মহাকাশে হাতুড়ি-চাপাতি বাহিনীর কাজ কী’ প্রশ্ন রিজভীর

  • অনলাইন প্রতিবেদক
  •  ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২০:১২, আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২৩:৩৯
বক্তব্য রাখছেন অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। – ছবি : নয়া দিগন্ত

সরকার দলীয় ছাত্রসমাবেশের কড়া সমালোচনা করে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ছাত্রলীগ নাকি মহাকাশ পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। তাদের নেতা যদি একটু বলতেন তারা মহাকাশে গিয়ে কী করবে, হাতুড়ি-চাপাতি বাহিনীর সেখানে কাজ কী? সেখানে তো বিশ্বজিৎ নেই। সেখানে তো আবরার নেই। তাহলে চাপাতি ও হেলমেট বাহিনী সেখানে গিয়ে কী করবে?

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন,‘গতকাল ছাত্রলীগের ছাত্র সমাবেশে শেখ হাসিনা মনে মনে বলছে তার সোনার ছেলেরা ভালো কথা বলতে পারে। কিন্তু তিনি ভাবছেন না যে, তার পায়ের নিচে মাটি নাই। এতদিন তো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে বিরোধী দলীয় নেতা-কর্মীদের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করেছে। এক বছরে বিএনপির ২০ জন নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। অসংখ্য নেতা-কর্মী পঙ্গু হয়েছে, চোখ চলে গেছে, হাত চলে গেছে। এতদিন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দিয়ে কাজ হয় নাই, এখন ছাত্রলীগ দিয়ে করবে। সরকারের টাকা খরচ করে সারাদেশে অলিখিত হরতাল করে ঢাকায় নিয়ে আসার পরে অশ্বের ডিম ছাড়া আর কিছুই পাইনি।

রিজভী বলেন, গতকাল ছাত্রলীগের সমাবেশ হয়েছে। আমাদেরও প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর অনুষ্ঠান হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে এত লোকজন হয়েছে যে সামনের রাস্তায় জায়গা হচ্ছিল না। আমাদের একদিনের প্রস্তুতি ছিল। এই যে ২৪ ঘণ্টার প্রস্তুতিতে মানুষের এত উপচে পড়ার ঢল, ব্যাপক তরঙ্গের সৃষ্টি হয়েছিল এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। কোনো রকমে কষ্ট করে আমাদের অনুষ্ঠানে এসেছিল লোকজন।

আর ছাত্রলীগের সমাবেশে আসার জন্য গাড়ি ফ্রি করে দেয়া হয়েছিল। হোটেলের সিট ফ্রী করে দেয়া হয়েছিল। লঞ্চ ফ্রি করে দেয়া হয়েছিল। হলের খাবার বন্ধ করে দিয়ে সেই খাবার সোহরাওয়ার্দীতে আনা হয়েছিল ছাত্রলীগকে খাওয়াবে বলে।

তিনি বলেন, ‘গতকাল ঢাকা শহরে এত বাস এসেছে ঢাকা শহরে জায়গা হচ্ছিল না ছাত্রলীগের সমাবেশে যে বাসগুলো এসেছে তার মধ্যে তিন-চারজন করে লোক এসেছে। তার মানে হল যত লোকজন এসেছে তার চেয়ে বাস বেশি আর এ জন্যে ঢাকা শহরে জনগণের স্বাভাবিক চলাচলের বিঘ্ন হয়েছে।

বিএনপির এই নেতা বলেন,‘রাষ্ট্রীয় টাকা খরচ করে সমাবেশ করে জোর করে বাস এনে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ানো যাবে, কিন্তু জনগণের সাড়া পাওয়া যাবে না।

দেশের জনগণ বুঝে গেছে জনগণের টাকা কিভাবে খরচ করছে তারা। জনগণের ওপর ১৪০ ধারা জারি করে নিজেরা জমিদারের মত চলে।

বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন,‘শেখ হাসিনা তার নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে তাড়াতাড়ি তফসিল ঘোষণা করতে চাইবে। কিন্তু আপনি মনে রাখবেন দেশের জনগণের যে দাবি সুষ্ঠু নির্বাচন, ভোটের অধিকার এই দাবিকে অগ্রাহ্য করলে জনগণ সেটা মানবে না। ২০১৪ এবং ১৮ সালের নির্বাচন ছিল বিতর্কিত বিশ্বের কোথাও সেই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নেই। দেশে ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন আর হবে না। যেদিন তফসিল ঘোষণা করা হবে সেদিনই হবে এই সরকারের অন্তিম যাত্রা। জনগণের তীব্র আন্দোলনে নিশি রাতের সরকারের পতন ঘটবে।

প্রধানমন্ত্রীর সামনে একটি রাস্তাই খোলা, সেটি হলো অবিলম্বে পদত্যাগ করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা।