ব্যাংক হিসাব জব্দের বিষয়ে নিম্ন আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাচ্ছেন পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. বেনজীর আহমেদ। এ ব্যাপারে কাগজপত্র প্রস্তুত করা হচ্ছে।
গতকাল শনিবার এ কথা জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী ও সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক শাহ মঞ্জুরুল হক। অপরদিকে বেনজীর ও তাঁর পরিবারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদনের প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক কর্মকর্তা।
বেনজীর আহমেদের আইনজীবী বলেন, ‘কারও সম্পদ ক্রোক বা অ্যাকাউন্ট জব্দ করার আগে তাঁকে শোকজ নোটিশ দিতে হয়; কিন্তু সেটি হয়নি। তাই ব্যাংক হিসাব জব্দের বিষয়ে নিম্ন আদালতের আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করা হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বলা হচ্ছে, তাঁর আয়ের সঙ্গে সম্পদ অসংগতিপূর্ণ। কিন্তু কীভাবে সম্পদ অর্জন করেছেন, সে ব্যাপারে বেনজীর আহমেদের ব্যাখ্যা থাকতে পারে। আমরা তা শিগগির আদালতকে জানাব।’
এদিকে, বেনজীর আহমেদ ও তাঁর পরিবারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আদালতে আবেদন করার প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন দুদকের এক কর্মকর্তা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘আদালতের অনুমতি ছাড়া বেনজীর আহমেদ ও তাঁর পরিবার যেন দেশের বাইরে যেতে না পারেন সে ব্যাপারে নির্দেশনা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।’
দুদকের করা এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার সাবেক আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের নামে থাকা কক্সবাজার ও গোপালগঞ্জে ৮৩টি জমির দলিল ক্রোক ও ৩৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করার আদেশ দেন ঢাকা মহানগর আদালত। বিচারক আদেশে বলেন, ৮৩টি সম্পত্তি ক্রোক ও ৩৩টি ব্যাংক হিসাব জব্দ করা না হলে তা হস্তান্তরের সম্ভাবনা রয়েছে, যা পরে রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হবে না।
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান সমকালকে বলেন, ‘বেনজীর আহমেদ ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু মাত্র। আরও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা চাওয়ার ব্যাপারটি অনুসন্ধান কর্মকর্তার এখতিয়ার বলে উল্লেখ করেন তিনি।
অন্যদিকে বেনজীর আহমেদের সম্পত্তি ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব জব্দের বিষয়ে আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে আজ রোববার রিসিভার নিয়োগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে জানিয়েছেন দুদকের আইনজীবী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর। তিনি বলেন, ‘বেনজীর আহমেদের স্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও ব্যাংক হিসাব জব্দে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তা নেওয়া হবে।’
২০১৫ সালে র্যাবের মহাপরিচালকের দায়িত্ব পান বেনজীর আহমেদ। এর আগে তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার ছিলেন। প্রায় সাড়ে চার বছর র্যাবের নেতৃত্ব দেওয়ার পর ২০২০ সালের ১৫ এপ্রিল পুলিশের মহাপরিদর্শক হন ড. বেনজীর।
samakal