বরিশাল
বরগুনায় গতকাল সোমবার শোক মিছিলে ছাত্রলীগের বিবদমান দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা তদন্তে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই তথ্য জানা গেছে। বরগুনা জেলা ছাত্রলীগের সদ্যগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক তৌশিকুর রহমান চিঠি পাওয়ার কথা আজ মঙ্গলবার বিকেলে নিশ্চিত করেন।
আজ বিকেলে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তদন্ত কমিটি করার তথ্য পোস্ট করেছেন। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের প্যাডে ওই চিঠিতে তাঁর এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সই রয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘বরগুনা শিল্পকলা একাডেমিতে গতকাল অনাকাঙ্ক্ষিত সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা তদন্তের স্বার্থে দুই সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হলো।’ কমিটির সদস্যরা হলেন—কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক বেলাল হোসেন ও উপতথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. আবদুর রশিদ। কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্তে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করেন তিনি। কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে সুপারিশসহ তদন্ত প্রতিবেদন কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বরগুনায় জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে জেলা ছাত্রলীগ শোক মিছিল করে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে শহরে যাওয়ার পথে জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনের দ্বিতীয় তলা থেকে বিবদমান আরেকটি পক্ষ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। জেলা শিল্পকলা একাডেমির সামনে এ ঘটনার সময় ইটপাটকেলে পুলিশের একটি গাড়ির সামনের কাচ ভেঙে যায়। এ সময় পুলিশ ছাত্রলীগের ওই পক্ষটিকে নিবৃত্ত করতে বেধড়ক লাঠিপেটা করে। বরগুনা-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর সামনেই পুলিশের লাঠিপেটার ঘটনা ঘটে। এ সময় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহররম আলীর মধ্যে এ ঘটনা নিয়ে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। এ ঘটনা তদন্তে গতকাল রাতেই বরিশাল রেঞ্জ পুলিশের পক্ষ থেকে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
গতকাল রাতে সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু শহরের অন্য একটি শোক সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ‘পুলিশের উদ্দেশ্যই ছিল মারপিট করা’ এমন মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহররম আলীকে প্রত্যাহার ও তাঁর বিচারের দাবি জানান।
সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর এমন বক্তব্যের পর রাতেই স্থানীয় প্রেসক্লাবে জেলা ছাত্রলীগ গতকালের হামলার ঘটনা নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে। সেখানে জেলা ছাত্রলীগের সদ্যঘোষিত কমিটির সভাপতি রেজাউল কবির ও সাধারণ সম্পাদক তৌশিকুর রহমান বক্তব্য দেন। তাঁরা বলেন, পুলিশ যাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা করেছে, সেটা না করলেও আরও বড় ধরনের ঘটনা ঘটত। এ জন্য জেলা পুলিশকে ধন্যবাদও জানান তাঁরা।