দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের কেউ কেউ বিপুল পরিমাণ জমির মালিক। কারও বেশি কৃষিজমি, কারও বেশি অকৃষিজমি।
নির্বাচন উপলক্ষে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের কাছে প্রার্থীদের দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার ‘নির্বাচনী হলফনামার তথ্যচিত্র: জনগণকে কী বার্তা দিচ্ছে?’ শিরোনামের এই বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়।
টিআইবি প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, আয়, সম্পদ, দায়, মামলা ইত্যাদি বিষয়ে প্রবণতা বিশ্লেষণ করেছে। পাশাপাশি সবচেয়ে বেশি আয় বৃদ্ধি, সবচেয়ে বেশি সম্পদ বৃদ্ধি, সবচেয়ে বেশি কৃষি ও অকৃষিজমি এবং সবচেয়ে বেশি ঋণগ্রস্ত ১০ জন করে প্রার্থীর তালিকা তুলে ধরেছে।
সবচেয়ে বেশি কৃষিজমির মালিক ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে ৪ জন আওয়ামী লীগের। পাঁচজন স্বতন্ত্র, যাঁদের মধ্যে চারজন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। একজন বিএনপির সাবেক নেত্রী। একজন প্রার্থী জাসদের।
বেশি কৃষিজমির মালিক স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে মো. গোলাম কবির ভূঞা, মো. জামিল হোসাইন, ফিরোজুর রহমান ও হোসাইন মো. আবু তৈয়ব আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। মোছা. বিউটী বেগম বিএনপির রাজনীতি করতেন।
অকৃষিজমি
সবচেয়ে বেশি ১০ জন অকৃষিজমির মালিকের মধ্যে তিনজন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। একজন করে প্রার্থী রয়েছেন জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, জাতীয় পার্টি-জেপি ও তৃণমূল বিএনপির। তিনজন স্বতন্ত্র, যাঁরা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের ভূমি সংস্কার আইন ২০২৩–এ বলা আছে, ‘পরিবার বা সংস্থার মালিকানাধীন ১ (এক) শত বিঘার অতিরিক্ত সরকারের নিকট সমর্পিত বা সমর্পণযোগ্য ভূমি’। মানে হলো, কেউ ১০০ বিঘার বেশি জমি রাখতে পারবেন না।
আইনে কৃষিজমি সম্পর্কে বলা আছে, ‘৬০ (ষাট) প্রমিত বিঘার অধিক কৃষিভূমির মালিক বা তাহার পরিবার হস্তান্তর, উত্তরাধিকার, দান বা অন্য কোনো উপায়ে নতুন কোনো কৃষিভূমি অর্জন করিতে পারিবেন না।’
যদি কোনো ভূমির মালিক এই বিধান লঙ্ঘন করে ক্রয়সূত্রে কোনো কৃষিভূমি অর্জন করেন, তাহলে ৬০ বিঘার অতিরিক্ত জমি সরকারকে দিয়ে দিতে হবে এবং কোনো ক্ষতিপূরণ পাবেন না। তবে উত্তরাধিকার সূত্রে ৬০ বিঘার বেশি জমি থাকলে মালিকের পছন্দ অনুযায়ী ৬০ বিঘা রেখে বাকি জমি ক্ষতিপূরণ দিয়ে সরকার নিয়ে নেবে।
প্রার্থীদের কেউ কেউ নতুন আইনে নির্ধারিত সীমার জমির মালিক বলে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান। তিনি বলেন, সরকার চাইলে নির্ধারিত সীমার অতিরিক্ত জমি বাজেয়াপ্ত করতে পারে।
প্রথম আলো