বিশ্বব্যাংক, এডিবি, জাইকা ও আইএমএফ থেকে ৬ বিলিয়ন ডলার চায় ঢাকা

সরকারের বকেয়া আমদানি বিল পরিশোধের মাধ্যমে অর্থনীতি সচল করা ও বৈদেশিক মুদ্রার স্থিতিশীল রিজার্ভ রাখতে চার আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থার কাছে ৬ বিলিয়ন ডলার বাজেট সহায়তা চেয়ে চিঠি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই ঋণগুলো পাওয়ার আশা করছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অর্থ সচিব মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) টিবিএসকে বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) কাছে এক বিলিয়ন ডলার করে মোট তিন বিলিয়ন ডলার বাজেট সাপোর্ট চাওয়া হয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে আরও তিন বিলিয়ন ডলার নতুন ঋণ চাওয়া হয়েছে।’

‘ঋণ চেয়ে এই চারটি সংস্থাকে ইতিমধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে চিঠি পাঠানো হয়েছে। খুব শিগগিরই সংস্থাগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হবে,’ জানান অর্থসচিব।

অর্থবিভাগের কর্মকর্তারা টিবিএসকে জানান, চারটি সংস্থার সঙ্গেই পৃথকভাবে মৌখিকভাবে আলোচনায় ঋণ পাওয়ার বিষয়ে আশ্বাস পাওয়ার পর সংস্থাগুলোকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঋণপ্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। খুব শিগগিরই সংস্থাগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনা শুরু হবে।

ডলার সংকটের কারণে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও সারের মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের আমদানি বিল পরিশোধ করতে পারছে না সরকার। এছাড়া সরকারের বিভিন্ন সংস্থার আমদানি বিলও বকেয়া রয়েছে।

এসব সমস্যার সমাধানে বিশ্বব্যাংক ও এডিবির কাছ থেকে দুই বিলিয়ন ডলার ঋণ নিয়ে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানি তেল আমদানির বকেয়া বিল পরিশোধ করবে সরকার। এ তিনটি পণ্য আমদানির ২.২ বিলিয়ন ডলারের বিল বকেয়া রেখে গেছে শেখ হাসিনার সরকার।

চলতি মাসে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজারের ঢাকা সফরে ১ বিলিয়ন ডলার ঋণের বিষয়ে আলোচনা হবে।

বিশ্বব্যাংকের এই বাজেট সহায়তার শর্ত হিসেবে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের ভর্তুকি প্রত্যাহার করা এবং নতুন পাওয়ার সেক্টর মাস্টারপ্ল্যান দ্রুত চূড়ান্ত করার শর্তারোপ করা হতে পারে বলে মনে করছেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা।

এছাড়া ইতিমধ্যে অনুমোদন দেওয়া ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের পাশাপাশি আইএমএফের কাছে আরও ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণপ্রস্তাব পাঠিয়েছে বাংলাদেশ।

অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে অনলাইন সভায় আইএমএফ এই ঋণ দেওয়ার বিষয়ে মৌখিকভাবে সম্মতি দিয়েছে।

নতুন এই ঋণ পাওয়ার বিষয়ে আগামী অক্টোবরে আইএমএফের বার্ষিক সাধারণ সভায় আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে আইএমএফের সঙ্গে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি করে সরকার। ইতিমধ্যে ওই ঋণচুক্তির আওতায় প্রায় ২.৩ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ।

অর্থসংকটে থাকা পাকিস্তান আইএমএফ থেকে ৭ বিলিয়ন ডলারের বেইলআউট কর্মসূচি পেয়েছে। ফলে বাংলাদেশও সংস্থাটি থেকে অতিরিক্ত ৩ বিলিয়ন ডলার ঋণ পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী।

tbs