করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রাদুর্ভাবের কারণে পাঁচ উপনির্বাচন ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন স্থগিতের দাবি জানিয়েছে বিএনপি। এ ছাড়া আদালতগুলোও কিছুদিন বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে দলটি। আজ বৃহস্পতিবার বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান।
আজ নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ২১ তারিখের উপনির্বাচনগুলো সেদিনই হবে। ২৯ তারিখের নির্বাচনের ব্যাপারে ২১ তারিখ কমিশন সিদ্ধান্ত নেবে। এ বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, করোনাভাইরাসের আতঙ্কের কারণে বিভিন্ন জায়গা থেকে নির্বাচন বন্ধ করার কথা এসেছে। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত একপেশে সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, ‘জনগণের সঙ্গে সম্পর্কবিবর্জিত, জনগণের আশা-প্রত্যাশা যে এই দুর্যোগের সময় কমিশন মানবিক আচরণ করবে, তারা সেটা করছে না। বরং অমানবিক আচরণ করছে।’
নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, কমিশন তাদের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাহার করে জনগণের স্বার্থে, মানুষের বেঁচে থাকার স্বার্থে এই নির্বাচনগুলোকে আপাতত স্থগিত রাখবেন। তিনি আরও বলেন, এমনিতে ভোটার উপস্থিতি কম হয়। সে ক্ষেত্রে এই করোনাভাইরাসের কারণে ভোটার উপস্থিতি আরও কম হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।
আদালতে মানুষের ভিড় হয় উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ইতিমধ্যে ৩০ বিচারক কোয়ারেন্টিনে চলে গেছেন। এটা পরিষ্কার আদালতগুলোতে এই ভাইরাসের সংক্রমণটা বেশি হচ্ছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে, জনগণের স্বাস্থ্যের কথা চিন্তা করে, তাদের জীবনের কথা চিন্তা করে আদালতগুলো আপাতত কিছুদিন বন্ধ রাখার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘আমাদের আহ্বান থাকবে, আদালতের কার্যক্রম স্থগিত রাখা। সুপ্রিম কোর্টের বিচারকেরা দেশের কথা চিন্তা করে, জনগণের কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নেবেন।’
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘প্রথম থেকেই সরকার করোনাভাইরাসের বিষয়টি গুরুত্ব দেয়নি। আমরা প্রথম সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলাম যে এখানে দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে সরকার। আমরা বলেছিলাম, স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করুন। তারা বন্ধ করেনি। পরে ১৬ তারিখে তারা স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে।’
বর্তমান পরিস্থিত সবকিছু শাটডাউন করার মতো অবস্থায় জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘শাটডাউন না করলে যেভাবে ব্যাপক বিস্তৃতি লাভ করেছে, তা ভয়াবহ মহামারি আকার ধারণ করবে। বাংলাদেশ এমনিতেই একটা ঘনবসতিপূর্ণ দেশ। এ দেশে এই ধরনের একটা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে, এখন এটা বাইরের থেকে আসার দরকার হবে না, এটা দেশের অভ্যন্তরে যারা আক্রান্ত হয়েছেন তাঁদের দ্বারা সব জায়গায় ছড়াবে।’ ফখরুল বলেন, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ।