২৪ ডিসেম্বর ২০২২
আমাদের সংবাদদাতা জানান, জেলা বিএনপি’র কার্যালয়ের সামনে থেকে গণমিছিল শুরু করেন কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতারা। তবে সামনে আগাতে দেয়নি জেলা পুলিশ। জেলা বিএনপি’র কার্যালয়ের কাছেই ফরিদপুর কোতয়ালী থানার এক দল পুলিশ তাদের বাধা দেন। এ সময় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে পুলিশের কথা কাটাকাটি হয়। পুলিশে বাধা অতিক্রম করে আর সামনে এগিয়ে যেতে সক্ষম হয়নি দলটির নেতা-কর্মীরা। গণমিছিলে পুলিশের বাধা পেয়ে দলটির নেতা-কর্মীরা কার্যালয়ের সামনের সড়কে সমাবেশ করেন। এরপর দুপুর ১২টার দিকে বিএনপি তাদের কর্মসূচি শেষ করে।
সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান নিতায় রায় চৌধুরী বলেন, বাধা দিয়ে গণ মানুষের অধিকার দমিয়ে রাখা যায় না। জোর করে কেউ ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি। টিকে থাকতে পারেনি চেঙ্গিস খান, হালাকু খান, আইউব খান। টিকতে পারেনি ব্রিটিশ। এই সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক শামা ওবায়েদ বলেন, এ গণমিছিল পণ্ড করার জন্য গত রাতে ফরিদপুরে বিএনপির ১০ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে, বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি করেছে পুলিশ। আওয়ামী লীগ এতো ভয় পেয়ে গেছে কেন? আমাদের আন্দোলন ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনে ৭ দফা আদায়ের জন্য।
তিনি আরও বলেন, জনগণ মাঠে নেমে এলে কোনো এই স্বৈরাচারী সরকার টিকতে পারবে না।
কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বলেন, দেশ আজ পুলিশি রাজত্বে পরিণত হয়েছে। পুলিশ চলে জনগণের টাকায়। সেই পুলিশকে এই গণবিরোধী সরকার দেশের জনগণের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে, পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে আমাদের অধিকার হরণ করছে। গতকাল বিনা উস্কানিতে গ্রেপ্তার করেছে আমাদের নেতা-কর্মীদের।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী। পরিচালনা করেন জেলা বিএনপি সদস্য সচিব এ কে কিবরিয়া ওরফে স্বপন।
জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, সকাল ১১টার দিকে জেলা কার্যালয়ের সামনে শহরের কাঠপট্টি এলাকা থেকে বিএনপির গণমিছিল শুরু হওয়ার কথা ছিল। মিছিলটি কাঠপট্টি এলাকা থেকে শুরু করে থানা রোড, জনতা ব্যাংকের মোড় হয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাব পর্যন্ত গিয়ে শেষ হওয়ার কথা ছিল।
সকাল থেকে কাঠপট্টি এলাকায় বিএনপি কার্যালয়ের সামনে সড়কের ২ পাশের মোড়ে, জনতা ব্যাংকের মোড়, প্রেসক্লাব, ব্রাহ্ম সমাজ সড়ক এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ দেখা যায়।
এদিকে, বিএনপির কেন্দ্রীয় ঘোষণা অনুযায়ী ১০ দফা দাবিতে নীলফামারী জেলা বিএনপির গণমিছিল করতে দেয়নি পুলিশ। শনিবার (২৪শে ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় পুলিশ দলের জেলা সভাপতি আ খ ম আলমগীর সরকারকে প্রায় দুই ঘণ্টা অফিস চত্বরে অবরুদ্ধ করে রাখে বলে জানা গেছে। সেই সঙ্গে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আনিছুর রহমান কোকোসহ বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে বিএনপি অফিস চত্বরে পুলিশ অবরুদ্ধ করে রাখে বলে অভিযোগ জেলা নেতা-কর্মীদের।
নীলফামারী জেলা বিএনপির সভাপতি আ খ ম আলমগীর সরকার বলেন, আমরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। তারাও আমাদের কার্যক্রমে অনুমতি দিয়েছে। সকাল ৯টা থেকে বিএনপি ও এর সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিএনপির পৌর মার্কেটের অস্থায়ী কার্যালয়ে জড়ো হতে থাকে।
আলমগীর সরকার আরও বলেন, গণতন্ত্রের দেশে পুলিশ অগণতান্ত্রিক আচরণ করে। নীলফামারী থানার ওসি আব্দুর রউফ লাঠি হাতে নিয়ে নেতা-কর্মীদের ধাওয়া করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। শুধু তাই নয়, শহরের বিভিন্ন মোড়ে ও পাড়া মহল্লায় পুলিশ অবস্থান নিয়ে দুপুর ১২টা পর্যন্ত শহরে কোনো নেতা–কর্মীকে প্রবেশ করতে দেয়নি।’
জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ আযম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক আহম্মেদ অভিযোগ করে বলেন, দলের কেন্দ্রীয় নেতারা আজ জেলে। দেশনেত্রীসহ সকল নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আমরা যখন নেতা-কর্মী নিয়ে বিএনপি অফিসে যাই, তখন বাটার মোড়ে পুলিশ আমাদের ওপর হামলা চালিয়ে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আমরা আবার একত্রিত হয়ে বিএনপি অফিসের দিকে যেতে চাইলে পুলিশ আবারও ধাওয়া করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নীলফামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ বলেন, বিএনপির কোনো নেতা-কর্মীর সঙ্গে কোনো বিষয়ে কথা হয়নি। প্রতিদিনের মতো আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আমরা শহরে দায়িত্ব পালন করছি।