পণ্য পরিবহনে লোহিত সাগর ব্যবহার করতে না পারলে অন্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশের রপ্তানিও কিছুটা সমস্যায় পড়বে। এমনটিই মনে করছেন বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান।
গতকাল বুধবার সমকালকে তিনি বলেন, বিকল্প রুটে পণ্য পরিবহনে সময় ও ব্যয় বেড়ে যাবে। বাড়তি ব্যয়ের বোঝা ক্রেতারা শেষ পর্যন্ত রপ্তানিকারক উদ্যোক্তাদের ওপরই চাপিয়ে দেন। এ ছাড়া ক্রেতাদের পক্ষ থেকে রপ্তানি আদেশ পাওয়ার পর তাদের হাতে পণ্য পৌঁছানো পর্যন্ত সময়, অর্থাৎ লিড টাইম বেড়ে যাবে দুই সপ্তাহর মতো। সার্বিক রপ্তানিতে যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এদিকে বাংলাদেশের পোশাক শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে আমেরিকান অ্যাপারেলস অ্যান্ড ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের (এএএফএ) কাছে পাঠানো আট মার্কিন কংগ্রেসম্যানের চিঠির বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সমকালকে তিনি বলেন, সরকার, মালিক ও শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিত মজুরি বোর্ডে নির্ধারণ করা মজুরি বাংলাদেশের বাস্তবতার সঙ্গে যথেষ্ট সংগতিপূর্ণ। এমন মজুরি নির্ধারণ করা উচিত নয় যা দেওয়ার সামর্থ্য শিল্পের নেই। তাতে মজুরির চাপে কারখানা বন্ধ করে দিতে হয়।
তিনি বলেন, ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ করেছে বোর্ড। বেশি দিতে তো কোনো বাধা নেই। কোনো কোনো কারখানা কর্তৃপক্ষ বেশি মজুরিও দিচ্ছে। এমনকি শ্রম অসন্তোষে বন্ধ থাকা কারখানা বন্ধ থাকার দিনগুলোতেও শ্রমিকদের মজুরি পরিশোধে বিজিএমইএর সদস্য কারখানাগুলোকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেটি পেয়েছেন শ্রমিকরা। অথচ শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারা অনুযায়ী, শ্রমিকরা এ মজুরি পাওয়ার কথা ছিল না। তবে মার্কিন কংগ্রেসম্যানরা বর্ধিত মজুরির পুরোটাই ক্রেতাদের বহন করতে বলেছেন, এটা তো অবশ্যই সাধুবাদযোগ্য।
প্রসঙ্গত, পোশাক এবং পাদুকা শিল্পের যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ক্রেতা, ব্র্যান্ড ও উৎপাদনকারীদের প্রতিনিধি সংগঠন এএএফএর কাছে পাঠানো এক চিঠিতে মার্কিন কংগ্রেসের আট সদস্য বলেন, শ্রমিকদের মাসিক ন্যূনতম ২৩ হাজার টাকা মজুরির দাবি না মানা শুধু দুঃখজনক নয়, একই সঙ্গে লজ্জাজনকও। ২৩ হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরির দাবি মেনে নিতে সরকার এবং উদ্যোক্তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে এএএফএর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা। পাশাপাশি মজুরির বর্ধিত এই ব্যয়ের পুরোটাই পোশাকের মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে সংস্থান করতে ক্রেতাদের চাপ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন কংগ্রেসম্যানরা। চিঠিটি গত শুক্রবার পাঠানো হয়।
সমকাল