- নিজস্ব প্রতিবেদক
- ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ২১:৪২
বিতর্কিত সকল পাঠ্যপুস্তক বাতিল, ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যেমূল্য কমানো এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণমিছিল করেছে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন।
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে সমাবেশ শেষে সামনের সড়কে মিছিল বের হয়।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে সংগঠনের আমির মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী বলেন, পাঠ্যপুস্তকে এদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের বোধ-বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও জাতীয় স্বার্থকে উপেক্ষা করে সাম্প্রদায়িক উস্কানি, তথ্য ও ইতিহাস বিকৃতি, বিতর্কিত ও অবৈজ্ঞানিক বিবর্তনবাদের অনুপ্রবেশ, ইসলামের পর্দার বিধানকে নিরুৎসাহিত করা, পৌত্তলিক ও ব্রাহ্মণ্যবাদী সংস্কৃতির আধিপত্য, ইসলামকে ভিনদেশী সাব্যস্ত করা এবং অন্যের লেখা, গবেষণালব্ধ তথ্য ইত্যাদি নিজের নামে চালিয়ে দেয়ার মত নিন্দনীয় কাজের আশ্রয় নেয়া হয়েছে; যা জাতি হিসেবে আমাদের জন্য উদ্বেগ ও হতাশাজনক। ৯২ ভাগ মুসলমানের দেশের মানুষের চিন্তা-চেতনার সাথে সংগতি রেখে শিক্ষা সিলেবাসকে প্রণয়ন করতে হবে। এজন্য বিজ্ঞ আলেম ও ইসলামী চিন্তাবিদদের সম্পৃক্ত করে জাতীয় শিক্ষা কমিশন পুনর্গঠন করতে হবে। শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে। দেশের চলমান রাজনৈতিক সঙ্কট নিরসনে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করার দাবি জানান তিনি।
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন দলের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, যুগ্ম মহাসিচব জালাল উদ্দীন বকুল, মাওলানা সানাউল্লাহ হাফেজ্জী, সহকারী মহাসচিব আতিকুর রহমান নান্নু মুন্সি, সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন, প্রচার সম্পাদক মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী, মুফতি ফখরুল ইসলাম, মুফতি ইলিয়াস মাদারীপুরী, মাওলানা সাজেদুর রহমান ফয়েজী, মাওলানা আফম আকরাম হোসাইন, মাওলানা মাহবুবুর রহমান, মাওলানা শেখ সাদী, মুফতি জসিম উদ্দিন, মুফতি আবুল হাসান কাসেমী প্রমুখ।
সমাবেশে খেলাফত আন্দোলনের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে সাত দফা দাবি পেশ করা হয়। দাবিগুলো হলো-১. শিক্ষা সিলেবাসে দেশের ৯২ ভাগ মানুষের সংস্কৃতি, বিশ্বাস ও মূল্যবোধের প্রতিফলন ঘটাতে হবে। ২. ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো, আলেম-উলামা, মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক ও জনসাধারণের প্রতিবাদ আন্দোলনের চাপের মুখে শুধুমাত্র দুটি বই বাতিল করলেই হবে না, সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পাঠ্যপুস্তক থেকেও সকল আপত্তিকর লেখা বাদ দিতে হবে। এবং যারা পাঠ্য পুস্তকেকে বিতর্কিত করেছে তাদেরকে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। ৩. আলেম ওলামাদের হয়রানি বন্ধ এবং তাদের বিরুদ্ধে করা সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। ৪. নির্বাচনকালীন নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে এবং সকল দলকে সমান সুযোগ সুবিধা প্রদানসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। ৫. ভোটাধিকারসহ জনগণের সকল সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। ৬. বিদ্যুৎ গ্যাসসহ নিত্যপণ্যের বর্ধিতমূল্য কমিয়ে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখতে হবে ও ৭. অর্থনৈতিক মন্দা, সুদ,ঘুষ, দুর্নীতিসহ দেশের চলমান সঙ্কট নিরসনে দেশে খেলাফত পদ্ধতির সরকার কায়েম করতে হবে।