন তিনি। রাষ্ট্রদূতের মানবজমিন কার্যালয় পরিদর্শনকালে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসের স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশন্স এডভাইজার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান, প্রেস টিমের লিড ও প্রেস স্পেশালিস্ট রিকি সালমিনা, মিডিয়া কো-অর্ডিনেটর মাহাদি আল হাসনাত এবং সুমাইয়া আরেফিন অর্নি তার সঙ্গে ছিলেন।

পাঠকের মতামত

মন্তব্য সমূহ পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য সম্পাদক দায়ী নন।

Among the hundreds of newspapers in Bangladesh, Daily M Zamin is steadfast in its policy of always striving to reflect the wishes of the country and the nation, without succumbing to temptation and injustice. For this, my sincere congratulations to Matiur Rahman Chowdhury, the publisher of Manabzamin. Also congratulations to US Ambassador Peter Haas for visiting the Manabzamin Office.

M A Mazid Mia
১১ আগস্ট ২০২৩, শুক্রবার, ১:১২ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ এখন মূলত দুটি ধারায় বিভক্ত। কর্তৃত্ববাদী বনাম গনতন্ত্র ও মানবাধিকারবাদীতে।কিছু ক্ষমতার লিপ্সু লুটেরা, আমলা,গুটিকয়েক সুবিধাবাদী ছাড়া দেশের সকল জনগণই নিজের ভোট দেয়ার অধিকার টুকু ফিরে পেতে চায়,সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে।দেশের মানুষ যখন এক্কে বারেই অসহায় তখনই তারা বিদেশী শক্তি গুলোর ভূমিকায় তাদের প্রতি সমর্থন ও প্রত্যাশা বেড়ে যায় বাংলাদেশের গনতান্ত্রিক অধিকার, মানবাধিকার ও সংবাদপত্র গুলো যেন রাষ্ট্র ও সমাজের অসংগতিগুলো স্বাধীন ভাবে তুলে ধরতে পারে।মানবজমিন গনতান্ত্রীকামী রাষ্ট্র গুলোর মতো গত দেড় দশক ধরে সেই চেষ্টা করে চলছে সতর্কতার সঙ্গে এবং সংবাদপত্র প্রকাশে অর্থনৈতিক ঝুকি থাকা সত্বেও। মানবজমিন অফিসে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এই পরিদর্শন সেই সব বঞ্চিত মানুষ ও গনতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ের স্বীকৃত মিললো।প্রধান সম্পাদক প্রকাশকসহ মানবজমিনের সকল কে অভিনন্দন। সেই মার্কিন রাষ্ট্রদূত কেও অভিনন্দন। গনতন্ত্র ও ভোটাধিকার হারা মানুষের বিজয় আসবেই।

ইকবাল কবির
১০ আগস্ট ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ১০:৫৯ অপরাহ্ন

দৈনিক মানবজমিন উপমহাদেশের বিখ্যাত একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকা। উপমহাদেশের বিখ্যাত একজন পেশাদার সাংবাদিক দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী। নির্লোভ, নিরহংকার ও সত্য প্রকাশে নির্ভীক মতিউর রহমান চৌধুরী কখনো শত চাপের মুখেও অন্যায়ের কাছে মাথানত করেননি। যে সময়ে অনেকেই লেজুড়বৃত্তি করছেন, বিভিন্ন সুবিধাার বিনিময়ে সাংবাদিকতার নীতি বিসর্জন দিয়ে সাফাই গেয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেন অন্যায়কারীদের পক্ষে, তখন মতিউর রহমান চৌধুরীকে দেখা যায় দেদীপ্যমান প্রদীপ হাতে নিয়ে বুক চিতিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন পাহাড়ের মতো। বহু ঝড় মোকাবিলা করে এখনো তিনি সত্যের মশাল জ্বালিয়ে জনগণের গনতান্ত্রিক আকাঙ্খার অভিব্যক্তি প্রকাশ করে জননন্দিত। বাংলাদেশের গনতন্ত্রকামী জনগণ মতিউর রহমান চৌধুরীর জন্য গর্বিত। তাঁর সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তরফে রাষ্ট্রদূত হিসেবে আসার পর থেকেই পিটার হাস জনগণের গনতান্ত্রিক অধিকার, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন, বাকস্বাধীনতা, সমাবেশের স্বাধীনতা এবং সংবাদমাধ্যমে স্বাধীনতার পক্ষে সোচ্চার। বহুল সমালোচিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের বা সংশোধন করতে বারবার তাগিদ দিয়েছে পিটার হাস এবং মার্কিন প্রশাসন ও জাতিসংঘ। সরকার সামান্য পরিবর্তন করে একই মোড়কে ভিন্ন নামে সাইবার নিরাপত্তা আইন করতে যাচ্ছে। বলাই বাহুল্য সাইবার নিরাপত্তা আইনও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো ভয়ের পরিবেশ বজায় রাখবে। বাকস্বাধীনতা, সমাবেশের স্বাধীনতা সংকুচিত করবে ও মানবাধিকার লঙ্ঘন করতে সহায়ক হবে। প্রতিবেদক লিখেছেন, “এ সময় পিটার হাস বাকস্বাধীনতা ও সমাবেশের স্বাধীনতার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন।” বর্তমান সময়ে বাংলাদেশে বাক ও সমাবেশের স্বাধীনতা মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে সমাবেশ করতে হয়। হামলা থেকে রেহাই পাচ্ছেনা। মামলা থেকেও রেহাই নেই। রাতে বাড়ি বাড়ি হানা দিয়ে নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। একসময়ের বিএনপির জোটসঙ্গী জামায়াতে ইসলামীকে সমাবেশ করতে একেবারেই দিচ্ছেনা। সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফরে এসে জামায়াতে ইসলামীর একটি প্রতিনিধি দলের সাথে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আগামী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও পৃথিবীর গনতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোর কাছে জামায়াতে ইসলামী একটি নিয়মতান্ত্রিক, গনতান্ত্রিক ও সুশৃঙ্খল দল হিসেবে পরিচিত। কিন্তু, আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতে ইসলামীকে আদর্শ ও রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করতে ব্যর্থ হয়ে নানাভাবে জামায়াতের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করছে। জামায়াতে ইসলামীকে সমাবেশ করতে দিচ্ছেনা। জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যাতে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে না পারে। আবার, আওয়ামী লীগের জোটের সঙ্গী রেজাউল হক চাঁদপুরী জামায়াতে ইসলামীর সভাসমাবেশ ও মিছিল করার ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে উচ্চ আদালতে রিট দায়ের করেছেন। এধরণের পদক্ষেপ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ গনতন্ত্র চর্চার পথে অন্তরায়। সম্ভবত এবিষয়টি পিটার হাস- এর দৃষ্টিগোচরে এসেছে বলেই তিনি বাকস্বাধীনতা ও সমাবেশের স্বাধীনতার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন বলেই প্রতীয়মান হয়। আমাদের গর্বিত গনতন্ত্রের সিপাহসালার মতিউর রহমান চৌধুরী পিটার হাসকে যা বলেছেন তা বাংলাদেশের গনতন্ত্রকামী জনগণের মনের প্রতিধ্বনি। তিনি বলেছেন, “আসন্ন নির্বাচন কোনো ধরনের অনিয়ম ছাড়াই অনুষ্ঠিত হওয়া এখন বাংলাদেশের জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে গণমাধ্যমের গুরুত্ব উড়িয়ে দেয়া যায় না। বাংলাদেশে এটি ক্রমাগত আক্রমণের শিকার হচ্ছে। ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো আইনগুলো আমাদেরকে নিশ্চুপ করে দেয়ার চেষ্টা করছে এবং জনগণের প্রতি আমাদের দায়িত্ব পালনকে ক্রমশ চ্যালেঞ্জিং করে তুলছে। জনগণের কণ্ঠস্বর যাতে শোনা যায় তা নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিদিন লড়াই করছি। দৈনিক মানবজমিন এই লড়াইয়ের সম্মুখ সারিতে রয়েছে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসের এই পরিদর্শন কর্মসূচি ইঙ্গিত দেয় যে, আমরা একা নই এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের সংগ্রামকে স্বীকৃতি দিচ্ছে।” মতিউর রহমান চৌধুরী জনগণের মনের কথা বলেছেন। এমুহূর্তে জনগণের গনতান্ত্রিক ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। সকল দলের অংশগ্রহণমূলক প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও জনগণের উৎসবমুখর পরিবেশে জনগণের পছন্দের প্রার্থী বেচে নেয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। দিনের ভোট দিনেই করতে হবে। রাতের আঁধারে ভোট করা বন্ধ করতে হবে। আরেকটি উদ্বেগের খবর প্রকাশ করেছে গতকাল অনলাইনে পত্রিকাগুলো। যুবলীগ নির্বাচন কমিশনে গিয়ে বিএনপির নিবন্ধন বাতিলের জন্য স্মারকলিপি দিয়েছে। এতে বুঝা যায়, সরকার বিরোধী দলের ভয়ে ভীত হয়ে পড়েছে। তাই অতীতের মতো তাঁরা একতরফা নির্বাচন করতে চায়। আরেকটি বিষয় প্রমাণ হয়েছে, নির্বাচন কমিশন সরকারের বা আওয়ামী লীগের আজ্ঞাবহ। না হয় যুবলীগের কাছ থেকে বিএনপির নিবন্ধন বাতিলের দরখাস্ত কিভাবে কমিশন গ্রহণ করতে পারলো? গনতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা, সমাবেশের স্বাধীনতা, সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক, অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে আওয়ামী লীগ সরকার। বাংলাদেশ বাঁচাতে হলে এই সংকট উত্তরণের পথ খুঁজে বের করা জরুরি।

আবুল কাসেম
১০ আগস্ট ২০২৩, বৃহস্পতিবার, ১০:৫৯ অপরাহ্ন