- বগুড়া অফিস
- ২৫ ডিসেম্বর ২০২২
১৪ দলের প্রার্থী চায় জাসদ, স্বতন্ত্র দাঁড়াবেন হিরো আলম। – ছবি : নয়া দিগন্ত
বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য মোশারফ হেসেনের পদত্যাগের পর শূন্য বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে প্রার্থী হতে আওয়ামী লীগের জোট ও মহাজোটের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দিতা শুরু হয়েছে।
কারণ বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থীহীন নির্বাচনে ১৪ দল ও মহাজোটের প্রার্থী হলেই জয় অনেকটা নিশ্চিত। তাই আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাসদের সম্ভাব্য প্রার্থীরা মনোনয়ন নিশ্চিত করতে নিজ নিজ দলের কমান্ডের কাছে জোর লবিং করছেন। নির্বাচন কমিশনের তফসিল মোতাবেক আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাসদ বগুড়া জেলা শাখার সভাপতি এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। অন্যদিকে ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোট মনোনীত প্রার্থী হিসেবে জেলা জাসদ সভাপতি রেজাউল করিম তানসেন (নৌকা), বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী মোশারফ হোসেনের (ধানের শীষ) নিকট পরাজিত হন।
নির্বাচনে ঐক্যফ্রন্টের মোশারফ হোসেন এক লাখ ২৮ হাজার ৫৮৫ ভোট পেয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তার নিকটতম মহাজোটের রেজাউল করিম তানসেন পান ৮৬ হাজার ৪৮ ভোট। ভোটার তিন লাখ ১২ হাজার ৮১ জন। নন্দীগ্রাম উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভা ও কাহালু উপজেলার ৯টি ইউনিয়ন এবং ১টি পৌরসভা নিয়ে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসন গঠিত। আসনটিতে ২০১৮ সালে হিসেবে ভোটার সংখ্যা তিন লাখ আট হাজার ৬৪৪ জন। এর মধ্যে নন্দীগ্রাম উপজেলায় এক লাখ ৩৯ হাজার ৪১০ জন ও কাহালু উপজেলায় এক লাখ ৬৯ হাজার ২৩৪ জন।
আসন্ন উপনির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীরা কেন্দ্রীয় জাসদের সহ-সভাপতি, জেলা সভাপতি, সাবেক এমপি এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অধ্যক্ষ আহসানুল হক, তৌহিদুল করিম কল্লোল, নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা, নন্দীগ্রাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল আশরাফ জিন্নাহ, কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন কবিরাজ, কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কামাল উদ্দিন কবিরাজ, জাতীয় পার্টির শাহীন মোস্তফা ফারুক, স্বতন্ত্র হিসেবে আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম।
দুটি উপজেলা নিয়ে গঠিত এই আসনটিতে চায়ের আড্ডা থেকে শুরু করে বিভিন্ন জায়গায় চলছে নির্বাচনের আলোচনা। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিএনপি (ধানের শীষ) নেই। তাই কে হচ্ছেন নৌকার কাণ্ডারি সেটা নিয়েই আলোচনা চলছে বেশি। ভোটারদের অনেকেই মনে করছেন নির্বাচনে নৌকা মার্কা যে পাবেন তিনিই হবেন এমপি। নির্বাচনের আলোচনায় সাবেক এমপি রেজাউল করিম তানসেনকেই এগিয়ে রাখছেন অনেকে। এবারেও তিনি জোটের প্রার্থী হবেন বলে মনে করছেন তারা।
নন্দীগ্রামের রিকশাচালক জাফর বলেন, এখানে আবার ভোট হবে শুনছি। এই নির্বাচনে তানসেন এমপির নামটাই বেশি শোনা যাচ্ছে। এর আগে তিনি এমপি ছিলেন। তিনি নৌকা নিয়ে ভোট করেছিলেন।
কাহালুর মুদি দোকানদার মামুন মিয়া বলেন, নির্বাচনে নৌকা মার্কার প্রার্থীই বিজয়ী হবে। গত নির্বাচনে তানসেন নৌকা নিয়ে ভোট করেছেন। তাই এবারেও তিনি যদি নৌকা পান তাহলে ঠেকানোর কেউ নেই।
জাসদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি, বগুড়া জেলা সভাপতি, ১৪ দলীয় জোটের সাবেক এমপি এ কে এম রেজাউল করিম তানসেন বলেছেন, `১৯৯১ সাল থেকে সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি। এর মধ্যে ২০০৬ সালে ১৪ দলীয় জোটের শরিক হিসেবে নৌকা মার্কা পেয়েছিলাম। ওয়ান ইলেভেনের কারণে সে নির্বাচন হয়নি। পরে ২০০৮ সালে নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করেছি। ২০১৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছি। আবার ২০১৮ সালেও নৌকা নিয়ে নির্বাচন করেছি। এর আগে নির্বাচিত হয়ে এলাকার উন্নয়নে অনেক কাজ করেছি। গত নির্বাচনে হারলেও এলাকার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগদানের মধ্যদিয়ে প্রচারণার মধ্যেই রয়েছি। এবারের উপনির্বাচনেও দল এবং জোটের কাছে মনোনয়ন চাইবো।`
কাহালু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হেলাল উদ্দিন কবিরাজ জানান, `উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নের জন্য আবেদন করব।`
নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেন রানা বলেন, `আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিলে প্রার্থী হবো।`