আগামী দলবদলের দিকে ছয় মাস আগেই নজর দিয়ে রাখছেন সবাই। মেসি-রোনালদো যুগের পর ফুটবলের রাজত্ব নিয়ে যে দুজনের মধ্যে লড়াই হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে, সেই কিলিয়ান এমবাপ্পে ও আরলিং হরলান্ডের দলবদল নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গেছে। একদিকে এমবাপ্পের চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। ওদিকে হরলান্ডের সঙ্গে ডর্টমুন্ডের চুক্তিতে থাকা রিলিজ ক্লজের শর্তও আগামী জুলাই থেকে কার্যকর হবে।
এমবাপ্পে এই মৌসুমেই পিএসজি ছেড়ে রিয়াল মাদ্রিদে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পিএসজির অনিচ্ছায় সেটা আর হয়নি। তবে আগামী মৌসুমে খুব অবিশ্বাস্য কিছু না ঘটলে ফ্রেঞ্চ ফরোয়ার্ডের মাদ্রিদ-যাত্রা প্রায় নিশ্চিত। এমন তারকাকে রিয়াল পেলে তাঁর বদলি হিসেবে হলেও হরলান্ডকে দরকার হবে বার্সেলোনার। কিন্তু ক্লাবটির আর্থিক দুর্দশা হরলান্ডকে পাওয়ার কাজটা কঠিন করে তুলছে। তবে বার্সেলোনার জন্য নাকি অপেক্ষা করতে রাজি হরলান্ড। অন্তত তাঁর সুপার এজেন্ট মিনো রাইওলা সেটাই জানালেন।
২০২০ সালের জানুয়ারিতে হরলান্ডকে পাওয়ার চেষ্টায় ছিল ইউরোপের প্রায় ২০টি ক্লাব। সে দৌড়ে বরুসিয়া ডর্টমুন্ড জিতেছিল। তবে হরলান্ড যে সেখানে থিতু হবেন না, সেটা বোঝা গিয়েছিল তখনই। বড় কোনো দলে যাওয়ার আগে ডর্টমুন্ডে নিজেকে শাণিয়ে নেওয়ার ধাপ এটা। হরলান্ডের নিজেকে শাণিয়ে নেওয়ার কাজ প্রায় শেষ। তাই আগামী মৌসুমেই যে হরলান্ড দল পাল্টাবেন, এটা প্রায় নিশ্চিত। কয়েক দিন আগেই আগেই তাঁর এজেন্ট রাইওলা বলেছেন, ম্যানচেস্টার সিটি, বায়ার্ন মিউনিখ, চেলসি, রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনার মতো দলেই যাবেন হরলান্ড।
এদিকে ডর্টমুন্ডের প্রধান নির্বাহী মিখাইল জর্ক গতকালই জানিয়েছেন, এরই মধ্যে হরলান্ডকে পাওয়ার ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ। বাজারে গুঞ্জন আছে, চুক্তি করার সময় হরলান্ড শর্ত দিয়েছিলেন ২০২২ সালে চাইলে ৭ কোটি ৫০ লাখ ইউরোর বিনিময়ে তাঁকে নিয়ে যেতে পারবে অন্য ক্লাব। সোজা ভাষায়, এটাই হরলান্ডের রিলিজ ক্লজ। ইউরোপের অধিকাংশ পরাশক্তির জন্যই হরলান্ডের মানের স্ট্রাইকারের জন্য এটা অনেক কম দাম।
কিন্তু বার্সেলোনার অবস্থা ভিন্ন। আর্থিক দেনায় জর্জরিত বার্সেলোনা, এবারের জানুয়ারির দলবদলে মাত্র ১ কোটি ইউরো খরচ করার অনুমতি পাচ্ছে। আগামী জুলাইয়েও ক্লাবের প্রতিশ্রুতিশীল তারকাদের বিক্রি করে দিতে হতে পারে। পরিস্থিতির আচমকা বদল না এলে, তাই হরলান্ডকে পাওয়া খুব কঠিন বার্সেলোনার পক্ষে। কারণ, শুধু দলবদলের অঙ্কই নয়, রাইওলার মতো এজেন্টের জন্য বাড়তি বোনাস ও হরলান্ডের উচ্চ বেতনের ব্যাপারও আছে। আর্থিক সংগতি নীতির কারণে মেসিকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হওয়া বার্সেলোনা সমর্থকেরা তাই হরলান্ডকে পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী হতে পারছিলেন না।
তবে বার্সেলোনা সমর্থকদের আশা দেখাচ্ছেন রাইওলা নিজে। নিজের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য হরলান্ড আরও এক মৌসুম নাকি অপেক্ষা করতে রাজি আছেন, এনওসিকে রাইওলা বলেছেন, ‘হরলান্ড কি বার্সেলোনার জন্য অপেক্ষা করবে? সে যে কারও জন্য অপেক্ষা করতে পারে। কোনো ক্লাবের সঙ্গেই আমরা আগ থেকে চুক্তি করিনি। ওর জন্য সবচেয়ে ভালো কী হবে, সেটা দেখব আমরা। ডর্টমুন্ডে আরও এক বছর থাকার সম্ভাবনা আমি উড়িয়ে দিচ্ছি না। কাগজে-কলমে এটা সম্ভব।’
আর্থিকভাবে এখন কিছুটা পিছিয়ে পড়লেও গত সপ্তাহেই হরলান্ডকে পাওয়ার দৌড়ে বার্সেলোনাকে চেলসি-ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের মতো দলগুলোর চেয়ে এগিয়ে রেখেছিলেন রাইওলা। নতুন করে আবারও বললেন কেন বার্সেলোনার হাল ছেড়ে দেওয়া উচিত হবে না, ‘বার্সেলোনা সব সময় বিশ্বের বড় ক্লাবগুলোর একটি। তাদের বর্তমান পরিস্থিতিতেও। এক বা দুই বছরের মধ্যেই তারা ফিরবে। বড় আর্থিক চুক্তি করার ক্ষমতা আছে তাদের। খুব বেশি হলে ওদের এক বা দুই বছর লাগবে ফিরতে।’