বিশাল অঙ্কের বেতন পেতে চলেছেন বাবর-রিজওয়ান-আফ্রিদিরা

  • নয়া দিগন্ত অনলাইন
  •  ০৫ আগস্ট ২০২৩, ১০:২৮
বিশাল অঙ্কের বেতন পেতে চলেছেন বাবর-রিজওয়ান-আফ্রিদিরা – ছবি : সংগৃহীত

পাকিস্তান ক্রিকেটে বড় পরিবর্তন। ২০২৩-২৪ মৌসুমে বাবর আজমদের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বেতন বৃদ্ধি হচ্ছে। এমনটা আগে কখনো হয়নি। আসলে পিসিবির সাথে ক্রিকেটারদের ২০২২-২৩ মৌসুমের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ৩০ জুন। সেই চুক্তি শেষ হলেও এখনো পর্যন্ত ২০২৩-২৪ মৌসুমের চুক্তিতে সই করেননি বাবর আজম, মহম্মদ রিজওয়ানরা। কারণ, বেতন বাড়লেও, সেই অঙ্কে খুশি ছিলেন না ক্রিকেটাররা। মূলত ক্রিকেটারদের চাপেই ঐতিহাসিক বেতন বৃদ্ধি করতে বাধ্য হচ্ছে পিসিবি।

ক্রিকেটারদের দাবি ছিল, পুরো কেন্দ্রীয় চুক্তিই ঢেলে সাজানো হোক। এর মধ্যে বেতন বৃদ্ধি তো আছেই, পাশাপাশি বিমা সুবিধা, ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে অংশগ্রহণের নিয়মে পরিবর্তন এবং লভ্যাংশ বণ্টনের মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করার দাবি ছিল বাবরদের। আর সেই মতোই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে খেলতে না দেয়া হলে, তার ক্ষতিপূরণসহ নানা সুযোগ-সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে নতুন কেন্দ্রীয় চুক্তিতে। ক্রিকেট পাকিস্তানকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন পিসিবি প্রধান জাকা আশরফ।

বিশ্বের বাকি ক্রিকেট বোর্ড যেমন বেতন দেয়, সেই মতো পাকিস্তানের ক্রিকেটারদেরও বেতনের দাবি করেছিলেন বাবর আজমরা। তার জন্য ক্রিকেটাররা ৪৫ শতাংশ বেতন বাড়ানোর দাবি করেছিলেন। নতুন চুক্তিতে তিন সংস্করণে খেলা ক্রিকেটার, যেমন- বাবর আজম, মহম্মদ রিজওয়ান, শাহিন শাহ আফ্রিদিদের মাসে প্রায় ৪৫ মিলিয়ন পাকিস্তান রুপির (প্রায় ১৫ হাজার ৯০০ ডলার) প্রস্তাব দেয়া হতে পারে। যা আগের চুক্তির চেয়ে অনেকটাই বেশি। আগের চুক্তিতে লাল বলে খেলা ক্রিকেটাররা মাসে পেতেন ১১ মিলিয়ন পাকিস্তানি রুপি আর সাদা বলের ক্রিকেটাররা পেতেন ৯ লাখ ৫০ হাজার রুপি। এ ছাড়া ক্রিকেটারদের অন্য খাতেও আয় বাড়ানোর কথা ভাবছে পিসিবি।

রাজনৈতিক কারণে পাকিস্তানের ক্রিকেটাররা আইপিএলে খেলতে পারেন না। যে কারণে আর্থিকভাবে অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয় তারা। অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোতে সুযোগ মিললেও জাতীয় দলের খেলা থাকায় অনেক সময়ই অংশ নিতে পারেন না ক্রিকেটাররা। যা নিয়ে গত কয়েক বছরে ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করতে না পারা নিয়েও বিভিন্নভাবে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।

বর্তমানে একজন ক্রিকেটারকে ছাড়পত্র পেতে হলে প্রথমে প্রধান কোচের সম্মতি পেতে হয়, এর পর বোর্ডের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বিষয় পরিচালকের অনুমোদন দরকার হয়। ক্রিকেটাররা এই বিষয়টি নিয়েও সরব হয়েছেন। তারা এই নিয়মে আরো স্বচ্ছতা আনতে বলেছেন। আর যদি কোনো কারণে ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টে খেলতে না দেয়া হয়, সে ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণ নীতি চালুর কথা বলেছিলেন তারা। সেই দাবিও পূরণ করা হতে পারে ক্রিকেটারদের। শতভাগ পূরণ করা সম্ভব না হলেও, কিছুটা আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিষয়ে ভাবছে পিসিবি।

এ ছাড়া কোনো ক্যাটাগরির ক্রিকেটাররা ক’টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলবেন, সেটাও নির্দিষ্ট করে দিতে চায় পিসিবি। ক্যাটাগরিতে ‘এ’তে থাকা ক্রিকেটাররা খেলতে পারবেন একটি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে। ‘বি’ ক্যাটাগরির ক্রিকেটাররা পারবেন দু’টি লিগে আর ‘সি’ ক্যাটাগরিতে থাকা ক্রিকেটাররা খেলবেন ৩টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে।

যদিও লভ্যাংশ বণ্টনের বিষয়টি মানছে না পিসিবি। টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে এই সংস্করণের ম্যাচ ফি বাড়ানোর কথা ভাবছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড।

চুক্তির পুরো বিষয়টি করা হচ্ছে সাবেক তিন অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক, ইনজামাম-উল-হক ও মহম্মদ হাফিজকে নিয়ে গড়া ক্রিকেট টেকনিক্যাল কমিটির সহায়তায়। পাকিস্তানের সফলতম টেস্ট অধিনায়ক মিসবাহর নেতৃত্বে এই কমিটি ক্রিকেটারদের সাথে যোগাযোগ রাখছে। যে কারণে চুক্তি হওয়া নিয়ে আশাবাদী পিসিবি।
সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস