বিএনপি রাজপথে ছিল, আছে এবং থাকবে, বললেন দলটির নেতারা

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–বিএনপির আয়োজনে আলোচনা সভা। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে

 

মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে বিএনপি রাজপথে ছিল, আছে এবং থাকবে—এই বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপি নেতারা। তাঁরা অভিযোগ করেছেন, বর্তমান সরকার মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা এসব কথা বলেন।  আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বিএনপি এই সভার আয়োজন করে।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার। দলের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল, নিতাই রায় চৌধুরী চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদীন ফারুক প্রমুখ।

দেড় বছর ধরে গণতন্ত্র ফেরাতে বিএনপি আন্দোলন করছে—এ কথা উল্লেখ করে আবদুল মঈন খান বলেন, ‘দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে হবে। বিএনপি রাজপথে ছিল, আছে এবং থাকবে।’

অত্যাচার নির্যাতন করার কারণে যে পাকিস্তানিরা রেহাই পায়নি, তাদেরই অনুসরণ করছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ, এমন অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানিদের চরিত্রের সঙ্গে আওয়ামী লীগ সরকারের চরিত্রের কোনো তফাত নেই। নির্যাতন নিপীড়ন করে পাকিস্তানের রক্ষা হয়নি। এই আওয়ামী লীগ সরকারেরও রক্ষা হবে না।’

গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়া ও প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনা উল্লেখ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘প্রধান বিচারপতির বাসভবন ভাঙার নাটকের স্ক্রিপ্ট যারা লিখেছে, তারাই বিচারপতি এসকে সিনহাকে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে।’ কারা ওই হামলা চালিয়েছে, এর সত্য উদ্‌ঘাটনের তদন্ত কমিটি গঠন করার আহ্বান জানিয়েছেন গয়েশ্বর রায়।

আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, ‘আমাদের সব অধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রতিবাদে ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল। একই সঙ্গে সেদিন একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধের বীজ বপন করা হয়েছিল। সেই আন্দোলন আমাদের আজও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে অনুপ্রেরণা জোগায়।’

সরকারের বিরুদ্ধে বিএনপির আন্দোলনে প্রসঙ্গ টেনে সেলিমা রহমান  বলেন, ‘আমরা ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়েছিলাম। জনগণ তাতে সাড়া দিয়েছে। ফলে আমরা সফল হয়েছি। আমরা দেশের সব মানুষকে সঙ্গে নিয়েই এই অবৈধ সরকারের পদত্যাগ ঘটিয়ে সত্যিকারের ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনব।’

আইনের শাসন না থাকলে সব ক্ষেত্রেই বিশৃঙ্খলা হয় বলে সমাবেশে মন্তব্য করেন আলোচনা সভার প্রধান অতিথি ও বিএনপির প্রবীণ নেতা জমির উদ্দিন সরকার। তিনি বলেন, আইনের শাসন না থাকলে বিশৃঙ্খলা হতে বাধ্য। কারও কারও অনেক টাকা থাকলেও তিনি ভোগ করতে পারবেন না।

ভাষার আন্দোলন গতানুগতিক আন্দোলন ছিল না বলেও মনের করেন জমির উদ্দিন সরকার। তিনি বলেন, ওই আন্দোলন ছিল আদর্শিক আন্দোলন। উর্দু তদানীন্তন পাকিস্তানের পাঁচটি প্রদেশের ভাষা না হওয়ার পরও উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করতে চেয়েছিল। মানুষের আন্দোলন ওখান থেকেই শুরু হয়েছিল। এই আন্দোলন থেকেই গণতন্ত্রের আন্দোলন শুরু হয় বলে মন্তব্য করেন জমির উদ্দিন।

প্রথম আলো