বিশ্বকাপ এখন সাকিবদের কাছে ‘দিল্লির লাড্ডু’

শুনে আসছি ছোটবেলা থেকেই। দিল্লির লাড্ডু খেলেও পস্তায়, না খেলেও পস্তায়। তা দিল্লিতে পা রাখার পর লাড্ডুর স্বাদ আর নেওয়া হয়ে ওঠেনি। বাংলাদেশ দলও কলকাতা থেকে ঠিকানা নিয়েছে দিল্লির। তারা কেউ খেয়েছে কিনা, জানা নেই।

তবে বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের যে অবস্থা, তাতে সাকিবদের কাছে এই টুর্নামেন্ট এখন প্রবাদের সেই দিল্লির লাড্ডুর মতোই! জয়ের খোঁজে হন্যে হলেও মিলছে না তা, খেলতে নেমে বারবার পস্তাতে হচ্ছে। আবার চাইলেও না খেলে টুর্নামেন্ট থেকে বাড়ি ফিরতে পারছে না। পাকিস্তানের কাছে ৭ উইকেটে হারার পর পয়েন্ট তালিকায় চায়ের লিকারের মতো তলানিতে পড়ে রয়েছে সাকিবরা। এখন ১০ দলের মধ্যে ৯ নম্বরে থাকাটাও অলীক মনে হচ্ছে। বিভ্রান্ত একটি দল এখন ভাগ্যের দিকে তাকিয়ে রয়েছে অসহায়ের মতো।

দিল্লিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগামী সোমবার নামবে সাকিবরা। ভীষণ চেনা এই প্রতিপক্ষ। অতীতে সুখস্মৃতিও রয়েছে অনেক। কিন্তু এ মুহূর্তে দলের যে মানসিক অবস্থা, তাতে কেউ নিশ্চিতভাবে বলতে পারছে না– ম্যাচটি জিতবই; বরং মেহেদী হাসান মিরাজ এসে পাকিস্তান ম্যাচের পর বলে গিয়েছেন, কোনো কিছুই ঠিকঠাক হচ্ছে না।

ব্যাটাররা শট খেললে ফিল্ডারদের হাতে চলে যাচ্ছে। বোলাররা বল করলেও ভালো কিছু হচ্ছে না। এমন অবস্থায় ভাগ্যদেবতা সদয় না হলে নাকি কিছুই হবে না। মিরাজের কথাগুলো শুনে অপেশাদারের মতো মনে হলেও এটাই এখন ড্রেসিংরুমের বাস্তবতা।

অথচ সাকিব যেমনটা বলেছেন, তাদের লক্ষ্য এখন ২০২৫ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির টিকিট পাওয়া। সেটি নিশ্চিত করতে হলে হাতে থাকা শ্রীলঙ্কা ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে জিততেই হবে। কেননা ৮ নম্বরে থাকতে হলে দুটি দলকে নিচে ফেলতেই হবে। সেই দল দুটি হতে পারে শ্রীলঙ্কা, নেদারল্যান্ডস কিংবা ইংল্যান্ড। শ্রীলঙ্কার ম্যাচ বাকি রয়েছে ভারত, বাংলাদেশ আর নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে। যদি ধরেই নেওয়া যায় যে এই তিনটি ম্যাচই হারবে তারা, তাহলে তাদের মোট জয় থাকবে দুটি। অন্যদিকে নেদারল্যান্ডসের ম্যাচ বাকি রয়েছে আফগানিস্তান, ইংল্যান্ড আর ভারতের সঙ্গে।

এটিও এভাবে ধরে নিয়ে হিসাব করা যায় যে তিনটি ম্যাচই হারছে ডাচরা। তাহলেও বাংলাদেশকে অন্তত আর একটি ম্যাচ জিততেই হবে। তার পর না হয় রানরেটের হিসাব করা যাবে। এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের সবচেয়ে হতাশাজনক অবস্থানে থাকা ইংল্যান্ডের হিসাবও সহজ নয়। তাদের ম্যাচ বাকি অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস আর পাকিস্তানের সঙ্গে। এখানেও যদি ইংলিশরা তাদের হারের ধারা অব্যাহত রাখে, তাহলে হয়তো সাকিবদের কিছুটা স্বস্তি থাকবে।

এত সব ‘যদি’র হিসাব দিল্লিতে বসে নিশ্চয় করছে না টিম ম্যানেজমেন্ট। তাদের সামনে এখন সহজ সমীকরণ, যদি তলানিতে পড়ে থাকতে না চাও, তাহলে আগে শ্রীলঙ্কাকে হারাও। সবাই মিলে অন্তত এই একটি ম্যাচে দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করো। এই এশিয়া কাপেই তো শ্রীলঙ্কাকে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি ম্যাচে হারানো গেছে। গৌহাটিতে যদি লঙ্কানদের হারানো যায়, তাহলে দিল্লিতে কেন নয়?

সমকাল